পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা] দেবতার গ্রাস ఇSసి সারাদিন নাকে কায় " সে দুধের বাটি উঠাষ্টয়া লষ্টয়া চলিয়া গেল। স্বামী বাড়ী আসিবামাত্র বলিল, "ছেলেটাকে একটু দেখ না কিছু না, ও যে দিনকার দিন কেমন হ’য়ে যাচ্ছে। খাওয়া শুদ্ধ ছেড়ে দিলে ঐটুকু ছেলে বঁচি বে কেমন করে’ ?” তাছার স্বামী বলিল, “তুমি আছ কি করতে ? আমি বাইরেও খাটুব, ঘরেও ছেলে দেখ ব? তা তুমি আমার অফিসের কাজটা করে দিও, আমি ছেলের খাওয়া দাওয়া দেখব এখন ।” একটুখানি সহানুভূতির আশায় আসিয়া এইরকম স্বমধুব উত্তর পাষ্টয়া সরোজিনী আর কথা না বলিয়া ফিরিয়া গেল। তাছার দুই চোখ জলে ভরিয়া উঠিল, তাহার কতটা ছেলের অমঙ্গল আশঙ্কায় আর কতটা স্বামীর প্রতি অভিমানে তাঙ্কা সে নিজেই বুঝিল না । কামুর খাওয়া-দাওয়া কিছুতেই আর ঠিক মত হয় না। অ’গে রাত আটটায় ঘুমাইয়া পড়িয়া পরদিন বেলা আটটায় ওঠা ছিল তাহার স্বভাব, এগন সে রাত্রে তিন চার বার কাদিয়া জাগিয়া ওঠে। তাছাকে থাবড়াইয়া নারিকেল নাড়, খাওয়াইয়া, গল্প বলিয়া অনেক কষ্টে আবার ঘুম পাড়াইতে হয়। কালীপূজার দিনকয়েক আগে সকালবেল উঠিয়া সরোজিনী দেখিল কামুর গা গরম। এই বয়সেই বিয়োগদুঃখের অভিজ্ঞতা তাহার কম হয় নাই, সে একেবারে ভয়ে যেন অচল হইয়া গেল। খানিক পরে নিদ্রিত স্বামীকে ঠেলিয়া তুলিয়া দিয়া বলিল, “কাল্পর জর হয়েছে।” স্বামী বলিল, “ভাল করে দেখেছ?” সরোজিনী ক্রনানজড়িত স্বরে বলিল, “আমার যথাসাধ্য ভাল করেই দেখেছি, এইবার তুমি দেথ।” _ কামুর বাবা উঠিয়া বসিয়া তাহাকে ভাল করিয়া পরীক্ষা করিয়া দেখিল । তাহার পর বিছানা ছাড়িয়া জামা গায়ে দিতে-দিতে বলিল, “ওকে এখনই কিছু খাইও না, আমি যুদ্ধ ডাক্তারকে ডেকে আনৃছি।” সে বাহির হুইয়া গেল। ভয়ের একটা কালো ছায়া যেন সরোজিনীর চোখের সাম্নে সমস্ত জগৎ সংসারকে অল্পে অল্পে ছাইয়া ফেলিতে লাগিল । অল্প বয়সেই তাহার দুঃখের অভিজ্ঞতা কম হয় নাই, ভগবান শোকের অগ্নিপরীক্ষায় তাহাকে বঞ্চিত করেন নাই। তাই পীড়িত পুত্রের পাশে বসিয়া তাহার ভয় পাইতেও যেন ভস্থ করিতে লাগিল । তাহার স্বামী বীরেন্দ্র অল্পক্ষণ পরে ডাক্তার লইয়া ফিরিয়া আসিল । ডাক্তার ছেলেকে পরীক্ষা করিয়া ঔষধ লিখিয়া দিয়া চলিয়া গেলেন। যাইবার সময় বীরেন্দ্র কি জিজ্ঞাসা করাতে ইংরেজীতে তাহার উত্তর দিলেন । ভয়ে সরোজিনীর বুকের ভিতরটা আরো ধেন শীতল হইয়া আসিল । স্বামী ফিরিবামাত্র সে জিজ্ঞাসা করিল, “হঁ্যাগ, ডাক্তার কি বললে ? . বীরেন বলিল, “কি আবার বলবে ? সময়টা ভাল নয় তাই সাবধানে রাখতে বললে।” পাছে স্ত্রী আবার কিছু জিজ্ঞাসা করে এই ভয়েই যেন সে তাড়াতাড়ি বাহির হইয়া গেল। সরোজিনীর সেদিন নাওয়া খাওয়া, ঘরের কাজ দেখা কিছুই ঘটিয়া উঠিল না। ভাগ্যে তাহার ননদটি তখনও শ্বশুরবাড়ী যায় নাই, তাহা ন হইলে সঙ্গে সঙ্গে বাড়ীর মানুষকেও উপবাস করিতে হইত। পরদিন সকালে উঠিয়াই বীরেন থার্শ্বোমিটার লইয়া ছেলের জর দেখিতে গেল। সরোজিনী উৎকণ্ঠি ত মুখে জিজ্ঞাসা করিল, “হ্যাগ, জর ছেড়েছে ?” বীরেন ঘাড় নাড়িয়া জানাইল যে কমে নাই। যমরাজের সহিত অল্প বয়সেই পরিচয় করিতে হইয়াছিল বলিয়া এই দম্পতিটির মুখে আর যেন কথাই আসিতেছিল না। তাহাদের আধু বলিবার আছে কি ? খানিক পরে চোথ মেলিয়া কাহ্নু বলিল, “মা, আমি মুড়ি খাব।” সরোজিনী ছেলের গায়ে হাত বুলাইতে-বুলাইতে বলিল, “মুড়ি ত এখন নেই বাবা, পরে দেব ; এখন একটু দুধ খাও, লক্ষ্মী ছেলে ।” কামুর লক্ষ্মী ছেলে হইবার কোনোরূপ বাসনা ছিল না। সে মাথা নাড়িয়া কাদিয়া বলিল, “ন। আমি দুধ