Գe কঁাপিয়ে তোলে ; মেরামং ন কবুলে সেই কাপড়-জামায় পুঁত কাটানো অসম্ভব। বড়দিনের ছুটিতে অনিল বাড়ীতে এসেছে । তা’র পরনে স্থচিঙ্কণ ধুতি, গায়ে ভালো বনাতের বুক-খোলা কোট, গলায় রেশমী মাফলার, পায়ে চকচকে নূতন পাম্প শু । এই বিলাস-সজ্জার কতক জমিদার প্রফুল্ল-বাবুর উচ্ছিষ্ট প্রসাদের বকেয়া জের, আর কতক অনলের আত্মত্যাগ ও স্নেহের দানের অপব্যবহার । অনিল বাইরে থেকে বেড়িয়ে এসে দাদাকে বললে—দাদা, আমি কাল কলকাতায় যাবো । অনল সেলাই ছেড়ে মুখ তুলে অনিলের দিকে বিস্মিতভাবে তাকিয়ে জিজ্ঞাস করলে—কেন ? এখনও ত চারদিন ছুটি বাকি আছে। অনিল বললে—তা আছে, কিন্তু ‘নিউ ইয়ার্স ডে-তে আলিপুরের জু-গার্ডেনে ফ্যান্সি ফেয়াব দেখতে যেতে হবে । কাল না গেলে দেরি হয়ে যাবে যে । অনল একটা দীর্ঘনিশ্বাস চেপে কেবল বললে—আচ্ছা। অনিল আবার বললে—আমার গোটা-দশেক টাকা छाई झांप्त । অনলের সেই একই উত্তর---আচ্ছ । অনিল হয়ত অনলের মুখে একটা জিজ্ঞাসার ভাব প্রকাশ পেতে দেখেছিল, কিম্বা তা’কে প্রথম কলকাতায় পাঠাবার, সময় তা’র দাদা যে তিনটি মাত্র উপদেশ দিয়েছিল—অসৎ সঙ্গ ও প্রলোভন থেকে দূরে থেকে, অপব্যয় কোরে না, শার মন দিয়ে লেখাপড়া কোরো—সেই উপদেশ-তিনটি হয়ত এখন তা’র মনে পড়ে গেল ; তাই একটা আকস্মিক লজ্জায় তা’র মনটা সঙ্কচিত হ’য়ে উঠল। "ঠাকুর-ঘরে কে? এই প্রশ্নের উত্তরে যে মহাপুরুষ ‘আমি ত কলা খাইনি' বলে বাংলা প্রবচনের মধ্যে অমর হয়ে আছেন, তারই মতন তাড়াতাড়ি সে বললে—ফ্যান্সি ফেয়ারে আমাদের স্কুলের মাষ্টার মশায়রাও যাবেন ; সেখানে দুদিন যেতে মোটে ঘু টাকা খরচ হবে ; সকল বিষয় দেখা-শোনাও ত শিক্ষার অঙ্গ। আর বাকি টাকা দিয়ে এক জোড়া জুতো কিন্ব । জনল এবার ভাইকে প্রশ্ন না করে আর চুপ করে প্রবাসী—বৈশাখ, ృరిలిచి [ ২৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড থাকৃতে পারলে না—তোমার ত তিন জোড়া জুতো— পাম্প শু, ব্রোগ আর চটি—মূতনই আছে ; আবার জুতো কি হবে ? 魏 案 অনিল বললে—এক-জোড়া টেনিস শু কিনতে হবে, এই টেনিস খেলার সিজন এসেছে কি না । অনল একটু কুষ্ঠিত স্বরে বললে—এই-সব জুতো প’রে খেলা যায় না ? অনিল দাদার মূর্খতায় মুচকি হেসে বললে—ন, এ-সব জুতো প’রে খেলা দস্তুর নয়। " অনল ভাইয়ের নূতন জুতো কেনায় যে পরোক্ষ ঈষৎ আপত্তি উত্থাপন করেছে তা’র জন্তেই যেন লজ্জিত-কুষ্ঠিত হয়ে তাড়াতাড়ি জিজ্ঞাসা করলে—ত হ’লে ত একটা টেনিস র্যাকেটও কিনতে হবে ? দাদার এই প্রশ্ন শুনে অনিল মনে করলে দাদা অধিক ব্যয়ের ভয়ে এই প্রশ্ন করছে ; তাই সে একটু বিরক্তস্বরে বললে—না, আমি র্যাকেটের টাকা চাইনে, আমি একটা র্যাকেট জোগাড় ক’রে এসেছি । অনিলের কথা শু'নে অনল আশ্বস্তও হ’ল, সঙ্গেসঙ্গে ব্যথিতও হ’ল ; সে যে ভাইয়ের নির্দোষ খেলার জন্যে একটা র্যাকেট জোগাতে পরাজুথ ও অপারক এই কথা মনে হওয়াতেই অনল নিজের কাছে কুষ্ঠিত ও অপরাধী হ’য়ে ব্যথিত হয়ে উঠল । সে তাড়াতাড়ি উঠে নিজের বাকুস খুলে দেখলে তাতে তেরটি টাকা আছে ; এই টাকা সে নিজের এক-জোড়া কাপড় জামা ও জুতে কেনবার জন্তে অনেক কষ্টে সঞ্চয় ক’রে তুলেছিল। সেই তেরটি টাকাই বাক্স থেকে সে বার ক’রে নিলে। টাকা নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসতেই ঘরের সাম্নের একপাশে স্থানে-স্থানে-তালিমারা সেলাইয়েরগু-অতীত-হ’য়ে-ছিড়ে-যাওয়া ধূলায় ধূসর নিজের একমেবাদ্বিতীয়ম্ জুতা-জোড়ার উপর নজর পড়ল ; সেদিক থেকে সে তাড়াতাড়ি চোখ ফিরিয়ে নিয়ে বাইরে এসে অনিলের হাতে সেই তেরটি টাকাই স’পে দিলে এবং মনে-মনে সঙ্কল্প করলে—যেমন ক’রেই হোক অনিলকে একটা টেনিসর্যাকেট কিনে দিতে হবে ; এই র্যাকেট তা’র নিতাস্ত প্রয়োজন, অথচ অনিল অভিমান
পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।