পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাত্তিক গোরাচাদ একটু লজ্জিতভাবে ধমক দিয়া বলিল—“ষা: ; আহা, উনি যেন দেখেন নি, তবে যে বললি সেদিন—গোরা, তিলুর বৌয়ের চেয়ে তোর বৌয়ের রংটা..” গনশা আর বিরক্তি চাপিতে পারিল না—“তোর শালীর কথা জিগ্যেস করছি, না, শ্রেফ বেী—বে। করে •••* গোরাচাঁদ অপ্রতিভ হইয়া বলিল—“তাই বল। আমি এদিকে ভেবে সারা হচ্ছি গণেশ জেনেশুনেও ও-কথা জিগ্যেস করছে কেন । শালী হচ্ছে যাকে বলে- - ই্যা সুন্দরীই--.* “লেখাপড়া কেমন ? ক-কথা হচ্ছে কেউ জিজ্ঞেস করলে আবার খুঁটিয়ে বলতে হবে কিনা। নইলে বলবে— খুব খোজ রাখেন ত মশাই!” “ছাই লেখাপড়া, ওর চেয়ে বেী অনেক পড়েছে ; কিন্তু মুখের কাছে দাড়াও দিকিন শালীর ” গনশা হাসিয়া বলিল—“সত্যি নাকি ?” মৃদু হাঙ্গের সঙ্গে সঙ্গে মাথা জুলাইয়া কি চিন্তা করিল খানিকটা, তাহার পরে ধীরে ধীরে ত্রিলোচনের বিয়ের সেই হিন্দী গানট ধরিল—“মুহ পঙ্কজ সোঙরি, সোঙরি---” শেওড়াফুলিতে পৌছিতে গোরাচাদ বলিল—“তোর খিদে পায় নি গনশা ?—সে চুবড়িটা বোধ হয় এতক্ষণ চন্দননগরে—তোর কি আন্দাজ হয় ?” গনশা বলিল—“তেষ্টা পাচ্ছে বটে, একটা লেমনেড হ’লে इ'ङ ।” গোরাচাদ বলিল—“তুই তবে তাই খাঁ, ঐ ভেণ্ডারটা আসছে ; আমি দেখি নেমে যদি খাবারটাবার পাওয়া যায় কিছু।” গনশা ধমক দিয়া উঠিল—“গ-গ-গর্দভ কোথাকার ; আর একটুখানি সহি ক’রে থাকবে তা নয়, পথে ষ-তা খেয়ে পেট ভরাচ্ছে ।” কথাটা গোরাচাদের খুব সমীচীন বলিয়া বোধ হইল। প্রকাশ করিয়া বলিলও—ঠিক বলেছিস গনশা, পাড়াগায়ের রাত হ’লেও জামাইমানুষ পৌঁছেছে, যত দূর সাধ্য করবেই তার8–একটা মস্ত আহলাদের কথা ত। কিছু না হলেও পুকুরের মাছ আর গরুর দুধটা ত আছেই। আমিও তাহলে > y ৰর ও নফর వెs একটা লেমনেডই খাই এখন ; খিদেটা জলে চাপা রইল, তাতে কোন ক্ষতি হবে না, কি বলিস !” লেমনেড ছিল না, দু-জনে দুটা সোডাই পান করিল। গনশা একটা ঢেকুর তুলিয়া বলিল—“চা-চাপা কি ! খিদে একেবারে শান দেওয়া রইল। --মাছ যদি তেমন ওঠে ত একবার কালিয়া রোধে দেখাই গোরে। পাড়াগায়ে কিন্তু আবার চাকরের রান্না খাবে না যে । গনশা উল্লসিত হইয়া বলিল—“রান্নাঘরের দোরগোড়ায় বসে তুই বাৎলে দে না কেন শালাজকে,—সেই রাধে কিনা। এক ঢিলে দুই পার্থী মারা হবে, গল্পও করতে থাকবি আবার শালী, বেী সবাই থাকবে•••তারা ভাববে জামাইবাবুর চাকর, ওটার কাছে আবার লজ্জা । চাকরবাবু যে এদিকে শিবপুরের ডাকশাইটে গণেশরাম !-- * দুই জনেই সজোরে হাসিয়া উঠিল। সিজুরের আর দেরি নাই। গাড়ীর এদিকটায় তাহারা মাত্র দুই জনে বসিয়া । গনশ উঠিয়া জামাকাপড় ছাড়িয়া একটা ময়লা ধুতি ও একটা ঘুষ্টি-দেওয়া ফরসা পিরান পরিল, মাথার টেরিট মুছিয়া ফেলিয়৷ কানে একটা বিড়ী গুজিয়া দিল । জামাকাপড় এবং ক্যাম্বিসের জুতা-জোড়াট গোরাচাদের ছোট হটকেসটায় গুছাইয়া ফেলিল ; তাহার পর হঠাৎ চোখ দুইটা ট্যার করিয়া লইয়া গোরাচাদের দিকে চাহিয়া ডাকিয়া উঠিল—“দ' ঠ। উর!” দুই জনে আবার একচোট হাসিয়া উঠিল। \9 রাত প্রায় সাড়ে আটটার সময় গাড়ী সিজুরে পৌছিল। গল্প করিতে করিতে ষ্টেশনের বাহির হইয়া দু-জনে চলিতে আরম্ভ করিল। বৌয়ের কথা শালী-শালাজের কথা, খাওয়ার কথা যখন বেশ জমিয়া উঠিয়াছে, গোরাচাদ বলিল—“হ্যা, আসল কথাটাই ভুলে যাচ্ছি যে ! এদিকে এসেও পড়েছি অনেকটা ;–তোকে কি ব’লে ডাকব র্যা শ্বশুরবাড়ীতে ? মানে বেটা আবার তোর নাম জানে किनां ”