আশ্বিন ऐछौबन्पांझन्रं t^eళ్నీ কোনদিন পূৰ্ব্বাকাশ বিদীর্ণ ডালিমের মত রক্তিম বর্ণ, কোন দিন বা হাল্কা ধূসর মেঘে ঢাকা। উষার অস্পষ্ট আলো বড় নিৰ্ম্মল, বড় স্নিগ্ধ, চারি দিকে অপূৰ্ব্ব স্তব্ধতা, মাঝে মাঝে উড্ডীয়মান পক্ষিগণের কাকলি ও পক্ষসঞ্চালন-ধ্বনি । অরুণ গুন গুন করিয়া গান গায়, সন্ন্যাসীমামার নিকট হইতে শেখ কোন ভজন, বাউলের গান, রবীন্দ্রনাথের কোন প্ৰভাতী সঙ্গীত। সন্ন্যাসীমামার কথা তাহার মনে পড়ে । ধন বর্ষার মধ্যেই তিনি মৃদুর কাশ্মীরে পাড়ি দিলেন। এক স্থানে বহুদিন তিনি থাকিতে পারেন না । তাহার মনে কোন যাযাবর বিহঙ্গ অশাস্ত ডান নাড়িয় ছট্ফট্ করিয়৷ ওঠে। অরুণ ভাবে, হয়ত এই প্রভাতে সন্ন্যাসীমাম কাশ্মীরের কোন হ্রদের তীরে দেওদার-বনবেষ্টিত পৰ্ব্বতে বসিয়৷ পূৰ্ব্বদিকে সহিয়া গান ধরিয়াছেন, স্বর্ঘ্যের প্রথম স্বর্ণরশ্মি তুষারাবৃত গিরিশৃঙ্গ রাডাইয়া তুলিয়াছে, সন্ন্যাসীমামার ধ্যানরত আনন দীপ্ত করিয়াছে, হ্রদের জল ঝিকিমিকি করিতেছে । অরুণের চচ্ছা করে, সে-ও পরিব্রাজক হইয়া ব্যহির হইয় পড়ে । প্রভাতের আলোক দীপ্ত হইয় ওঠে। পরিব্রীজকের স্বপ্ন মিলাইয়া যায়। অরুণ প্রতিমার সন্ধানে যায়। প্রভাতে তাহার যে পথ্য ও ঔষধের ব্যবস্থা আছে তাহার তদারক করে । ৬াক্তার কডলিভার অয়েল খাইবার ব্যবস্থা দিয়াছেন, ঔসধটির গন্ধ বা স্বাদ প্রতিমার মনোরঞ্জক নয় ; অরুণ উপস্থিত ন থাকিলে ঔষধ খাইতে প্রতিম ইচ্ছাপূর্বক ভুলিয়া যাইবে । সকালে অরুণ সিড়ির পাশে ছাদের ছোট ঘরে পড়িতে পসে । পড়িতে হয়, পরবলয় অতিপরবলয়ের বর্ণনা ; প্ৰায়নোমিয়াল থিওরেম ; এথেন্সের গৌরব-যুগ, পলোপনেসিয় সংগ্রাম, আলেকজান্দারের বিজয়যাত্রা; সিলজিস্মৃ; টেনিসনের ' কবিতা । কোন প্রভাতে পড়ায় মন বসে না । শরতের শাকাশে মেঘগুলি বলাকাশ্রেণীর মত আনাগোনা করে । লস্থল আকাশে কি চঞ্চলত, কি আকুলতা, বহিঃপ্রকৃতি ং তছানি দিয়া আহবান করে । অনন্ত আলোক-সমুদ্র হইতে রঙ্গের পর তরঙ্গ ভাঙিয়া পড়ে পৃথিবীর বুকে, সবুজে হরিতে ১ঞ্চল ধরিত্রী সৌন্দর্ঘ্যে উপছিয়া ওঠে । ক্যামেরার সাহায্যে কোন বস্তুর কিরণকেন্দ্র ( focus ) }ম্বর করার পর বস্তুটি দূরে সরিয়া গেলে ফটোগ্রাফারকে دلا سس ۹ ه د: যেমন আবার নূতন করিয়া কিরণকেন্দ্ৰ নিৰ্দ্ধারণ করিতে হয়, অরুণকে সেইরূপ প্রতিবৎসর বিশ্বপ্রকৃতির সহিত নূতন করিয়া সম্বন্ধ পাতাইতে হয়, তাহার তরুণ অন্তর যে হুদূরের পথিক । কোনদিন সে লাইব্রেরীর কোন গ্রন্থ পড়িয়া সকাল কাটাইয়া দেয় –টুর্গনিভের অন দি ইভ, বঙ্কিমচন্দ্রের রাজসিংহ, মেটারলিঙ্কের ব্লু বার্ড, ভিক্টর হুগোর টয়লাস অফ দি সি । বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন যুগের নানা রস-সাহিত্য । সকালের পড়া বেশীক্ষণ হয় ন! ! কলেজ এগারটায় ; কোন দিন দশটায় অঙ্কের ক্লাস থাকে । তাড়াতাড়ি খাইয়া ছুটিতে হয় । খাবার সময় ঠাকুমা তদারক করিতে আসেন । -অরণ, আস্তে খা । ঠাকুর আর একটা মাছভাজা দিয়ে যাও । ... • না, ঠাকুম, আর দরকার হবে না । -ব’ল দষ্ট আনছে। আজ দইট ভাল জমে নি । আবার পায়েস আছে নাকি ? --ষ্ট করলুম পায়েস । টুলির যা খাওয়া হয়েছে, তবু পায়েস থেতে ভালবাসে । প্রতিম আসিয়া বলে -দাদী, গাড়ী ক’রে যাও । হীরা সি ত দিব্যি গেটে ব’সে বিড়ি টানছে । তোমার ত এগারটায় ক্লাস । --না, না, গাড়ীর দরকার নেই । অতবড় গাড়ী টাকাইয়া কলেজে যাইতে অরুণের কেমন লঙ্গ করে। হয়ত দেখিবে, সে গাড়ী হইতে নামিতেছে আর হরিসাধন নগ্নপদে কলেজের গেটে ঢুকিতেছে । ( २२ ) প্রথম ঘণ্টা অঙ্কের ক্লাস । অনেক সময় আই-এ ও আই-এসসি ছাত্রদের একসঙ্গে ক্লাস হয় । এই সময় অজয়ের দেখা পাওয়া যায় । অজয়কে ডাকিয় অরণ পিছনের বেঞ্চে বসে । প্রফেসার বোর্ডে অঙ্ক লিথিয় দেন । তাড়াতাড়ি অঙ্কটি কষিয়া অরুণ খাতাটি অজয়ের দিকে ধরে, অজয় টুকিয়৷ লয়। তার পর দুই জনে গল্প করে । অজয়ের সহিত গল্পের বিষয় বেশী খুজিয়া পায় না। অজয় যে-সকল সস্ত ইংরেজী ডিটেকটিভ উপন্যাস পড়ে অরুণ সেগুলিকে সাহিত্য-পৰ্যায়ভূক্ত মনে করে না। ফুটবুল হকি খেলার গল্প হয়।
পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯০৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।