পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SBS9 প্রবাসী NNGONළං করিয়াছেন বলিয়, তিনি কোন বয়সেই উদ্ধৃস্থল ছিলেন এমন মনে করা উচিত নয়—মনে করিলে ভুল হইবে এবং তাহার প্রতি অবিচার করা হইবে । এরূপ ভুল যে কেহ করেন না, এমন নয়। এইরূপ ভুল করিয়া এক যুবক র্তাহাকে চিঠি লেখায় তিনি তাহার চিঠি হইতে “হরিজন” কাগজে আবশুক অংশ উদ্ধৃত করিয়া শাস্ত ভাবে উত্তর দিয়ছেন – “Whatever over-indulgence there was with me, it was strictly restricted to my wife....... I awoke to the folly of indulgence for the sake of it even when I was twenty-three years old, and decided upon total Brahmacharya in 1899, i. e., when I was thirty years old.” অধিকাংশ লোক রাষ্ট্রনীতির দিক দিয়াই মহাত্মা গান্ধীর জীবন আলোচনা বা তাহাতে দৃষ্টিনিক্ষেপ করেন। ভারতবর্ষের রাষ্ট্রনীতিক্ষেত্রে তিনি নূতন কি করিয়াছেন ? কংগ্রেসের উপর তাহার প্রভাব এবং দেশের রাষ্ট্রনৈতিক জীবনের উপর তাহার প্রভাব সৰ্ব্বাভিভাবী হইবার পূৰ্ব্বে, কোন কোন মননশীল ভারতীয় ভারতবর্ষের রাষ্ট্রীয় অধিকার লাভের উপায় সম্বন্ধে যেরূপ মতই পোষণ করিয়া থাকুন, ভারতীয় রাষ্ট্রনৈতিক কৰ্ম্মীদের ও শিক্ষিত ব্যক্তিদের মত এই ছিল, যে, ইংরেজদের স্বায়বুদ্ধি জাগাইয়৷ তুলিতে পারিলে ও তাহীদের দয়া হইলে তাহারা ভারতবর্ষকে কিছু পৌর ও রাষ্ট্রীয় অধিকার দিবে। আরও একটা মত ছিল । তাহ কিন্তু ছাপায় অসঙ্কোচে প্রকাশ পাইত ন । তাহা এই, যে, যুদ্ধ করিয়া ভারতবর্ষকে স্বাধীন হইতে হইবে । গান্ধীজি এই উভয় মতের কোনটাই সমর্থন না করিয়া বলিলেন, স্বাবলম্বন দ্বারা, আত্মনির্ভর দ্বারা ভারতবর্ষকে স্বাধীন হইতে হইবে, কিন্তু তাহ সশস্ত্র যুদ্ধের দ্বারা নহে—আত্মিক শক্তির (soul forceএর ) প্রয়োগ দ্বারা, অহিংস অসহযোগ ও প্রতিরোধ দ্বার, অপরকে আঘাত না-করিয়া নিজেই সৰ্ব্ববিধ দুঃখ বরণ ও সঙ্ক করিয়া অথচ অষ্ঠায় আদেশের পদানত না হইয়া, স্বরাজলাভ করিতে হইবে। এই নীতি জয়যুক্ত হয় নাই, সত্য কথা। কিন্তু ইহার প্রচারে ভারতবর্ষের অগণিত লোকের মনে আত্মশক্তিতে বিশ্বাস জন্সিয়াছে—আশার উন্ত্ৰেক হইয়াছে, ভয় ভাণ্ডিয়াছে, সাহসের আবির্ভাব হইয়াছে। অনেক পুরুষ ও নারী ষে স্বয়ং অহিংস থাকিয়া সকল ছক-স্বত্ব পৰ্য্যন্ত—সৰ করিতে প্রস্তুত, তাহ আচরণ দ্বারা দেখাইয়াছে। অগণিত লোকের এই মানসিক পরিবর্তন মহাত্মা গান্ধীর কৃতিত্বের সাক্ষ্য দেয় । এ পর্য্যস্ত যত পরাধীন জাতি স্বাধীন হইয়াছে, তাহার যুদ্ধ করিয়া স্বাধীন হইয়াছে, ইহা মোটের উপর সত্য । স্বাধীনতা রক্ষা বা লাভের জন্য যুদ্ধ করা বৈধ, এই মত সকল দেশেই প্রচলিত আছে। কিন্তু ইহাও সত্য, যে, যুদ্ধ যে উদ্দেশ্রেই করা হউক, তাহাতে হিংসা নিষ্ঠুরতা ছল কপটতা আছে ও থাকিবে ; স্বতরাং মানবপ্রেমের সহিত তাহার সামঞ্জস্য নাই, তাহা সৰ্ব্বোচ্চ ধৰ্ম্ম নহে, নীতিসঙ্গত নহে। এই জন্ত নানা দেশে নানা মননশীল ব্যক্তি স্বাধীনতা রক্ষা বা লাভের এমন একটি উপায় অনুসন্ধান করিরাছেন যাহা ধৰ্ম্মনীতিসঙ্গত এবং যাহা যুদ্ধের পরিবর্তে অবলম্বিত হইলে ফলপ্রদ হইবে। আমেরিকার দার্শনিক উইলিয়ম জেম্স্ ইহাকে “মর্যাল সবষ্টিটিউট ফর ওয়ার” বলিয়াছেন। গান্ধীজি এবং তাহার মতাবলম্বীরা মনে করেন, অহিংস এবং, আবশ্যক হুইলে, মরণাস্ত, প্রতিরোধ সেই উপায় উচ্চতম নৈতিক ও ধাৰ্ম্মিক আদর্শের সহিত যাহার সামঞ্জস্য আছে এবং যাহা ফলপ্ৰদ। গান্ধীজি ও তাহার সহকৰ্ম্মীরা প্রথম চেষ্টায় অভাঙ্গিত ফল পান নাই বটে ; কিন্তু উপায়টির যে ধর্শ্বের ও মানবপ্রেমের সহিত বিরোধ নাই, তাহা স্বীকাৰ্য্য। বলা বাহুল্য, যে, মহাত্মা গান্ধী পৃথিবীর সর্বত্র স্থায়ী শাস্তির প্রতিষ্ঠা চান । এ বিষয়ে তিনি জগতের অন্ত শাস্তিকামীদের সহচর ও সমকক্ষ । গান্ধীজি ভারতবর্ষে পূর্ণস্বরাজ চান । পূর্ণস্বরাজের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ ও পূর্ণস্বরাজের রূপ নির্দেশ তাহার রাষ্ট্রনৈতিক আকাশে উদয়ের পূর্বেও বঙ্গে হইয়াছিল। ঐঅরবিন্দ ঘোষ প্রমুখ ব্যক্তিগণ পূর্ণ-স্বাধীনতার আদর্শ প্রচার করিয়াছিলেন । কিন্তু তাহ লাভের জন্ত গান্ধীজি যেরূপ উপায় নির্দেশ করিয়াছেন, বঙ্গীয় নেতারা সেরূপ উপায় নির্দেশ করেন নাই । অহিংস ভাবে আইনলঙ্ঘন করিতে হুইবে, গান্ধীজির