পশ্চিমযাত্রীর ডায়ারি স্ত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৭ ফ্রেব্রুয়ারি ১৯২৫ ক্রাকোভিয়া জাহাজ মাসে লস বন্দরে নেমে রেলে চড়লেম । পশ্চিমদেশের একটা পরিচয় পেলেম ভোজন-কামরায়। আকাশে গ্ৰহসুলার আবর্তনের মতো থালার পর থালা ঘুরে ঘুরে আসছে, আর ভোজ্যের পর ভোজ্য। ঘরের দাবী পথের উপর চলে না। ঘরে আছে সম য়ের অবসর, ঘরে আছে স্থানের অবকাশ । সেখানে জীবন যাত্রার আয়োজনের ভার বেশি করে জমে ওঠবারবাধা নেই। কিন্তু চলতি পথে উপকরণভার যথাসম্ভব হালকা করাই সাধারণ লোকের পক্ষে সঙ্গত । হরিণের শিঙ বটগাছের ডাল-আবভালের মতো অত অধিক, অত বড়, অত ভারী হ’লে সেটা জঙ্গম প্রাণীর পক্ষে বেহিসাবী হয়। চিরকাল, বিশেষত পূৰ্ব্বকালে, রাজা-রাজড়া আমীরওমরাওয়া ভোগের ও ঐশ্বর্ষ্যের বোঝাকে সৰ্ব্বত্র সকল উপর তাদের আবদার অত্যন্ত বেশি। সে-আবদার সংসার মেনে নিয়েছে, কেন না এদের সংখ্যা তেমন বেশি নয়। রেলগাড়ির ভোজনশীলায় থালার সংখ্যা, ভোজ্যের পরিমাণ ও বৈচিত্র্য, পরিচর্য্যার ব্যবস্থা, এত বাহুল্যময় ষে পূৰ্ব্বকালের রাজকীয় সম্প্রদায়ই পথিক-অবস্থাতেও তা দাবী করতে পারত। এখন জনসাধারণের সকলের জন্যে এই আয়োজন । ভোগের এত বড় বাহুল্যে সকল মানুষেরই অধিকার আছে এই কথাটার আকর্ষণ অতি ভয়ানক। এই আকর্ষণে দেশজোড়া মহিষের সিধকাঠি বিশ্বভাণ্ডারের দেয়াল ফুটাে করতে উদ্যত হয় ; লুব্ধ সভ্যতার এই উপন্দ্রব সর্বনেশে যেটা বাহুল্য তাতে ছোট বড় কোনো মাছুষের কোনো অধিকার নেই এই কথাটা গত যুদ্ধের সময় ইংলও ফ্রান্স জখমী প্রভৃতি যুদ্ধরত দেশকে অনেকদিন ধরেই স্বীকার করতে হ’ল। তখন তারা আপনার সহজ জীয়ে অবস্থাতেই• ভরপুরভাবে টেনে বেড়িয়েছে। সংসারের - জনের অনুপাতে নিজের ভোগকে সংযত করেক্রিয়া
পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।