পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sk= প্রবাসী SNー●Nご একটু দূরে বনের মধ্যে থেকে আওয়াজ আসিল— “এজ্ঞে !” “শিগগির এল—সড়কিটা হাতে ক’রে—দু-শালা ঢুকেছে।” “এলাম। সটকায় না যেন, একসঙ্গে গাথব | রতনের মা, তোর সেই কাটারিটা নিয়ে বেরো ।” গনশা আর গোরাচাদ ঘর ছাড়িয়া উঠানের মাঝামাঝি জড়সড় হইয়া দাড়াইয়াছিল, গোরাচাদ, একসঙ্গে গাথার কথায় একটু সরিয়া দাড়াইল । আওয়াজ হইল—“নিধে ” “আমি এই খিড়কিতে—বাঘাকে নিয়ে।” গনশা চারি দিকে চাহিয়া নিরাশ ভাবে বলিল—“কি করা যায় ?---” তাহার পর হঠাৎ গোরাচাদের পায়ের নিকট হইতে একটা আন্ধা-ইট কুড়াইয়া লইয়া বলিল—“হয়েছে—চল খিড়কির দিকে ; তুইও পিড়েটা তুলে নে ৷” গোরাচাদ শঙ্কিত ভাবে বলিল—“খুন করে পালাবি নাকি—নিধেকে ?” গনশা বলিল—“আর বাঘাকে নয়ত কি খুখে খুন হবে--সামস্তর সড়কিতে *-কোনটে খিড়কি ?—এগে।” কি হইত বলা যায় না, কিন্তু এই সময় কুকুরটা হঠাৎ নিধিরামের নিকট হইতে উদ্ধশ্বাসে কি একটা তাড়া করিয়া রান্নাঘরের পিছনে গেল এবং সেখানে থাবা গাড়িয়া বসিয়া উচুমুখে প্রবল সোরগোল লাগাষ্টয়া দিল। শিবু একটু লক্ষ্য করিয়া বলিল—“আবার রান্নাঘরে ঢুকেছে ; সব এই দিকটা চলে এসো-—এখনও আছে শালারা ; নিধে আয় দিকিন, সামস্ততে আর তোতে পাচিল ডিঙিয়ে ওদিকে পড় -- বাঘা ঠিক চোখে-চোখে রাখবি ঐ ভাবে।” বাঘা রাখিতেও ছিল,—কালো বিড়ালের মত শক্ৰ আর তাহার নাই । বাঘাহীন খিড়কিতে নিধিরামের পা থক্ থক্ করিয়া কাপিতেছিল, সে তাড়াতাড়ি সরিয়া আসিয়া সবিক্রমে বলিল—“হ্যা, ওঠ ত সামন্ত খুড়ে ; দাও সড়কিটা ধ’রে থাকি তত ক্ষণ • ” গনশা ও গোরাচাদ গিয়া খিড়কি ঘেষিয়া দাড়াইয়া ছিল। যেই বুঝিল নিধিরাম সরিয়া গিয়াছে, দোর খুলিয়া আস্তে আস্তে বাহির হইল। গনশা খুব সস্তপণে শিকলটা তুলিয়া দিল । খুব অন্ধকার ঝোপঝাপ । গোরাচাদ অগ্রসর হইল ; হাতটা পিছনে করিয়া গনশার জামা ধরিয়া খুব চাপা গলায় বলিল—“আয়, একটু ঘুরে গিয়ে সদর রাস্তা।--বাঘ সরে নি, ওরা বাড়ী নিয়েই থাকবে একটু।” এত বিপদেও বাড়ীটার দিকে চাহিয়া তাহার একটা দীর্ঘশ্বাস পড়িল । বলিল—“একটা রাতও কাটল না।” গনশ কালসিটের ব্যাপারটা স্মরণ করিয়া শুধু একবার প্রশ্ন করিল—“পানাপুকুর নেই ত?” 韃 韃 釁 শিবপুরে ষ্টীমার-জেটির রেলিঙে হেলান দিয়া মুখোমুখি হইয়া দাড়াইয়া—রাজেন, ত্রিলোচন, কে. গুপ্ত, গনশা আর গোরাচাদ। রাজেন প্রশ্ন করিল—“তার পর, গোরের শ্বশুরবাড়ী কেমন লাগল গনশা ?” ত্রিলোচন প্রশ্ন করিল—“এক রাত্তির থেকেই চলে এলি যে বড় ?” গোরাচাদের মনটা অপ্রসন্নই ছিল, একটু ব্যঙ্গের স্বরে উত্তর করিল—“শ্বশুরবাড়ী এক রাত্তিরের বেশী থাকলে মান থাকে নাকি ?” গনশা ফুটা না কি একটা দাতে কাটিতেছিল ; গঙ্গার দিকে চাহিয়া বলিল—“আসতে কি দি-দিতে চায় ?— অনে-ক্কষ্টে • ” আর শেষ করিতে পারিল না। কথাটা বাড়ী ঘেরাও করিয়া আটকানোর সঙ্গে এমন মিলিয়া গেল যে আপনিই যেন তাহার গলার মাঝপথে বাধিয়া গেল ।