পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৪৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b^o -- ---- --- - থাকিয়া সাত্বনার মুখে থেলিয়া যায় ক্ষণপ্রভ হাসি, আর বোবা কাল। চিত্রকর চিত্রে ফুটাইয়া তোলে অনিন্দ্য লীলায় ঐ ও হীর অপরূপ হিল্লোল। রসের আবেশে ভূলের ভরে সাস্তুনার মুখ একটু ফিরিয়া গেলে বোব। চিত্রকর নীরবে টুল ছাড়িয়া উঠিয়া আসিয়া সাত্বনার সম্মুখে দাড়ায়, দৃষ্টিতে মার্জনার প্রার্থনা ভরিয়া ধীরে ধীরে তাহার মুখখানি ধরিয়া ঘুরাইয়া দ্যায় ; গায়ের কাপড় পায়ের অাচল একটুখানি সরিয়া গেলে সে তাহ৷ স্তরে স্তরে কুঞ্চিত করিয়া ঠিক করিয়া দিয়া যায়। বোবার মনের ভাবেরকাপন তাহার আঙুলের ডগে সাম্বন টের পায় ; সান্থনার মুখে যে লজ্জিত কুষ্ঠার অপূৰ্ব্ব শ্ৰটি ফুটিয় উঠে বোব। তাহা প্রাণের রং দিয়া ছবিতে অাকে । এমনি করিয়া তিনমাসে ছবি সম্পূর্ণ হইয়া উঠিল। যে দেখিল সেই বলিল সাস্বনার স্নিগ্ধ সৌন্দর্য্যের সহিত তাহার অস্তরের নারীমূৰ্ত্তিটিও ছবির রঙে বন্দী হইয়াছে। শ্ৰীমন্ত বাৰু মহাখুনী। হাজার টাকার নোট লইয়া চিত্রকরকে বকশিশ দিতে গেলেন। চিত্রকর ঘাড় নাড়িয়া হাত নাড়িয়া বুঝাইতে চাহিল ছবি এখনো শেষ হয় নাই, কাজ এখনো বাকী আছে। টাকা এখন সে লইবে না। অবাক করিল বোবাটা! এখনো বাকী কি ? অবিকল ছবি ত হইয়াছে। ন, এখনো হয় নাই। - হয় নাই ? তিন মাস চুক্তির মেয়াদ ত উতরি গেল ? অক্ষম আমি, চুক্তির সময়ের মধ্যে শেষ করিয়া উঠিতে পারি নাই । শ্ৰীমন্ত বাবুর বিজ্ঞ বন্ধুরা বলিল—বোবাটার বেশী টাকা লইবার ফন্দী। চিত্রকর লিপিয়া জানাইল—বেশী কিছু সে চাহিবে না। বিজ্ঞগণ বলিল - লিথিয়া দিয়াছে, দলিল রহিল। চিত্রকর বা হাতের বুড়ো আঙুলে রঙের তক্তার ফুটাে পরাইয়। সরু মোটা এক গোছা তুলি ধরিয়া টুলের উপর বসিয়া বসিয়া সাত্বনার দিকে একদৃষ্টে চাহিয়া থাকে স্ববিমলের রসের কথায় চাপা হাসি হাসিতে গেলে সাস্তুনার গালে আর চিবুকের মাঝে যে টোলটি পড়ে তাই একটু একটু করিয়া ছবিতে সে ধরে। হাতের মণিবন্ধে আর আঙুলের প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড পাশে জোড়া তিলটি তাহার দৃষ্টি এড়ায় না—রং-ভরা তুলির চুম্বন যত্বে সেটি চুনিয়া রাখে। বিজ্ঞগণ গম্ভীর ভাবে বলিল—বাজে ! শ্ৰীমন্ত বাৰু বিরক্ত হইয়া বলিলেন—আমার সাশ্বনার জন্যে সাত্বনা-মাকে চার মাস কয়েদ খাটালাম ! ঠায় একজায়গায় আড়ষ্ট হয়ে বসে থাকা । সাত্বনা আড় চোখে সুবিমলের দিকে চাহিয়া হাসিয়া বলিল-আমার কিছু কষ্ট হয়নি বাবা! ... ছবিটা কি বাবা ঠিক আমার মতন হয়েছে ? - অবিকল ! তোর গালের টোলটি, হাতের তিলটি পৰ্য্যস্ত ! হঠাৎ মনে হয় তুইই মা যেন এই বুড়ো বাপকে হাসিমুখে সাস্তুনা দিচ্ছিস । তুই আর আমায় একেবারে ছেড়ে যেতে পারবিনে । বুদ্ধের চোখ ছলছল করিতে লাগিল । সুবিমল অপরাধীর ন্যায় মাথা নত করিয়া কাপেটের নক্সায় আঙুল বুলাইতে লাগিল। সান্থনা কথাটা পাণ্টাইবার জন্য তাড়াতাড়ি বলিল—চিত্রকর কালা বোবা, কিন্তু বেশ ওস্তাদ দেখছি ! কাল বোবা বলেই ও সকল প্রাণ দিয়ে ছবির প্রাণপ্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। ও নিজে বঞ্চিত কিনা তাই বোধহয় ও আমার মনের ভাবটা ঠিক ধরতে পেরেছিল । শ্ৰীমন্ত বাবু কাগজে লিখিয়া চিত্রকরকে জানাইলেন— কাল সাশ্বনার বিবাহ, আর দেরী করিলে চলিবে না। আর দেরী হইবে না ; কাল ছবি সম্পূর্ণ হইবে। বিবাহের পর এমস্ত বাবু ও তাহার পত্নী এবং তাহদের আত্মীয় বন্ধুগণ বর ও বধকে লইয়। ঘরে ঢুকিয়াই চমকিয়৷ বলিয়া উঠিলেন–ছবি ! ছবির পটখানি নাই। ইজেলের উপর শূন্ত বাহু মেলিয়া দাড়াইয়া আছে শুধু তাহার কঙ্কাল কাঠামোখানা ! চিত্রকর । চিত্রকর । কোথায় সে ? বিবাহের সময় সে ছিল, এখন তাহাকে খুজিয়া পাওয়া যাইতেছে না। ७छे সংখ্যা ] SMMMAAAS শ্ৰীমন্ত বাবু গর্জন করিয়া উঠিলেন—তবে সে-ই চোর! পুলিশে শিগগির খবর দাও! সাত্বনা অগ্রসর হইয়া আসিয়া বাবার হাত ধরিয়া ধীর মৃদু স্বরে বলিল – সে ত বাবা এক পয়সাও নেয়নি। বিজ্ঞগণ বলিল—ছবিখানা উতরে গিয়েছিল ভালো, বেচে বেশী দাও মারবার মতলব। দাও পুলিশ লেলিয়ে ! সাস্তুনা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া’ ধীর মৃদু স্বরে বলিল— আজ শুভ উংসবের দিনে কারো অনিষ্ট কোরো না বাবা! শ্ৰীমন্ত বাৰু দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিলেন। শুভ উৎসব সকলের কাছেই বড় মান নিরানন্দ মনে হইতে লাগিল । কি একটা বোবা দুঃখ সান্থনার মনের মধ্যে রক্তের ফোটার মতো চুয়াইয়া জমা হইতেছিল। চারু বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রেমের অমরত। আপনি অমর হব, তোমায় করব অমর, ওগো আমার হৃদকমলের মুগ্ধা ভ্রমরী। নীহারিকার প্রাণের কথা, লক্ষযুগের স্বপন-ব্যথা বিশ্বভুবন-মৃণাল-শিরে উঠল ফুটিয়া, আমার হৃদয়পদ্ম পড়ে শোভায় লুটিয়া। এই যে সফলতার বেদন আপনারে এই নিবেদন এই যে ক্ষুদ্র আমার মাঝে আপন পিরিতি এ যে অসীম ভবিষ্যতের আশা-স্থদুর-স্থিরিতি। হৃদয় আমার পাথার মত স্ববাস বিথারি এক নিমিযে ছুটুল কোথা অসীম-বিহারী ; সকল গ্লানি সকল মরণ কেমনে কে করল হরণ সঞ্চারিল গোপন স্বধা মৰ্ম্মকুহরে, ভেসে গেল মরণ-ফেন। জীবন-লহরে। তোমার ব্যাকুল গুঞ্জরণ সে কেমন করে লাগে কোন পাতালের ভোগবতী পরাণে মোর জাগে। ডুবে মরি অতল নীরে উঠি চির-জীবন-তীরে তোমার প্রেমে অমর তোমায় করব অমরী, ওগো আমার স্বদকমলের যুদ্ধা ভ্রমরী। শ্ৰীদ্বিজেন্দ্রনারায়ণ বাগচী । ভালুক ہ:لاط; SSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSS - (রুষ গল্প ) - ১৮৫৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সহরে একটা ভয়ানক হৈচৈ পড়িয়া গেল। গবর্ণমেন্ট হইতে ভাল্লুক বধ করিবার যে হুকুম জারি হইয়াছিল তাহা তামিল করিবার সময় আসিয়াছে। চারিদিক হইতে ডুগডুগিহাতে বাজীকরের দল ছাগলঘোড়া-ভাল্লুক-সমেত সারা সংসারটি ঘাড়ে করিয়া বিষন্ন মনে সহরে সমবেত হইতেছিল। সহরে প্রায় শতাধিক ভালুক জড়ো হইয়াছে। তার মধ্যে এতটুকু বাচ্ছা হইতে আরম্ভ করিয়া বয়সের পরিপক্ষতায় গায়ের রং কটা হইয়া গেছে এমনধারা প্রকাও-চেহারা বুড়ো ভালুক পৰ্য্যন্ত—সব রকমের ভালুকই ছিল। রাজসরকারের মেয়াদ ছিল-পাচ বৎসর উত্তীর্ণ হইলে আর কেহ ভাল্লুক লইয়া খেলা দেখাইতে পরিবে না। সে মেয়াদ এইবার ফুরাইয়াছে। এখন সকলকে নিজের নিজের ভাল্লুক লইয়া নির্দিষ্ট স্থানে সমবেত হইতে হইবে এবং নিজের হাতে তাদের বধ করিতে হইবে। ডুগডুগি-হাতে ছাগল-ভালুক-সঙ্গে বাজীকরের দল তাদের শেষ-ঘোরা শেষ করিয়াছে। এই শেষ বারের মতো গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা দূরে মাঠের মধ্য হইতে তাদের সাড়া পাইয়৷ উৰ্দ্ধশ্বাসে তাদের দিকে ছুটিয়৷ গিয়াছে এবং সবাই মিলিয়া মহা গণ্ডগোল করিতে করিতে গ্রামের মধ্যে তাহাদের অভ্যর্থনা করিয়া আনিয়াছে। সেখানে একটা রীতিমত মেলা জমিয়া গিয়াছিল। সে কী মজা –যেন একটা মহোৎসব! ভালুকের নিজ নিজ কেরামতি দেখাইতে লাগিয়া গেছে –নাচিতেছে, ধ্বস্তা-ধ্বন্তি করিতেছে, ছেলেরা কেমন করিয়া খাবার চুরি করিয়া খায় তাহ দেখাইতেছে। যুবতীর ঢলঢ়লে গতি, বুড়ীর থপথপে চলা, একেবেঁকে চলা একেবারে অবিকল নকল করিতেছে। এই শেষ বারের মতো, মামুলী পুরস্কার তাড়ির ভাড় তাদের হাতে দেওয়া হইয়াছে – তাহারা দুপায়ে সোজা হইয়া দাড়াইয়া ভাড়টাকে বড় বড় . নখওয়াল থাবা দিয়া ধরিয়া ঘাড়টা পিছন দিকে নীচু করিয়া গলার মধ্যে ঢক্‌চক্‌ করিয়া তাড়ি ঢালিতেছে। ভাড়