পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কণর্তিক লাগিল। বিরক্তভাবে বলিল-“তোর শুধু খ্যাটের চিস্তা গোরা। বিয়ে না দিয়ে কাক যদি তোর একট। হোটেলে ওয়েটারের চাকরি করে দিভ ত • ” গোরাচাদ বলিল—“গনশা কি বলিস্—যাব একবার কাউকে কিছু না জানিয়ে ?” গনশা অন্যমনস্ক হইয়া কি যেন ভাবিতেছিল, বলিল— “চ-চচল না । সকলেই একজোটে বলিয়া উঠিল—“চল না, মানে ?” গনশা উত্তর করিল—“আম্মে তাহলে একবার দেপে আসি গোরার শ্বশুরবাড়ী ।” গোরাচাদ একেবারে উৎফুল্প হইয় উঠিল, গনশার হাতটা চাপিয়া ধরিয়া বলিল—“চল মাইরি ; আমার বন্ধু জানলে তারা • ” গনশা বলিল—“হঁ্য, তোর বন্ধু হয়ে গিয়ে বাইরের চালের বাত গুণি, আর তোর আপিমপোর শ্বশুরের বক্তার শুনি।" রাজেন প্রশ্ন করিল—“তবে ?” “ভাবছি চা-চ্চাকর সেজে গেলে কেমন হয় ।” ত্ৰিলোচন একটু অন্যমনস্ক ছিল ; বোধ হয় বিনা খবরে শ্বশুরবাড়ী যাওয়ার কথাটা লঙ্গয় মনে মনে আলোচনা করিতেছিল। আর সবাই উল্লসিতভাবে বলিয়া উঠিল— “গ্র্যাণ্ড হয়, উ ।” ঘেণখন বলিল—“যাবি ধে গোরা, বাড়ীতে কি বলবে ? দু-দিন থাকবে ত?.. তুষ্ট-ই বা কি বলবি ?" রাজেন বলিল—“গোরা বলবে—আমাদের কারুর জন্তে মেয়ে দেখতে গেণ্ডল কোথাও ---তোর শালীর বয়স কত রে গোরা ?” কে. গুপ্ত বলিল—“আর গণেশ বাবুর বললেই হবে চাকরি খুঁজছিলেন।” গনণা বিরক্ত হইয়া বলিল—“চা-চ্চাকরি কি হারান গাই-গরু মশাই যে তিন দিন ধরে দিন নেই রাত নেই খুজতে থাকবে ?...ব’লে দিলেই হবে একটা কিছু ; মী-স্মামাদের তো ঘুম হচ্ছে না গনশার ভাবনায় । সঙ্গে চাকর যাইতেছে, গোরাচাদের মনে একট। মস্ত, বর ও নফর tూళs লোভের উদ্রেক হইয়াছিল, ‘সন্ধ্য-বাজার"-এর নিকট পৌছিয়া সেটাকে আর চাপিয়া রাখিতে পারিল না ; বলিল—“যখন দু-জনেই যাচ্ছি গনৃশ, কিছু গলদাচিংড়ি, দার্জিলিঙের কপি, কড়াঙ্গস্থটি আর নৈনিতাল-আলু নিয়ে গেলে হ’ত না ! —আর কিছু মিষ্টি । মানে তোর খাবার না কষ্ট হয়, একটু পাড়াগ-গোছের জায়গা কি না। আমরা পৌছুবও সেই যার নাম আটট-—রাত হয়ে যাবে।" গনশ বলিল—“কিন্তু গাড়ীর আর মোটে আধঘণ্টাটাক দেরি ” যাহোক, বাজারটা একেবারে হাতের কাছে, কেনাই ঠিক হইল। আন্দাজের একটু বেশী সময়ই লাগিল । গোরাচাদ তরকারির ঝুড়িটা লইল, গম্শ। খাবারের গড়িটা। তাহার পর ক্ষিপ্রতার জন্য গম্শ যে-বাসটায় উঠিয়া বসিল, কতকটা ক্ষিপ্রতার অভাবেও, কতকটা ঝুড়িটার জন্যও গোরাচাদ সেটা ধরিতে পারিল না। দুইটি ‘ষ্টপ, পার হইয়া যাওয়ার পর গনশা সেটা টের পাইল । ফিরিয়া আসিতে, গোরাচাদকে খুজিয়া বাহির করিতে এবং গায়ের ঝাল মিটাঙ্গতে আরও খানিকটা সময় গেল । ষ্টেশনে প্রায় হাপাহঁতে গপাষ্টতে প্লাটফরমে ঢুকিয়া গনশ জিজ্ঞাসা করিল —“ডা-ডানদিকেরট না বঁাদিকেরট র্য। গোরে ?” পাশাপাশি দুইটা গাড়ী দাড়াইয়। । ঢুকিবার সময় প্লাটফরমের নম্বর দেখিতে তুলিয়া গিয়াছে ; সন্দেহ আছে বুঝিলে গনশা আবার পাছে ক্ষিপ্ত হইয় উঠে সেই ভয়ে গোরাচাদ পরিণাম চিন্তা না করিয়াই বলিল—“না, বাদিকেরট। ’ গাড়ীতে ভিড় ছিল একটু। একেবারে ভিতরের দিকে এক কোণে গিয়া দুই জনে একটু জায়গা পাইল । গোরাচাদ 娜 চুপড়িটা উঠাষ্টয়া বাঙ্কের এক কোণে রাখিল ; গনশার হাত হইতে হাড়িটা লইয়া চুপড়ির মধ্যে বসাইয়া দিল । ক'দিন বৃষ্টি হয় নাঙ্গ, বেশ গরম পড়িয়াছে ; তায় দৌড়দৌড়ি, তাহার উপর ভিড় । গনশ। ঠেলিয়া ঠলিয়া আসিয়৷ প্লাটফরমের উপর পায়চারি করিতে লাগিল। একটি বৃদ্ধ ধাত্রী বলিল—“ফাষ্টে বেল হয়ে গিয়েছে বাপু ।” গণেশ দোরটার কাছে আসিয়া দাড়াইল । বৃদ্ধ প্রশ্ন করিল—“যাওয়া হবে কনে ?”