| ৮ম ও ৯ম সংখ্যা । ] ভাষা কথিত হয়, গিলগিট হইতে ৪-৫• মাইল দূরে তাহার সচিত বিশেষ প্রভেদ লক্ষিত হয় ; এমন কি উভয় স্থানের এমন অনেক লোক আছে যাহারা পরম্পরের ভাষা একেবারে বুঝিতে পারে না । যদিও এশিয়ার সমস্ত দেশেই এই প্রকার ভাষার প্রভেদ দেখা যায় এবং ভারতবর্ষের এক প্রদেশের ভাষা অন্য প্রদেশে বিদেশীয় ( Foreign ) বলয় বোধ হয়, এমন কি এক প্রদেশের এক জেলার ভাষা সেই প্রদেশের অন্ত জেলার ভাষা হইতে বহু পরিমাণে ভিন্ন বলয়া লক্ষিত হয়, কিন্তু গিলগিট অতি অল্প দূর ব্যবধানে কেপ ভাষার সম্প, পরিবর্তন দেখিতে পাওয়া আর এরূপ বোধ হয় কুত্ৰাপি দৃষ্ট হয় না। গিলগিট কয়েকটি নদী এবং নালা আছে, যাঙ্গ হইতে স্বর্ণ পাওয়া যায়। তন্মধ্যে সিন্ধু, গিলগিট ছন্জা ও বাগরোট এই চারিট নদীই প্রধান । বাগরোটের সোনা ভাল বলিয়া পরিচিত। স্বর্ণ যথেষ্ট্র পরিমাণে উৎপন্ন হয় না—কেহ ধেন লঙ্কা’ মনে না করেন । স্বর্ণ ধৌত করিবার জন্য কাশ্মীর দরবার হইতে লাইসেন্স দেওয়া হয় । গিলগিটীরা আপনাদিগের পরিধেয় বস্ত্র আপনারাষ্ট প্রস্তুত করিয়া থাকে। ইহার মেঘ এবং ছাগলোমে পটু, প্রভৃতি শীতের কাপড় তৈয়ার করে। গ্রীষ্মকালের বস্ত্রের জন্য এখানে কার্পাস তুলার চাষ হয়। তাতারা প্রথমে চরখায় স্বতা কাটিয় তাহার পর কাপড় তৈয়ার করে । আমাদের দেশের তত্ত্ববায়েরা যে প্রথায় কাপড় প্রস্তুত করিয়া থাকে, এখানেও প্রায় সেই প্রথায়ই কাপড় তৈয়ার হয়, তবে এখানে কাপড় বড়ই মোট (Rough) হয় । চিত্রল এবং ইয়াসিন প্রভৃতি কয়েকটি স্থানের পটু অপেক্ষাকৃত ভাল। গিলগিটাদের পোষাকে নূতনত্ব আছে। সাধারণতঃ হাটুর নীচে অৰ্দ্ধহস্ত পর্যন্ত লম্বিত একটী চিলা পায়জামা, গলা হইতে পা পৰ্য্যন্ত লম্ব একটা চোগা, এবং একটি টুপি ; ইহাই তাহদের পরিধেয় । পায়জামাটি প্রায়ই ঠাণ্ড! কাপড়ের (cottoon cloth) হইয়া থাকে। চোগা এবং টুপি পটু হয়, কিন্তু গ্রীষ্মকালে শীতের চোগার নমুনা অনুযায়ী ঠাও কাপড়ের চোগাও কেহ কেহ ব্যবহার করিয়া থাকে। চৌগাকে এখানে “মুক্কা” বলে । চোগার আস্তিন হাত অপেক্ষা প্রায় এক ফুট লম্বা হইয়া থাকে। কাজ কৰ্ম্ম প্রবাসী లిసి করিবার সময় লম্বা অংশটুকু গুটাইয়া রাখিতে হয় । চিএাল ইয়াসিন, হুনঞ্জ। প্রভৃতি স্থানে বেশ ভাল চোগা তৈয়ার হইয়া থাকে। এমন কি ইউরোপীয় এবং ভারতবর্ষীয় ভদ্রলোকদিগের মধ্যেও অনেকে এই চোগা শীতকালে প্রাতে ও সন্ধায় ব্যবহার করিয়া থাকেন। টুপিট এক বিচিত্র বস্তু। ইহাকে একটি বালিশের খোল বলিয়া লম হয় । পরিবার সময় নীচে ( lower end ) কষ্টতে গুটাইয়া গুটাইয়া কপালের চতুষ্পাশ্বে কাণের উপর এবং রগের নীচে দিয়া একটা মোটা দড়ীর স্থায় করিয় রাখিতে হয়। এই টুপিও কোন কোন স্থানে ভাল তৈয়ার হইয়া থাকে এবং ভদ্রলোকেরাও কেহ কেহ সখ করিয়া কখন কথন পরিয়া থাকেন । আজ কাল ইয়ারকন্দ এবং কাসগার হইতে রশিয়ার মানা রংএর ছিট কাপড়ের আমদানি হওয়াতে অপেক্ষাকৃত সঙ্গতিপয় অনেক গিলগিটা সেই সব কাপড় পরিপান করিয়া আপনাদিগকে গৌরবাঙ্গিত মনে করে। গিলগিটাদের পাড়কাকে পৰ্ব্ব বলে। কাচা চামড়ার মোজা তৈয়ার করিলে যেরূপ আকার হয়, পর্যুর আকারও তদুপ। অপেক্ষাকৃত মুত্র পকা ও তৈয়ার হইয়া থাকে। তাঙ্গ রাজার বা সঙ্গতিপর লোকের ব্যবহার করে । ‘পৰ্ব্ব, বরফের উপর চলিবার পক্ষে ভাল। ‘পৰ্ব্ব ছাড়া আর এক প্রকার পাত্নক এখানে প্রচলিত আছে । তাহাকে "খেউটা’ বলে । হঠা মারথোর’ ( এক প্রকার বন্ত ছাগ ) কিম্বা অন্ত কোন প্রকার ছাগ বা মেষের শুষ্ক র্কাচ চামড়ায় তৈয়ার হইয়া পাকে । ‘মারথোরের চামড়ায় যে “থেউটা’ তৈয়ার হয় তাহাই ভাল এবং মজবুত বলিয়া বিবেচিত হয়। প্রত্যেকটা প্রায় ১ গজ লম্বা ও এক ফুট চোড়া, এরূপ চারিটি চামড়া পায়ে জড়াইতে হয় ; এবং প্রায় তিন গজ লম্বা একটি চামড়ার স্থতা দিয়া উঠা পায়ের সঙ্গে জড়াইয়া বাধিলেই থেউট’ পর হইল। "থেউট দেখিতে অতি কদাকার,কিন্তু পাঠাড়ের উপর চড়িবার পক্ষে ইহা অতান্ত উপকারী এবং নিরাপদ । স্ত্রীলোকদিগের পোষাক একটা পায়জামা, একটা লম্বা কোৰ্ব, একটা টুপি এবং পায়ে পৰ্ব্ব, স্ত্রীলোকেরা রঙ্গীন কাপড় কিছু অধিক পছন্দ করে,এবং প্রায়ই রুশীয় ছিটে তাছাদের পোষাক তৈয়ার হয় । পায়জামাট প্রায় পঞ্জী স্ত্রীলোকদিগের পায়জামার নমুনায় তৈয়ার হয় । কোর্তাটা
পাতা:প্রবাসী (প্রথম ভাগ).djvu/৩৯৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।