পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আণঞ্জিন জন্মস্বত্ব aSళ్ని কিন্তু হাসিলে পাছে অমরেন্দ্র তাহাকে অভদ্র মনে করে, এই ভয়ে সে গম্ভীর হইয়াই রহিল। ছায়ার মাসীমাকে প্রণাম । করিয়া এবং অন্য সকলের কাছে বিদায় লইয়। সে নামিয়৷ চলিল। তাহাকে গাড়ীতে তুলিয়া দিতে চলিল অমরেন্দ্র। স্বজিত অত্যন্ত বিরক্ত মুখ করিয়া গাড়ীতে বসিয়া আছে । মমত ও নিত্য গাড়ীতুে উঠিয়া বসিল। মমতা জিজ্ঞাসা করিল, “এত দেরি হল কেন রে?” 創 স্বজিত প্রথমে কোনই উত্তর দিল না। মমতা আবার ' প্রশ্ন করাতে গোজমুখী করিয়া বলিল, “য ন। ছিরির গাড়ী ! এর চেয়ে গরুর গাড়ীও ভাল।” * ড্রাইভার বুঝাইয়া বলিল, গাড়ীর ইঞ্জিনের কি একটু গোলমাল হইয়াছে। মাঝে একবার একেবারেই অচল হইয়াছিল, সে আপনার যথাবিদ্যায় উক্ত মেরামত করিয়৷ এতদূর লইয়া আসিয়াছে, এখন মানে মানে বাড়ি পৌছিলে হয়। সে গাড়ীতে ষ্টার্ট দিল, কিন্তু গাড়ী আবার চলিতে নারাজ। ড্রাইভার নামিয়া আবার ইঞ্জিন পরীক্ষা করিল, এটা-সেটা একটু ঠিক করিল, কিন্তু যন্ত্রদানব তখনও বিমুখ, চলিবার ইচ্ছা তাহার নাই। খালি ঘড় ঘড় শব্দ করে, কিন্তু যেখানকার জিনিষ সেখানেই থাকিয়া যায়। - মমতা উদ্বিগ্ন, নিত্য ভীত এবং স্বজিত চটিয়া আগুন । নীচ গলায় ইহারই মধ্যে সে গালাগালি আরম্ভ করিয়াছে। মমতার তাহার হইয়া লজ্জ করিতে লাগিল । কি অপদার্থ ছেলে, নিজের কিছু করিবার ক্ষমতা নাই, জানে খালি অন্যের উপর তম্বি করিতে। অমরেন্দ্র না-জানি এই অপূৰ্ব্ব চিজ টিকে কি মনে করিতেছে। ড্রাইভার তৃতীয় বার চেষ্ট করার পর বলিল গাড়ীটাকে খানিক দূর ঠেলিয়া লইয়া গেলে চলিতে আরম্ভ করিতে পারে । স্বজিত যেখানে ছিল, সেখান হইতে এক ইঞ্চি না নড়িয়া আদেশ করিল কুলী ডাকিয়া আনিতে। সে সুরেশ্বর রায়ের ছেলে, সে কি গাড়ী ঠেলিবে নাকি ? অমরেন্দ্র অগ্রসর হইয়া আসিয়া বলিল, “কুলী আবার কি হবে ? আমিই খানিকটা ঠেলে দিচ্ছি, বলিয়া কাহারও অল্পমতির অপেক্ষা না করিয়া সে গাড়ী ঠেলিতে আরম্ভ কুরিল । মমতা আশ্চৰ্য্য হইয়া ভৰি ইহার মােৰ সব গুই আছে وعصبسس-ج ه قد গায়েও জোর কেমন ! খোকাটার গালে তাহার চড় মারিতে ইচ্ছা করিতে লাগিল । কেমন নবাবের মত বসিয়া অাছে দেখ না, যেন জুনিয়াস্থদ্ধ তাহার চাকর । রাস্তার এক বিড়িওয়ালারও কি কারণে উৎসাহ হইল, সেও নামিয়া আসিয়৷ অমরেন্দ্রের সঙ্গে গাড়ী ঠেলিতে আরম্ভ করিল। এতক্ষণে গাড়ীটার মত বদলাইল । সে স্থির করিল ইহার পর নিজেই চলিবে । অমরেন্দ্র তখন নমস্কার করিয়া চলিয়া গেল। নিজের বনিয়াদীত্ব দেখাইবার জন্ত স্বজিত বিড়িওয়ালাকে একটা আধুলি বকশিশ করিয়া দিল। . বাড়ি পৌছিতে তাহাদের খানিকট রাতই হইয়া গেল ! মমতা খুব ভয়ে ভয়ে উপরে উঠতে লাগিল। যদিও দেরি হওয়ার দোষটা তাহার বিন্দুমাত্রও নয়, তবু সেকথা বাবাকেও বোঝান যাইবে না । তিনি একে অসুস্থ, তাহার উপর রাগারগি বকবকি করিয়া যদি রাত্রেও না ঘুমান, তাহ হইলে তাহারও অমুখ বাড়িয়া যাইবে, এবং মায়েরও যন্ত্রণার শেষ থাকিবে না । সিড়ির মুখের ঘর অন্ধকার। মমতা আশ্বস্ত হইয়া ভাবিল, বঁচা গেল, বাবা তাহা হইলে ঘুমাইয়া পড়িয়াছেন। যামিনী ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিয়া নীচু গলায় জিজ্ঞাসা করিলেন, “এত রাত হ’ল কেন রে ?” মমতা বলিল, “গাড়ী খারাপ হয়ে গিয়েছিল ম। আমর। অনেক হাঙ্গাম ক'রে এসেছি ।” Σ * লুসি শয়নকক্ষে তখনও জাগিয়া শুইয়া আছে। পার্টি কেমন হইল, কত মানুষ আসিল, কে কি পরিয়াছিল, কে কি বলিল, সব না-গুনিয়া সে কি ঘুমাইতে পারে ? মমতা ঘরে ঢুকিতেই জিজ্ঞাসা করিল, “তুই না বলেছিলি ভাই যে আটটার সময় ফিরে আসবি ?” মমতা কাপড় বদলাইতে বদলাইতে বলিল, “আমি কি করব ভাই, গাড়ী বিগড়ে যত হাজাম হ’ল। বাবা কিছু রাগারগি করেন নি ?” লুসি বলিল, “না। তোর সেই টেকে বুড়োর বাড়ি থেকে কি একটা চিঠি এসেছে, তাতে পিসেমশাই এত খুশী হয়েছেন যে সন্ধ্যার পর রাগারগি করতেও আর তার মনে থাকে নি। ও কি শুচ্ছিস যে এরই মধ্যে ? খাবি না ?”