পাতা:প্রবাসী (প্রথম ভাগ).djvu/২২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ه امواج প্রবাসী। [ ১ম ভাগ। হইতেন। সন্ধ্যার সময় বেদান্তসার, বৈদাস্তিক রাজযোগ, উপনিষদ, ইটযোগ প্রদীপিকা, গুরুগীত, যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতা প্রভৃতি পুস্তক পড়িতে বড়ই ভাল বাসিতেন । আয়ার অমরত্ব সম্বন্ধে জজ এডমণ্ড, ঈগলস, ম্যাডাম ব্ল্যাভ্যাটস্কি, কর্ণেল অলকট প্রভৃতি লোকের সহিত তিনি লেখা পড়া করিতেন। প্যারীচাদ, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, পূর্ণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, নরেন্দ্রনাথ সেন, ও রাজকৃষ্ণ মিত্রের সহিত প্রেততত্ত্বের অনুশীলনে অনেক সময় অতিবাহিত করিতেন । ঠাঙ্গার বিদ্যা ও গবেষণায় মুগ্ধ হইয়া ম্যাডাম ব্ল্যাভ্যাটস্কি ও কর্ণেল অলকট তাহাকে নিউইয়র্কের ও লগুনের থিওসফিকেল সোসাইটার ফেলো ও ভারতের স্পিরিচুয়াল সোসাইটর সভাপতি করেন । ইউরোপের ও আমেরিকার অধ্যাত্মতত্ত্ববিদগণ তাছার বহু সম্মান করিতেন । এই সময়ে তিনি নরেন্দ্রনাথ সেনের অনুরোধে রামকমল সেনের জীবনচরিত লেখেন । তিনি প্রেততত্ত্ববিষয়ে আমেরিকার “বাণার অব লাইট” ও “লণ্ডন স্পিরিচয়েলিষ্ট” প্রভৃতি কাগজে প্রবন্ধ লিখিতেন ও অা স্থা ও আধ্যাত্মবাদ সম্বন্ধে আরও তিনখানি ইংরাজি পুস্তক লিখিয়াছিলেন । পারীচাদ প্রেততত্ত্বে এতদূর উন্নতি লাভ করিয়াছিলেন যে, পাশ্বের ঘরের লোক প্রায়ই প্রেতা দ্বার সহিত র্তাহার কথাবাৰ্ত্তা শ্রবণে ভয় পাইয়। উঠিত। মেসমেরিজম তিনি ভালরূপ অভ্যাস করিয়াছিলেন । অনেক পীড়িত ব্যক্তি দেশ বিদেশ হইতে জলপড়া লইতে ও মেস্মেরাইজড, হইতে র্তাহার নিকট আসিত । আশ্চর্য্যের বিষয়, প্রায় সকলে আরোগ্য হইত। “অমৃতবাজার পত্রিকা’র সম্পাদক শিশিরকুমার ঘোষ তাছার নিকট ঐ বিষয়ের আলোচনার জ দ্য প্রায়ই যাইতেন । ধৰ্ম্মালোচনার জন্ত কেশবচন্দ্র সেন ও র্তাহার নিকট প্রায়ই যাইতেন । ঈশ্বরপিপাস্থ হইয়া যাহ। কিছু পাইয়াছিলেন, তাহার বিষয়ে তিনি অনেক পুস্তক লিখিয়া গিয়াছেন । প্রাচীন কালের স্ত্রীজাতির অবস্থা ও উৎকর্ষ বণনা করিয়া "এতদেশীয় স্ত্রীলোকদিগের পুৰ্ব্বাবস্থা,” যোগ ও আধ্যাতিক উন্নতি বর্ণনা করিয়া "মাধ্যাত্মিক”, সঙ্গীত পুস্তক “গীতাস্কুর,” বাঙ্গালা ভাষা, গীশিক্ষা ও ধৰ্ম্মশিক্ষার সহায়তা করিয়া "বামাতোষিনী” ও “কৃষিপাঠ,” স্ত্রীশিক্ষার জন্য নীতি উপদেশ ও আদর্শ স্ট্রীজীবনী সম্বলিত “রামারঞ্জিক” ও একটা ‘অভেদী’ নামক অধ্যায়ুবাদ বিষয়ক উপন্যাস লেখেন । তিনি রস্তমজী কাওয়াসঙ্গীর জীবনচরিত ও অন্যান্য কতকগুলি আত্মা সম্বন্ধীয় গ্রন্থ লিখিয়াছিলেন কিন্তু প্রকাশ করিবার সময় পান নাই । প্যারীচাঁদ, মাছ মাংস প্রভৃতি দ্রব্য অনেক দিনই ত্যাগ করিয়াছিলেন, কিন্তু মাতৃবিয়োগের পর সংসার ত্যাগ করিয়া বনবাসী হইবার ইচ্ছা তাহার বড়ই প্রবল হইয়াছিল। কিন্তু সুবিধা না হওয়ায় স্বীয় জীবন বনবাসীর উপযোগী করিবার জন্য অন্নাহার পরিত্যাগ করিয়া ফলমূল পাইয়। জীবন যাপন করিতেন । সুখের জীবনে অত কষ্ট সহ্য হইবে কেন ? শীঘ্রই উদরী রোগের সূচনা হইল । তিনি সুস্থাবস্থায় দাসদাসীকে আপনার সন্তানাপেক্ষ অধিক স্নেহ করিতেন । তিনি ভালমন্দ যাহা আহার করিতেন, তাতার অদ্ধেক দাসদাসীর জন্য রাখিয়। দিতেন । পীড়ার দারুণ ক্লেশে ক্লিষ্ট হইয়া ও একদিনের জনা ও তাহাদিগকে কোন ও ককশ কথা বলেন নাই । সে দুরারোগ্য পীড়ার কিছুতেই উপশম হইল না, নশ্বর শরীর শুকাইয়া চলিল, শারীরিক বল খৰ্ব্ব হইতে লাগিল, শরীর শুঙ্খল ছিন্ন করিবার দিন যত সন্নিকট হইয়াছিল, ততই অমল আত্মা উজ্জলমূৰ্ত্তি ধারণ করিয়াছিল। অবশেষে ১৮৮৩ সালের ২৩ শে নবেম্বর রাত্রি ১•• ঘটিকার সময় অমর আত্মা দেহবন্ধন ছিন্ন করিয়া অমরলোকে চলিৱা গেল। প্যারীচাঁদ, তিন পুত্ৰ-অমৃতলাল, চুণিলাল, ও নগেন্দ্রলাল-ও এক কন্যা রাখিয়া গিয়াছিলেন । কিন্তু এই অষ্টাদশ বৎসরে সকলেই গিয়াছেন, আছেন কন্যাট ও নগেন্দ্রলাল । কৃষ্ণদাস পাল, ডাঃ কে, এম, বানাজি প্রভৃতি বাঙ্গালী, ও কেসউইক ওয়াগ ষ্টার প্রভৃতি ইংরাজ প্যারীচাদের জন্য শোক প্রকাশার্থ কয়েকটী সভা আস্থান করিয়াছিলেন। তাহার প্রস্তরমূৰ্ত্তি কলিকাতা টাউনহলে স্থাপিত হইয়াছে ; এবং তাহার একখানি সুন্দর তৈলচিত্র এতদিন মেটকাফ হলেই আছে, এবং আশা করি গবর্ণমেণ্ট মেটকাফ হল লইলেও উহা পূর্বের ন্যায় স্বস্থানে