পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক এই মতের সহিত আরও কতকগুলি মতের অচ্ছেদ্য সম্বন্ধ আছে। যেমন, সরকারী আদালতের সাহায্য না লওয়া, সরকারী চাকুরি না-কর, সরকারী আইন অনুসারে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত ডিষ্ট্রক্ট বোর্ড মিউনিসিপালিটী প্রভৃতি যে-সব কাজ করে সেই সব কাজ নিজেরাই করা, সরকারী বা সরকারের অনুমোদিত স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত শিক্ষার পরিবর্তে নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়িয়া তোলা ইত্যাদি। ইহার মধ্যে যাহা গঠনমূলক' (constructive ) তাহ রবীন্দ্রনাথ গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলনের আগে বিস্তারিত ভাবে বিবৃত করিয়াছিলেন । কেবল শিক্ষার দিকে রবীন্দ্রনাথ ত এইরূপ চেষ্টা করিয়াছিলেনই ( এবং তাহা আংশিক ভাবে এখনও চলিতেছে ), অন্যেরাও বঙ্গে করিয়াছিলেন। তাহার ফলে এখন যাদবপুরে এঞ্জিনীয়ারিং কলেজ চলিতেছে। “কারাবরণ করিতে হয় করিব, দেহ শৃঙ্খলিত হয় হইবে, কিন্তু অন্যায় সহ করিব না, অথচ অহিংস থাকিব, আঘাতের বিনিময়ে আঘাত করিব না,” এইরূপ আদর্শ রবীন্দ্রনাথের স্বস্ট ধনঞ্জয় বৈরাগীর চরিত্রে অনেক দিন হইতে রহিয়াছে । ইংরেজীতে একটা কথা wfo, Everything is fair in love and war; wifts &lto Utofta s go উদ্দেশ্বসিদ্ধির জন্য সব কিছু করা চলে, কিছুই অবৈধ নহে। তেমনই আরও একটা এইরূপ ভ্রান্ত মত পৃথিবীর সব দেশের প্রায় সব রাজনৈতিকদের মধ্যে চলিত আছে, যে, রাষ্ট্রনীতিক্ষেত্রে মিথ্যাভাষণ, মিথ্যাস্বচন, ছল চাতুরী, প্রতিজ্ঞাভদ, বিশ্বাসঘাতকত—কাৰ্য্যসিদ্ধির জন্য এ সবই করা চলে। “শঠে শাঠ্যম, সমাচরেং" উক্তি এইরূপ মত হইতে উদ্ভূত। গান্ধীজি বলিলেন, বলিয়াছেন, বলেন,—ন, রাষ্ট্রনীতিক্ষেত্রেও সত্যের অনুসরণ করিতে হইবে, ধৰ্ম্মনীতির { ethicsএর ) উচ্চতম আদর্শ রক্ষা করিতে হইবে, অকপট ইতে হইবে, হিংসাম্বেষের পরিবর্তে মানবপ্রেমকে প্রতিষ্ঠিত করিতে হইবে, লোভ ত্যাগ করিতে হইবে। তনি রাষ্ট্রনীতিকে ধৰ্ম্মামুগত করিতে চাহিয়াছেন । ধৰ্ম্ম বিটি সচরাচর ভিন্ন ভিন্ন ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানসমূহের ই মতসমূহের সমষ্টি বুঝাইতে ব্যবহৃত হয়। তিনি সে অর্থে রাষ্ট্রনীতিকে ধর্শ্বাস্থগত করিতে চান নাই। ধর্শের शिबिथ «थमछा-१iांकी ऊझरुर्छौ $3° সারবস্তু যে আধ্যাত্মিকতা, সাত্ত্বিকতা ও স্থনীতি, রাষ্ট্রনীতিকে তাঁহারই অতুগত করিতে চাহিয়াছেন । গান্ধীজির আন্দোলনের পরোক্ষ প্রভাবে, নারীদের অবরোধ যে-যে প্রদেশে ছিল ও আছে, সেখানে উহ! শিথিল হইয়াছে। সামাজিক বিষয়ে তিনি বাল্যবিবাহবিরোধী, অসবর্ণ বিবাহের অবিরোধী ও অবিখ্যক মত তাহার সমর্থক, এবং বিধবা-বিবাহেরও সমর্থক । অস্পৃশ্যতায় বিশ্বাস থাকিলে ও তদনুযায়ী আচরণ থাকিলে হিন্দুত্ব ও হিন্দু সমাজ টিকিবে না, তাহার এই বিশ্বাস ও উক্তি সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত । তিনি বর্ণাশ্রম ধৰ্ম্ম মানেন, কিন্তু প্রচলিত আকারের জাতিভেদ মানেন না । বর্ণাশ্রম ত এখন নাই, পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হইবার আশাও নাই। স্বতরাং গান্ধীজির বর্ণাশ্রম ধৰ্ম্মে বিশ্বাস ও জাতিভেদে অবিশ্বাস—এই উভয়ের মধ্যে স্বক্ষ প্রভেদ, থাকিলে, বুঝিবার চেষ্ট না করিলেও চলে । ব্রাহ্মসমাজ অনেক আগে হইতে জাতিভেদে, স্বতরাং অস্পশুতায়, অবিশ্বাসী। চরখা ও খাদি সম্বন্ধে মহাত্মা গান্ধী যাহা বলেন, তাহ সকল দেশের ও কালের জঙ্ক আবশ্যক ন হইলেও, ভারতবর্ষের গ্রাম অঞ্চলে তাহার খুব প্রয়োজন ও ফলোপধায়কতা আছে। ইহা অনেকের ঘরে বসিয়া উপার্জনের পথ খুলিয়া দিয়াছে। খন্দরের ব্যবহারে মানুষের চালচলন সাদাসিধা ও অনাড়ম্বর হয় । ইহা ধনী ও নিধনকে বাহত সমশ্রেণীস্থ করে। ধনী মহিলারা ইহা ব্যবহার করিলে দরিদ্র মহিলাদিগকে পূজাপাৰ্ব্বণে উৎসবে বিবাহ-সভায় যাইতে সঙ্কোচ বোধ করিতে হয় না । ইংরেজী শিক্ষার প্রচলনে এবং নানা বিজাতীয় পরিচ্ছদ ও বিলাসত্রব্যের প্রাচুর্ভাবে আমাদের দেশে একটা নূতন রকম জাতিভেদ আসিয়াছে। তাহ ভারতীয় মহাজাতিগঠনের একটা প্রধান বাধা । আগেকার মহাপণ্ডিত সংস্কৃতের অধ্যাপক ও নিরক্ষর চাষ যতটা হৃষ্ঠতার সহিত পরম্পরের সঙ্গে মিশিতে পারিতেন, এখনকার ইংরেজী-জানা হালফ্যাশনের পরিচ্ছদ পরিহিত মানুষ তেমন করিয়৷ তাহাদের নিরক্ষর বা বাংলানবীস স্বদেশবাসীদের সহিত মিশিতে পারেন না । অন্ততঃ পরিচ্ছদে সব শ্রেণীর লোক এক রকম হইলে শেষোক্ত ব্যক্তিদের