পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSలి প্রবাসী ১৩৪৩ ৷ গোরাচাদ গনশার দিকে একটু বিমূঢ়ভাবে চাহিয়া থাকিয়া একেবারে গলা নামাইয়া বলিল—“চুরি ?” গনশ উপরে নীচে মাথা নাড়িল । গোরাচণদ ঝোলটানার শব্দ করিয়া বলিল—“কেই বা দেখছে ! --আর এস চমৎকার খইচুর এখানকার গনশ ; সন্দেশ রসগোল্ল ফেলে- - -” "ভাড়ার-ঘর কোনটে জানিস্ ?” গোরাচাদ আবার ভাড়ার-ঘর চিনিবে না—তাও শ্বশুরবাড়ীর ! বলিল—“উঠোনের ওদিকে রান্নাঘরের পাশে • • ই্য রে গনশ, আমার ত একটা-আধটায় হবে না ; ক’মে গেলে ওরা সব টের পেয়ে যাবে না ত যে জামাই রাত্তিরে উঠে এই কাগুটি---" “গ+গ-গাছে কাঠাল গোফে তেল ! আগে চল আলো নিয়ে, যদি তালা দেওয়া থাকে ত আবার—” গোরাচাদের বুকটা যেন ধ্বসিয়া গেল ; ভীত, নিরাশ দৃষ্টিতে বলিল—“তাহলে ?” “চল না, ইডিয়ট " বলিয়া গল্শ তাহাকে একটা ঠেলা দিল। বালিশের তলা হইতে দেশলাইট ञश्व्न । প্রদীপ লইয়া সন্তপণে অগ্রসর হইতে হইতে গোরাচাদ বলিয়া উঠিল—“তোরই মতলবের ওপর আমার এক মতলব এসে গেল গনৃশ,—রান্নাম্বরটাও অমনি একবার দেখে নিলে হয় না ? কপাল যেমন তাতে যে কিছু পাব:- তবু ধর যদি ওবেলার ভাজা মাছটা-আশটা ” গনশা বলিল—“হ্যা চল ; কখন কথন জল দিয়ে পাস্ত করেও রাখে মেয়েরা—খুব তোয়াজ বোঝে কিনা,—নেমস্তন্ন খেয়ে শরীরটা গরম হবে * উঠান পার হইয়া রকে উঠিয়া গোরাচাদ উৎফুল্ল ভাবে বলিল—“তালা দেওয়া নেই রে গনণা ! ভগবান বোধ হয় এবার মুখ তুলে চাইলেন।” ভগবান সত্যিই মুখ তুলিয়া চাহিয়াছেন। ঘরে প্রবেশ করিতেই দুই জনে দেখিল—সামনে একটা শিকেয় টাঙান একটা বেশ বড় সাইজের হাড়ি, তাহার উপর একটা জামবাটি, তাহার উপর একটা কড়া ; পাশে আর একটা শিকেয় একটা পিতলের কড়া । একটা বিড়াল উনানের পাশে বসিয়া ছিল, ইহাদের দেখিয়া লাফাইয়া জানালায় উঠিয়া বসিল । গোরাচীদ তাড়াতাড়ি গিয়া পিতলের কড়াটায় আঙুল ডুবাইয়া বাহির করিয়া লইল, উল্লাসে চোখ দুইটা বড় বড় করিয়া বলিল—“দুধ রে গল্শ-মিল্ক ?” গনশা বলিল—“নাম।” চঞ্চল হাতে নামাইতে গিয়া একটু সরক্ষদ্ধ দুধ ছলকিয়া গোরাচাদের কপালের উপরটায় পড়িয়া গেল ! বঁ-হাতে সরটি মুছিয়া মুখে দিয়া গোরাচাদ বলিল—“বেশ মোট সর রে । দুটো বাটি পাওয়া যেত ” গনশা বলিল—“আগে হাড়ির শিকেট দেখে নে। . এই রে তোর কপালে কড়ার কালি লেগে গেল যে ” সৌন্দর্ঘ্যের দিকে গোরাচাদের খেয়াল ছিল না। “ঠিক বলেছিস্ —দুধটা শেষ পাতের জিনিষ কি না”—বলিয়া কপালটা ডান হাতে মুছিয়া অন্য শিকাটার দিকে অগ্রসর হইল । গনশা বলিল—“আমি ধরছি শিকেটা ; তুই একটএকটা ক'রে পাড়। আবার জামায় হাতটা মুছলি বুঝি ?—এ, ভূত হয়ে গেলি যে ” গনশা শিকের একটা দড়ি ধরিল। গোরাচাদ উপরের কড়াটায় আঙুল ডুবাইয়া বলিল—“ঝোল, গনপা!” আঙুলগুলা চালাইয়া উত্তেজিত ভাবে বলিল—“মাছের ঝোল |” আর তর সহিতেছিল না, গোটাকতক মাছ বাহির করিয়া মুখে ফেলিয়া আনন্দের চোটে গনশার হাতটা ধরিয়া ফেলিল, বলিল—“পুটিমাছের টক্‌ মাইরি!” গনশার উচু-করা মুখে জল আসিয়াছিল, একটা ঢোক গিলিয়া বলিল—“তাহলে হাড়িতে নির্থাৎ পাস্ত আছে ; জামবাটিটা দেখ ত আমার হাত ধরতে গেলি কেন ?—দেখ, ত—আমায়ও বাদর বানিয়ে ছাড়লি । বিড়ালটা জানালার উপর ডাকিল—“মিউ।” গোরাচাদ বলিল—“তাড়া ত বেটীকে ৷ -ভাগীদার জুটেছেন।” গনশা বলিল—“ন, না, আমি এক মতলব ঠাউরেছি,—