পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবাসী SN98N9 গিয়াছে। দুই জনেই পরম্পরের মুখের দিকে চাহিয়৷ শ্বশুর কি স্থির করে সেই প্রত্যাশায় একটু চুপ করিয়া রহিল। আরও খানিক ক্ষণ তামাক টানিয়া নিধিরামের দিকে হকাটা বাড়াইয়া শ্বশুর বলিলেন—“ভাবিয়ে তুললে যে !— উপোস ক’রে থাকবেন ?” নিধিরাম কলিকাটা পাক দিয়া ছক হইতে খুলিতে খুলিতে বলিল—“রাম, সে কি হয় ?” “উপায় ?” নিধিরাম পরম ভক্তিভরে কলিকাটা মাথায় ঠেকাইয়৷ বলিল—“বাবা আছেন।” গনশা গোরাচাদের পানে ঠোঁটটা কুঞ্চিত করিয়া চাহিয়া মাথা নাড়িল—অর্থাৎ আর কোন আশা নাই । “আমি বলি—” বলিয়া গোরাচাদ কি বলিতে যাইতেছিল, নিধিরাম হাসিয়া বলিল—“তুমি যা বলবে বুঝতেই পারছি দা’ঠাকুর,—খবর দিয়ে আসতে পার নি বলে আর খুব রাত হয়ে গেছে বলে পথে—শেওড়াফুলিতে খেয়ে এসেছ—এই ত?--“শুনছেন জামাইবাবুর কথা কৰ্ত্তা ?” নেশাটা চটিয়া যাইতেছে, জামাইয়ের হাঙ্গামা ন৷ মিটাইলে অব্যাহতি নাই ; বৃদ্ধ মিটমিটি করিয়া হাসিয়া বলিলেন—“দ্যুৎ, সে তুই-আমি করতাম বলে কি ও ছেলেমামুষেরাও করবে ?—না, সেটা উচিত হ’ত ?” —অর্থাৎ সেইটাই উচিত হইত, এবং যদি না হইয়া থাকে ত কাগুজ্ঞানহীন ছেলেমানুষ বলিয়াই হয় নাই । গনশা গোরাচাদ বিমূঢ় ভাবে পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করিল। গোরাচাদ কি উত্তর দিতে যাইতেছিল ; পেটুক মানুষ, পাছে বেমানান কিছু বলিয়া বসে সেই ভয়ে গনশা তাড়াতাড়ি বলিয়া দিল—“আঙ্কে, বললে বিশ্বাস যাবেন না,—দা’ঠাউর সত্যই খেয়ে এসেছেন।” গোরাচাদ গনশার দিকে কটমট করিয়া চাহিয়া, মরিয়া হইয়া আবার কি একটা বলিতে যাইতেছিল, একটা ঢেকুর ঠেলিয়া বাহির হইল। তবু যথাসম্ভব সামলাইয়া লইয় বলিল—“আজ্ঞে হ্যা, একটা সোডা - * গনশা তাহার দিকে একটা ভ্ৰকুট করিয়া, মুখ ঘুরাইয়া লইয়া বলিল—“তি-ভিন গও রসগোল্লা, পোয়াটাক কচুরি সিঙ্গাড়া মিলিয়ে পোখানেক মিহিদান--” গোরাচাদ হতাশভাবে চাহিয়া ছিল, তাহার মুখের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখিয়া গনশা বলিল—“শেষে আমি বললাম—দা’ঠাউর ; একটা সোডা খেয়ে নাও ; তার ত সেখানে খাবার জন্যে জেদাজেদি করবেনই • ” নিধিরাম বলিল—“করব না জেদাজেদি ?—ঘরের জামাই এলেন, বাঃ ” গনশ ক্রমাগত চোখ-টেপানি দিতেছে। আর কোনও আশা নাই দেখিয়া গোরাচাদ নিরুৎসাহ কণ্ঠে যতটা সম্ভব জোর দিয়া বলিল—“দুর্থীরামের কথা শুনে আমি বললাম —হাজার জিদ করলেও আমি আর খেতে পারব না। শেষকালে কি মারা যাব ?”—বলিয়া চেষ্টা করিয়া আর একটা ঢেকুর তুলিল । শ্বশুর নিধিরামের নিকট হইতে কলিকাটা লইয় বলিল—“আমার কিন্তু বাপু বিশ্বাস হচ্ছে না। নিধে কি বলিস্!” হাঙ্গাম-পোহানোর ভয়ে নিধিরাম অনেকটা সামলাইয়া আনিয়াছে, আবার র্কাচিয়া যায় দেখিয়া তাড়াতাড়ি বলিল— “অবিশ্বাসের ত হেতু দেখছি না, কৰ্ত্তামশাই ; লোতুন জামাই মিছে কথা বলবেন কি ?” “তাই ত!” বলিয়৷ বৃদ্ধ আরও খানিকট চিন্তা করিলেন, তাহার পর উৎসাহভরে বলিয়া উঠিলেন—“আমি বলি কি নিধে, জামাইকে না-হয় নেমস্তন্ন-বাড়ী নিয়ে ষা না কেন, ততক্ষণ অামাতে আর---এটির নাম কি ?” গোরাচাদ উৎসাহভরে বলিল—“ক্ষুদিরাম।” “আমাতে আর ক্ষুদিরামে বসে বসে গল্প করি না হয় । --বেহাই বেহান-ঠাকরুণ আছেন কেমন ক্ষুদিরাম ?” “বেশ আছেন”—বলিয়া গনশা তাড়াতাড়ি বলিল— “আঙ্কে, আমি ত জী-জান থাকতে দা"ঠাকুরকে একলা ছেড়ে দিতে পারব না ;–এই সাপখোপের দেশ ! কৰ্ত্তাবাবু বললেন—দুর্থীরাম ম-মলমাস—ছেলেটা একলা যাচ্ছে, সৰ্ব্বদা সঙ্গে সঙ্গে থাকবি—-খ-খ-খবরদার- - -” গোরাচাদ হাসিবার চেষ্টা করিয়া বলিল—“নিধু খুব বিচক্ষণ লোক গন • দুর্থীরাম, ও আবার ঝাড়ফুকও জানে। তোর কোন ভাবনা নেই ; নিশ্চিন্দি হয়ে বাবার সঙ্গে গল্প কর । কথা হচ্ছে খিদে ত একেবারেই নেই, কিন্তু শাশুড়ী