, দুর ধৰ্ম্মান্তর গ্রহণ * অধ্য আমি যে কয়েকটি কথা বলিবার জন্য আপনাদের দমক্ষে উপস্থিত হইয়াছি, জানি তাহার কোন-কোন কথা স্বধৰ্ম্মে নিষ্ঠাবান আমার শ্রন্ধেয় বন্ধুবর্গের মনে কষ্ট দিতে পারে। ইহা জানিয়াও আমি উহা বলা আবশ্যক বিবেচনা করিতেছি। আমি স্বয়ং হিন্দু, এবং আমরণ হিন্দুই iাকিব। আমি ব্রাহ্ম-ধৰ্ম্মকে হিন্দু ধর্থেরই অন্তর্গত বলিয়া মনে করি, এবং পৃথিবীর প্রচলিত অপরাপর ধর্থসমূহের ইতিহাস আলোচনা করিয়৷ আজি এই স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছি যে, তাছাদের কোনটিই হিন্দু ধৰ্ম্ম অপেক্ষ শ্ৰেষ্ঠ নহে। তথাপি প্রচলিত হিন্দু-মতকে আঘাত দ্বারা কুেন ক্ষতবিক্ষত করিতেছি ইহার উত্তর এই যে, দেহ ব্যাধি গ্রস্ত হইলে যেমন সময়-সময় রক্ত মোক্ষণ আবশ্যক ইষ্টয়া পড়ে, সেইরূপ হিতৈষী ভিযকৃসমাজ শরীরের গ্লানি দুর পরিবার জন্যই কখন-কখন অস্ত্রোপচার করিতে বাধ্য হন । তাহাতে স্বফল ন হইলে ভিষকের নিপুণতাকে আপনার দায়ী করিবেন, অস্থোপচারের আবশ্যকতা অস্বীকার করিবেন না। যেসকল কারণবশতঃ হিন্দু সাধারণতঃ ধৰ্ম্মাস্তুর গ্রহণ করে, কার্ধ্যোপলক্ষে বঙ্গদেশের নানা অঞ্চলে বাস করিয়া তাহার একটি কারণ পুনঃপুনঃ আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছে। তাহা ধেীন অতুরাগ। হিন্দু বিধবা যুবতীকে মুসলমানের প্রেমে পড়িয়া মুসলমানী হইতুে দেখিয়াছি, পিতা মাত ভ্রাতা বর্তমানুে, তাহাদের বিরুদ্ধাচরণ সত্ত্বেও ঐরূপ করিতে দেখিঞ্জছি। হিন্দু-যুবককে মুসলমানীর প্রেমে পড়িয়া মুসলমান হইতে দেখিয়াছি, শিক্ষিত ও অশিক্ষিত উভয় শ্রেণীর মধ্যে ঐক্কপ দেখিয়ছি। যে হিন্দুবিধবা ব্ৰত-নিয়ম, সংযম-উপবাস, পূজা-পাৰ্ব্বণ, আচারনিষ্ঠ, জপ-তপ, তন্ত্র মন্ত্র, দেব-দ্বিজে ও বেদ পুরাণে শ্রদ্ধাভক্তি, জন্মগত সংস্কার প্রভৃতি লইয়া এমন-একটি বিশিষ্ট পারিপার্থিক আবেষ্টন ও বংশানুক্রমিক মনোভাবের মধ্য ক্ষমাদারীপুর লাইৰেী"হে পটন্ত -- SS S SSAAA ASAS A SAS SSAS S S AAAAAASAAAS দিয়া গঠিত হইয়া উঠে যে, তাহার নিকট বিধৰ্ম্মীর সংস্পশ - বিষবৎ পরিত্যাজ্য বলিয়া বোধ হয়, তাহার এবম্বিধ অভাবনীয় পরিবর্তনে গ্রেমের অথবা যৌন আসক্তির অপ্রতিহত শক্তি লক্ষ্য করিয়া বিস্ময়ে অভিভূত হইয়াছি। আরও লক্ষ্য করিয়াছি, হিন্দু-সমাজ এইজাতীয় ঘটনাগুলিকে কিরূপ গভীর উপেক্ষার চক্ষে দেপিক্ষ থাকে। কোন মুসলমানের ধৰ্ম্মান্তর গ্রহণে মুসলমান সমাজ যেরূপ বিচলিত হইয়া উঠে, হিন্দুসমাজ ঠিক তাহার বিপরীত। হিন্দু মুসলমান হইলে অতি আদরের সহিত সে ইসলাম সমাজে গৃহীত, এবং মুসলমানগণ মসজিদে প্রকাগু সভা করিয়া তাহাদের আনন্দ ও সহানুভূতি জ্ঞাপন করিয়া থাকে। অথচ স্বধৰ্ম্মে নিধন শ্রেয় ও পরধৰ্ম্ম ভয়াবহ এরূপ উক্তি হিন্দু-সমাজেই বেশী শুনিতে পাওয়া যায়। স্বধৰ্ম্মে বিশ্বাস যে জাতির মধ্যে এত প্রবল, তাহার পক্ষে এহেন গভীর ঔদাসীন্য আপাতদৃষ্টিতে অভ্যস্ত আশ্চর্ঘ্যের বিষয় বলিয়া মনে হয় সন্দেহ নাই । কিন্তু ভাবিয়া দেখিতে গেলে, ইহাতে বিস্ময়ের কিছুই নাই, বরঞ্চ এরূপ হওয়াই স্বাভাবিক। হিন্দু নিজের মুক্তি লইয়াই ব্যস্ত, অন্তের ভাবনা ভাবিবার তাহার অবসর নাই। তাহার দর্শনমূলক সভ্যতা তাহাকে একান্ত অন্তমুখী ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের পক্ষপাতী করিয়াছে। জীবনের লক্ষ্য মুক্তি, তাহ ব্যক্তিগত সাধনার বিষয়, জাতিগত নহে। ঐহিক চিন্তা-মাত্রেই চিত্ত বিক্ষেপকর, প্রত্যেকে স্ব-স্ব আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য চেষ্টা করিবে, পরের চরকা তৈলসিক্ত করিতে যাওয়া শক্তির অপব্যয় মাত্র । স্বতরাং প্রত্যেকে আমরা পরের তরে" একথা হিন্দু মনে করে না। জাতীয় ইতিহাস রচনায় হিন্দু কখনও অমুসন্ধিৎসা দেখায় নাই, ইহকালের ক্ষণস্থায়ী ঘটনাপুঞ্জে কোন-প্রকার কৌতুহলপ্রদর্শনকে সে অজ্ঞ ও ইতয়জনোচিত মোহ-মাত্ৰ মনে করিয়াছে। মুমুকু হিন্দুর এবম্বিধ মজ্জাগত জড়তা লক্ষ্য করিয়া বিবেকানন্দ পুনঃপুনঃ বলিয়াছেন,
পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।