পাতা:প্রবাসী (প্রথম ভাগ).djvu/৪২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম ও ৯ম সংখ্যা । ] .” বেগবান বলিয়া পঙ্কময়, আবৰ্ত্তসঙ্কল বলিয়া ভয়ঙ্কর, নিয়ত নিম্নগামী বলিয়া নীচসঙ্গদুষ্ট;— যেন বর্যাতরঙ্গতাড়িত পদ্মার প্রবল প্লাবন । সুকুমার সাহিত্যের সুকোমল বেলাভূমি সে প্রবল প্লাবন প্রতিহত করিতে অক্ষম হইয়া কোথায় যেন ভাসিয়া চলিয়া গিয়াছে ; চারিদিকে কেবল উক্ষ,খল অকুল জলরাশি সাগরাভিমুখে সবেগে প্রধাবিত। সকল বিষয়েই বাঙ্গালীর ক্ষমতার সীমা নিতান্ত সংকীর্ণ তুষ্টয়া পড়িতেছে । এসময়ে বাঙ্গালীর পক্ষে ক্ষমতার অপবায় করা শোভা পায় না । কবি যে সাহিত্যশ ক্রর অধিকারী হইয়াছেন, তাহ সুবিমল হাস্যরসের অবতারণায় সফল কাম হইতে পারিত ; কিন্তু সে সাফল্য লাভ করিতে ইলে আবিলতার পঙ্কপহুল হইতে দুরে দাড়াইতে হঠত। আমাদের জাতীয়জীবনে হাস্যরসের উপাদানের অভাব মাঠ : আমাদের সাহিত্যে তাতা দেদীপ্যমান ; কিন্তু সেগুলি বাছিয়া লইতে চইলে, ভিতরে প্রবেশ করিতে হয় । সেই সকল মূলস্থূত্র ধরিয়া বাঙ্গালী জাতি ও বাঙ্গলা সাষ্ঠিতাসেবকগণকে উপহাস করিতে পারিলে, কবির পরিশ্রম সার্থক হইত। তাঙ্গ হয়ত এরূপ ‘বিচুড়া হইত না ; কিন্তু কবিকে চিরজীবী করিতে পারিত। যাঙ্গ হইয়াছে,--- ইঙ্গতে সাময়িক কৌতূহল উত্তেজি ত হইবে ; বিশেষ কোন স্থায়ী ফল প্রস্তুত হইবে না । প্রাচীন আলংকারিকগণের গ্রন্থে দেপিতে পাওয়া যায়,-- শৃঙ্গার, রৌদ্র, বীর ও বীভৎস নামক রস চতুষ্টয় হইতে অন্যান্ত রস উৎপন্ন হইয়া থাকে। শুঙ্গাব হইতে হাস্ত, রৌদ্র হইতে করুণ, বীর হইতে অস্তুত এবং বীভৎস হইতে ভয়ানক ; যথা--- “ শৃঙ্গারাদ্ধি ভবেন্ধাস্যে রৌদ্রাচ্চ করুণে রস: | বীরাচ্চৈবান্ধুতোংপত্তি বীভৎসাচ্চ ভয়ানকঃ” । বঙ্গসাহিত্য এই পুরাতন নিয়মশৃঙ্খলে সংঘত থাকিতে অসম্মত হইয়া, সকল রস হইতেই হাস্যরসের উপাদান সংগ্ৰহ করিতে ব্যস্ত হইয়া উঠিয়াছে। সেই জন্ত বঙ্গসাহিত্যের হাস্যরসেও মুবিমল কলহাস্তের অভাব, তাহার হাস্ত কখন করুণ, কখন অদ্ভুত, কখন বা যথার্থহ ভয়ানক ! যাহাকে লক্ষ্য করিয়! হাস্তরসের অবতারণ করা হয়, তাহাকে হয় কাদিতে হয়, না হয় ভয়ে জড় সড় হইতে হয় ! লোকের প্রবাসী ●8○ যেমন ভিন্ন রুচি, কালেরও দেইরূপ ভিন্ন রুচি । একালের রুচিমাহাত্মা বন্ধুগাঞ্জে কাটা ফুটাইয়া দিয়া হান্তরসের অবতারণা করিতে হয়। “খিচুড়ীর" হাস্যরস সেই অভিনব রুচি প্রস্রবণ হইতেই প্রবাহিত হইয়াহে । তিল তণ্ডুল-চৈয়ঙ্গবীন-সংযোগে সেকালেব "কুণরায়” স্বাদে সে রভে মধুময় হইত ; একালের "খিচুড়ী" কেবল খিচুড়ী ! সুতরাং কাবোর নামকরণ সার্থক হই%াছে । "পিচু ছী" কবি গোস্বামিবংশাবতংস বারে দ্য ব্রাহ্মণ । তাহার কোন পুরুষেও কেহ পাচকের বাবধায়ে লিপ্ত থাকার ইতিহাস পাওয়া যায় না। সুতরাং আনাড়ির হাতে হাড়ি পড়িয়া খিচুড়াটা সুপক তইতে পারে নাই। মসলা যুতের অভাব ছিল না; কেবল হাতের দেণযে তলায় ধরিয়া গিয়াছে, আর আশে পাশে ও উপরে ভাল সুসিদ্ধ হইতে পারে নাই । সুরস-সংবদ্ধন কামনায় গোস্বাfমপাদ গোপনে যে একটু পলাধু ব্যবহার কবিয়াছিলেন, তাড়াও আস্ত রঙ্গিয়া গিয়াছে, বেমালম গলিস যায় নাই ! পথে ঘাটে এরূপ পিচুড়া উপাদেয় বলিয়াই গলাধঃকরণ করিতে হয় । কিন্তু গৃষ্ঠে বসিয়া নিমষ্টিত বন্ধু বান্ধবের পাতে পরিবেশন করিতে ভয় হয়, - পাছে কাহার ও বদহজম ঘটে । তথাপি এরূপ গ্রন্থের সমালোচনা আবশ্যক । বাঙ্গালী জাতি ৪ বাঙ্গল সা হত্য যে পথে চুটি৷ চলিছে, কৰি তাত পছনা করেন ন বলিয়া, তাঙ্গকে সুপথে আনিবার চেষ্টায় আঠারোপলক্ষ্যে বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণের আশায় “খিচুড়,” রন্ধনে ধৰ্দ্ধপরিকর হইয়াছিলেন । কিন্তু একে ছাড়িটি বিলক্ষণ বড়, তাড়াতে ধুয়ায় নয়নযুগল অএ সিক্ত,--সুতরা গোস্বামপাদ গলদঘৰ্ম্মকলেবরে তাড়াতাড়ি চাড়ি নামাইয় কোনরূপে ১২৮ পা ন ভোজনপাত্রে ১২৮ হাত তপ্ত পিচুড়ী ঢালিয়া দিয়া, আস্তাকুঁড়ে সরিয়া পড়িয়াছেন ; কাহাব ভাগো কি উঠিল, তৎপ্রতি দৃষ্টিপাত করবার অবসর হয় নাই ! ইহাতে কিন্তু হিতে বিপরীত ঘটবার আশঙ্কা হইয়াছে । যে সকল গণ্য মান্ত সাহিত্য-সেবকের উদ্দেতে এই খিচুড়াভোজের অনুষ্ঠান, তাহাদের মধ্যে অনেকে চটিয় লাল হইয়া কবির উদ্বেগু বিফল করিয়া দিতে পারেন। কবি বুঝিরাছেন, বুঝি নির্ভীক সমালোচনার অভাবেই বঙ্গসাহিত্য