, ১ম সংখ্যা } সত্য নষ্ট করে তাকে মৃত্যুর মুখে নিয়ে গেছে তার সংখ্যা cनई । . তাইতে গোড়ায় বলেছি প্রেমের দুই বিরুদ্ধপার আছে - একপারে চোরাবালি, আরেকপারে ফসলের ক্ষেত। একপারে ভালোলাগার দৌরাত্ম্য, অন্যপারে ভালোবাসার আমন্ত্রণ। মাতৃস্নেহের মধ্যেও এই দুই জাতের প্রেমু। একটাতে প্রধানত আসক্তি নিজের পরিতৃপ্তি খোজে,-সেই অন্ধ মাতৃস্নেহ আমাদের দেশে বিস্তর দেখতে পাই। তাতে সন্তানকে বড় ক’রে না তুলে’ তাকে অভিভূত করে। তাতে কোনো পক্ষেরই কল্যাণ নেই।- যে-প্রেম ভাগের দ্বারা মানুষকে মুক্তি দিতে জানে না, পরন্তু ত্যাগের বিনিময়ে মাতুষকে আত্মসাৎ করতে চায়ু, সে-প্রেম ত রিপু। একপক্ষকে ক্ষুধার দাহে সে দগ্ধ করে অন্তপক্ষকে লালায়িত আসক্তি দ্বারা লেহন ক’রে জীর্ণ ক’রে দেয় । এই মাতুলালন-পাশের পরিবেষ্টনের মধ্যে যারা চির-অবরুদ্ধ আমাদের দেশে তাদের সংখ্যা বিস্তর। তাদের শৈশব আর ছাড় ভে চায় না। আসক্তি-পরায়ণ মাতার মূঢ় আদেশ-পালনের অনর্থ বহন ক’রে অপমানের মধ্যে অভাবের মধ্যে চিরজীবনের মতো মাথা হেঁট হ’য়ে গেছে এমন সকল বয়স্ক নাবালকের দল আমাদের দেশে ঘরে ঘরে । আমাদের দেশে মাতার ক্রোড়-রাজত্ব বিস্তারে পৌরুষের যত হানি হয়েছে এমন বিদেশী শাসনের হাত কড়ির নির্ধমতার দ্বারাও হয়নি । স্ত্রীপুরুষের প্রেমেও সেই একই কথা । নারীর প্রেম পুরুষকে পূর্ণশক্তিতে জাগ্রত করতে পারে কিন্তু সেপ্রেম যদি শুক্লপক্ষের না হয়ে কৃষ্ণপক্ষের হয় তবে তার মালিন্তের আর তুলনা নেই। পুরুষের সর্বশ্রেষ্ঠ বিকাশ তপস্তায় ; নারীর প্রেমে ত্যাগধৰ্ম্ম সেবাধন্ম সেই তপস্তারই স্বরে স্বর মেলানো ; এই দুয়ের যোগে পরস্পরের দীপ্তি উজ্জল হ'য়ে ওঠে। নারীর প্রেমে অারেক স্বরও বাজ তে পারে, মদনধন্থর জ্যায়ের টঙ্কার, সে মুক্তির স্বর না, সে বন্ধনের সঙ্গীত। তাতে তপস্ত ভাঙে, শিবের ক্রোধানল छेकौशुं श्घ्रं । কেন বলি পুরুষের ধৰ্ম্ম তপস্যা ? কারণ, জীবলোকের পশ্চিমাত্রীর ডায়ারী $ " কাজে প্রকৃতি তাকে নারীর তুলনায় মনেক পরিমাণে অবকাশ দিয়েছে। সেই অবকাশটাকে নষ্ট করলেই তারু সবচেয়ে ফাকি । পুরুষ সেই অবকাশকে আপন সাধনার ক্ষেত্র করেছে ব’লেই মানুষের উৎকর্ষ জৈব প্রকৃতির সীমানা অনেক দূরে ছাড়িয়ে গেল। প্রকৃতির দাবী থেকে মুক্তি নিয়েই পুরুষ জ্ঞানকে ধ্যানকে শক্তিকে অসীমের মধ্যে অনুসরণ ক’রে চলছে। সেইজন্তে পুরুষের সাধনায় চিরকালই প্রকৃতির সঙ্গে বিরুদ্ধত আছে। নারীর প্রেম যেখানে এই বিরোধের সমন্বয় করে দেয়, কঠোর জ্ঞানের বেদি-প্রাঙ্গণে সে যখন পূজা-মাধুর্ঘ্যের আসন রচনা করে ; পুরুষের মুক্তিকে যখন সে লুপ্ত করে না, তাকে স্বন্দর ক’রে তোলে ; তার পথকে অবরুদ্ধ করে না, পথের পাথেয় জুগিয়ে দেয় ; ভোগবতীর জলে ডুবিয়ে দেয় না স্বরধুনীর জলে স্নান করায়, তখন বৈরাগ্যের সঙ্গে অমুরাগের, হরের সঙ্গে পাৰ্ব্বতীর শুভপরিণয় সার্থক হয় । বিচ্ছেদের ভিতর দিয়েই শক্তি কাজ করবার ক্ষেত্র পায় । চাদ ও পৃথিবীর মাঝখানে যে-বিরহ আছে তারই অবকাশে পৃথিবীর সমস্ত সমুদ্রকে চাদ কথা কওয়ায়। স্বীপুরুষের পরস্পরের মাঝে বিধাতা একটি দুরত্ব রেখে দিয়েছেন । এই দুরত্বের ফাকটাই কেবলি সেবায় ক্ষমায় বীৰ্য্যে সৌন্দর্ষ্যে কল্যাণে ভ'বুে ওঠে, এইখানেই সীমায় অসীমে শুভদৃষ্টি । জৈবক্ষেত্রে প্রকৃতির অধিকারের মধ্যে মানুষের অনেক স্বষ্টি আছে কিন্তু চিত্ত-ক্ষেত্রে তার স্বাক্টর অস্ত নেই। চিত্তের মহাকাশ স্থল আসক্তির দ্বারা জমাট হয়ে না গেলে তবেই সেই স্বষ্টির কাজ সহজ হয়। দীপশিখাকে দুই হাতে অঁাকৃড়ে ধ’রে যে মাতাল বেশি ক’রে পেতে চায়, সে নিজেও পোড়ে, আলোটিকেও নিবিয়ে দেয় । মুক্ত অবকাশের মধ্যে পুরুষ মুক্তি সাধনার যে-মন্দির বহুদিনের তপস্যায় গেঁথে তুলেছে পূজারিণী নারী সেইখানে প্রেমের প্রদীপ জালবার ভার পেল। সে কথ। যদি সে ভুলে যায়, দেবতার নৈবেদ্যকে যদি সে মাংসের হাটে বেচ তে কুষ্ঠিত না হয়, তা হ’লে মৰ্ত্তের মর্শ্বস্থানে যে-অমরাবতী আছে তার পরাভব ঘটে, পুরুষ যায় প্রমত্ততার রসাতলে, আর নারীর হৃদয়ে যে রসের পাত্র আছে তা ভেঙে গিয়ে সে রস খুলাকে পঙ্কিল করে।
পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।