পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] বিবিধ প্রসঙ্গ—শ্ৰীমতী সরোজিনী নাইডুর অভিভাষণ Qやり9 দেবী তাহা খুলিয়া বলেন নাই। তাহার অভিভাষণের এক জায়গায় আছে বটে, যে, স্বরাজ দল কংগ্রেসের দ্বার মুক্ত করিয়া অন্ত সব দলকে উহাতে যোগ দিতে আহবান করিতেছেন। কিন্তু আমরা মনে করি না, যে, কংগ্রেসের সভ্য হুইবার সব সৰ্ব সব দলের লোক অবাধে মানিয়া লইতে পারেন। কংগ্রেসে স্বরাজ দলের এক ছত্র প্রভুত্ব মানিয়া লইয়া উহাতে অন্ত সকলের যোগদান সম্ভবপর নহে । আগে কংগ্রেসের সভ্য হুইবার যে সরল সহজ নিয়ম ছিল, তাহা পুনঃ প্ৰবৰ্ত্তিত করিলে সকলের যোগ দিবার সুবিধা হয়। তাহার পর যে বৎসর যে দলেরই প্রাধান্য হউক, তাহাতে কাহারও কিছু বলিবার থাকিবে ন। স্বরাজ কি প্রকারে শীঘ্র লাভ করা যাইতে পারে, সে বিষয়ে কিছু বলা কঠিন। মহাত্মা গান্ধী প্রথম প্রথম কয়েকটি সৰ্ব নির্দেশ করিয়া বলিতেন, যে, সেগুলি পালিত হইলে এক বৎসরের মধ্যে স্বরাজ পাওয়া যাইষে। অবগু এক বৎসরের মধ্যে স্বরাজ পাওয়া যায় নাই । মহাত্মা গান্ধীর পক্ষ হইতে উত্তরে ইহা বলা যায়, যে, তাহার নির্দিষ্ট সৰ্ত্তগুলিও পালিত হয় নাই। প্রত্যুত্তরে বলিতে পারা যায়, যে, তাহার সর্বগুলিই এরূপ ছিল, যে, তাহা এক বৎসরের মধ্যে কখনও অধিকাংশ ভারতীয়ের দ্বারা পালিত হইবার সম্ভাবনা ছিল না। এই সে দিনও কানপুরে তিনি বলিয়াছেন, যে, চরখার ও খঙ্গরের আশানুরূপ প্রচলন ও ব্যবহার হইলে এক বৎসরের মধ্যে স্বরাজ পাওয়া যাইতে পারে । কিন্তু কয়েক বৎসরের চেষ্টাতে চরখার প্রচলন এবং খদ্দর উৎপাদন ও ব্যবহার যতটা হইয়াছে, তাহাতে ভবিষ্যদ্বক্তার আসন গ্ৰহণ না করিয়াও বলা যায়, যে, চরখা ও খন্দর সম্বন্ধে মহাত্মা গান্ধীর আশা এক বৎসরে পূর্ণ হইবে না – কখনও হইবে কি না সন্দেহ । আমাদের মনে হয়, স্বরাজ লাভের তারিখ নির্দেশ করা ভুল। উহার স্থচিন্তিত পন্থা ও উপায় নির্দেশ করিয়া তাহাই দেশের লোককে অবলম্বন করাইতে অবিরত চেষ্টা করা কর্তব্য। নতুবা এমন অনেক সর্ভের উল্লেখ করা যাইতে পারে, যাহা যুগপৎ পালিত হইলে, এক বৎসরে কেন, এক সপ্তাহেই স্বরাজ লব্ধ হইতে পারে। এরূপ একটি সর্তের উল্লেখ ক’রতেছি যাহা বহু বৎসর পূৰ্ব্বেই কোন কোন ইংরেজ গ্রন্থগর কর্তৃক স্বচিত হইয়াছিল। যদি ইংরেজ গবষ্মেন্টের উচ্চতম হইতে নিম্নভূম সৈনিক ও অসৈনিক, বেতনভোগী ও অধৈতনিক, সমুদয় ভারতীয় ভূত্ত্য চাকৃরা ছাড়িয়া দেয়, তাহা হইলে অবিলম্বে গবন্মেণ্ট কে আমাদের দাবী গ্রাঙ্ক করিতে হইবে। কিন্তু সঞ্চলের দ্বারা এরূপ যুগপৎ পদত্যাগ সম্ভবপর নহে। ইংরেজীতে সম্ভাব্যতা বুঝাইবার জন্য ইম্পসিবল এবং ইম্প্রবেবল এই দুই শৰ ব্যবহৃত হয়। তাছা ব্যবহার করিয়া বলিতে পারা যায়, যে, সকল ভারতীয় সরকারী চাকরের যুগপৎ পদত্যাগ ইম্পসিবল ন হইলেও ইম্প্রবেবল। মহাত্মা গান্ধীর সর্তগুলি সম্বন্ধেও ভাতাই বক্তব্য । যাহা হউক স্বরাজ লাভের জন্য সরোজিনী দেবী তাহার অভিভাষণে কি পন্থ নির্দেশ করিয়াছেন, এখন সংক্ষেপে তাহার আলোচনা করিতেছি । তিনি বলেন, আগামী বসন্তু কালে ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভার অধিবেশনের সময় বা তৎপূৰ্ব্বে যদি গবষ্মেন্ট আমাদের দাবীতে বর্ণপাত না করেন, কিম্বা যদি গবন্মেণ্ট ধাহা দিতে চান, তাহা আমাদের গ্রহণযোগ্য না হয়, তাহা হইলে যাহারা ংগ্রেসের প্রভাবাধীন র্তাহাদিগকে স্বম্পষ্ট এই আদেশ জানাইতে হুইবে, যে, তাহারা ভারতীয় ও প্রাদেশিক সমুদয় ব্যবস্থাপক সভায় আপনাদের পদত্যাগ করুন। তদ্ভিন্ন কৈলাস হইতে কঙ্কাকুমারী ও সিন্ধু হইতে ব্ৰহ্মপুত্রনদ পৰ্য্যন্ত ভারতীয় লোকদিগকে শেষ স্বরাজলাভ চেষ্টার জন্ত প্রস্তুত করিতে হইবে । তাহাদিগকে শিখাইতে হইবে, যে, ভারতজননীকে তাহার দাসত্ব-অপমান হইতে মুক্ত করিবার এবং আমাদের সন্তানদিগকে অবিনশ্বর শাত্তি দিয়া যাইবার নিমিত্ত কোন ত্যাগই বেশী নয়, কোন ক্লেশ অতি বড় নয়, কোন দুঃখলাঞ্ছনা ভোগ অতি ভয়াবহ নহে । সশস্ত্র যুদ্ধ না করিয়া, ইংরেজদের বা ইংরেজ পক্ষের কাহারও প্রাণ ষধ না করিয়া, বরং জাবগুক হইলে নিজের প্রাণনাশ পৰ্য্যন্ত দুঃখ স্বীকার করিয়া, শান্তির পথে স্বরাজ লাভ কংগ্রেসের উদ্বেগু ও লক্ষ্য। স্বতরাং ভ্রমত