পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سواسوا۹ প্রবাসী $ess ডাক্তারের কলেরা হয় ? কিন্তু ইউরোপে প্রায় সবাই রেস্তরাতেই প্রধান আহারগুলি সমাধা করে—সখের খাওয়া নয় কলিকাতার মত। এগুলি স্বাস্থ্য-কৰ্ত্তাদের বিশেষ কড়া নজরে থাকে। তাহ ছাড়া রেস্তর'-ওয়ালাদের দেশপ্রীতিও আছে। তাহারা জানে যে দু-পয়সা বেশী লাভ করিতে গেলে দেশের লোকেরই স্বাস্থ্য ধ্বংস হইবে এবং তাহারা জানে কোন প্রকার খাদ্য কিরূপ স্বাস্থ্যকর । বিস্ময়ের বিষয়, ছোট ছোট পেনসেনের গৃহকত্রীরাও কোন খাদ্যে কত ক্যালরি (calory ) আছে বেশ বলিতে পারে । সখ করিয়া সস্তায় রেস্তরায় গাইতে গিয়া আমরা নিজেদের সর্বনাশ সাধন করি । ইহা ছাড়া আমাদের পূৰ্ব্বপুরুষগণ আর একটি কারণে স্বাস্থ্যবান ছিলেন, তাহার বিশুদ্ধ দ্রব্য পাইতেন। তখন ভেজালের অত প্রাচুর্য্য ছিল না । কর্পোরেশন ও জেলাবোর্ড কঠোর আইন দ্বারা উহ দমনের চেষ্টা করিতেছেন বটে, কিন্তু সফল হওয়া খুবই কঠিন । এ বিষয়েও প্রচারকার্য্য আবশ্বক— লোকের যাহাতে আবার পূর্বকালের স্ববুদ্ধি ফিরিয়া আসে । এখানে যে-কোন ব্যবসায়ী যে-কোন দ্রব্য, বিশেষত: খাদ্যদ্রব্য, দিবার সময় উত্তমরূপে পরীক্ষা করিয়া দেয়। আমাদের দেশে ক্রেতাদেরই উত্তমরূপে দেখিয়া লইতে হয়, নতুবা ঠকিতে হইবে । এদেশে যাহা সম্ভব আমাদের দেশে তাহা অসম্ভব হুইবে কেন ? আর শিশুদের স্বাস্থ্যের এখন প্রধান অস্তরায় মাতৃদুগ্ধাভাব। মায়েদের নিজেদের শরীর ভাল ন থাকিলে শিশুর দেহের পুষ্টি হইবে কি করিয়া। মায়েদের স্বাস্থ্য পরাপ হওয়ারও কারণ খাদ্যাভাব। মায়েদের গর্ভাবস্থায় আমাদের অনেকেরই স্মরণ থাকে না যে তখন তাঁহাদের এক আহারেই দুইটি দেহের পুষ্টি সাধন করিতে হয় এবং প্রসবের পর ভুলিয়া খাই যে প্রসবের সময় অনূ্যন এক সের রক্ত শরীর হইতে বহির হইয়া গিয়াছে। উপযুক্ত আহাৰ্য্যদ্বার তাহা পূরণ না-করিয়া অনেকে আমরা ম্যানোল, ভাইব্রোনা প্রভৃতি মাদক প্রব্যের আশ্রয় লই । কিন্তু সকলেই জানেন, উহাদের ফল কিরূপ ক্ষণস্থায়ী শিশুর পক্ষে মাতৃদুগ্ধ আজকাল প্রায় আকাশ-ফুক্ষম হইয়াছে। মাহ হউক, মাতৃত্বন্ধের অভাব হইলেই আমাদের গৃহে তৎক্ষণাৎ আসে একটা ৰিভি বোতল, স্পিরিট ল্যাম্প ও একটি পেটেন্ট ফুড– এলেনবেরী বা গ্লাক্সো বা অন্য কিছু। ইহা অপেক্ষা অনিষ্টকর ব্যাপার আর কি হইতে পারে। আমরা ইহা তুলিয়া যাই যে ঐ সব ফুডের আবির্ভাব দশ-পনর বছর পূৰ্ব্বে হয় নাই । ঐ সময় হইতেই শিশুর স্বাস্থ্য ভাল থাকা দূরে থাকুক, ক্রমশই থারাপ হইতেছে। শিশুদিগের লিভার খারাপ আগে খুব কমই শোনা যাইত, এখন ইনফ্যানটাইল লিভার বহু দেখা যায় । খবরের কাগজের বিজ্ঞাপন দেখিয়া ধদি আমাদের শিশুর খাদ্য নিৰ্ব্বাচন করিতে হয়, তবে তাহ অপেক্ষা অনুতাপের বিষয় আর কি আছে। যত বিশুদ্ধ বৈজ্ঞানিক উপায়ই থাকুক না কেন, শুষ্ক দুগ্ধ ও সাধারণ গে+ দুগ্ধের প্রভেদ অনেক । আমরা সাধারণ বিশুদ্ধ গোদুগ্ধ ত্যাগ করিয়া ইংলণ্ড হইতে প্রেরিত শুষ্ক গোদুন্ধের সাহায্য লহ অতি বিচিত্র ব্যাপার । কেবল শুষ্ক দুগ্ধই নহে, উহাদের সহিত হজমী ঔষধও থাকে। ঐ সব হজমী ঔষধ শিশুর স্বাভাবিক হজমী শক্তি লোপ করিয়া দেয়। ইহ আমার আবিষ্কার নহে, বিশেষজ্ঞ শিশু-চিকিৎসকগণের মত। স্বতরাং আমাদের সর্বদাই স্মরণ রাখা প্রয়োজন যে, মাতৃদুগ্ধের পর গোছগ্ধই শিশুর সর্বাপেক্ষ উংকৃষ্ট থাছ । অবশু গোছগ্ধ শিশুর ভিন্ন-ভিন্ন বয়সে ভিন্ন-ভিন্ন অনুপাতে জল ও শর্করার সহিত মিশ্রিত করিয়া খাওয়াইতে হয়। শিশুর খাদ্য-বিভ্ৰাটই অধিক পরিতাপের বিষয় । আমাদের পিতৃপিতামহগণ পেটেণ্ট ফুড না খাইয়াই বাচিয়া ছিলেন এবং আমাদের সস্তানগণ পেটেণ্ট ফুড খাইয়াও মরিতেছে। এ কোন সভ্যতার অল্পকরণ করিতে গিয়া আমরা ধ্বংসের পথে অগ্রসর হইতেছি ? মহেঞ্জে-দারে, তক্ষশীলা, সারনাথ প্রভৃতি আমাদের পূর্ব সভ্যতার নিদর্শন, আর এখনকার বাঙালীর স্বাস্থ্য আমাদের পূর্ব সভ্যতার পাশ্চাত্য ছায়ার অনুকরণ করার পরিণাম । ভারতের পক্ষে তাহার নিজের সভ্যতাই বজায় রাখা ঠিক নয় কি ? অামাদের পূর্বপুরুষের যাহা আহার করিতেন তাহা যে সৰ্ব্ববিষয়েই শ্রেষ্ঠ ছিল তাহার প্রমাণ র্তাহাদের স্বাস্থ্য ও পরমায়ু। আমরা যদি আবার পূর্বকালের বিশুদ্ধ আহার পাইতাম, তবে বোধ হয় সহুল ভিটামিন, প্রোলি, ফ্যাট, কাৰ্ব্বোহাইড্রেট, ক্যালোরি তাহার কোনও ক্রটি ধরিতে পারিত না । দ্বিতীয় আলোচ্য বিষয় স্বৰ্য্যালোক। স্বৰ্য্যালোকের অভাব