পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

खञत्यक्ताङ्गवत्। চোখ কপালে উঠিয়া যায়। এ হেন মানুষের কাছে আধুনিক ধৰ্ম্ম ব্যাখ্যা করিয়া কোনও লাভ নাই, কারণ আধুনিক জিনিষ মাত্রেরই এই দোষ যে তাহা ব্যয়সাপেক্ষ । সরল, তরল এবং বিমলা তিনজনেরই অতি-বালিকাবয়সে বিবাহ হইয়াছিল। এমন কি বিমলা একটু বেশী কালে ছিল বলিয়া তাহার বাবা-মা ন-বৎসর পূরিতে-নী-পূরিতে তাহাকে গৌরীদান করিয়া নিশ্চিন্তু হইয়াছিলেন। বেশী বয়স হইয়া গেলে এ-মেয়ে আবার কেমন দাড়াইবে তাহ কে জানে, সকাল সকাল পার করিয়া দেওয়াই ভাল। এখন গোলগাল মোটাসোটা আছে, একরকম পাচজনের সামনে বাহির করা যায়। বলা বাহুল্য, পুত্রদের জন্তও কৰ্ত্ত-গৃহিণী এইরকম কনেই খুজিতেছিলেন। ছেলে যত বড়ই হউক, মেয়ে বারো বৎসরের বেশী বয়সের হইবে না, ইহাই ছিল তাহাদের পণ । ঐ দেখিতে দেখিতে ডাগরটি হইয়া উঠিবে বিয়ের জল গায়ে পড়িলেই, তাহা হইলেই আর ছেলেদের পাশে অসাজস্ত দেখাইবে না। ছেলেরাও যে দেখিতে দেখিতে বাৰ্দ্ধক্যের দিকে আরও খানিক অগ্রসর হইয়া যাইবে, তাহ আর র্তাগরা ভাবিতে রাজী ছিলেন না। ধাড়ী মেয়ে আনিয়া মোটে বাগ মানানো যায় না, ইহা গৃহিণী বহুবার স্বচক্ষে দেখিয়াছিলেন। তাহারা সৰ্ব্বদাই বাপের বাড়ীর দিকে বেশী টানে, ছেলেকে নিজের পিতামাতার বিরুদ্ধে চলিতে প্ররোচনা দেয়, এবং স্বামীর আত্মীয়-স্বজনকে কেবলমাত্র স্বামীর আত্মীয়-স্বজনই ভাবে । খাল কাটিয়া এমন কুমীর ঢাকিয়া আনার তিনি পক্ষপাতী ছিলেন না। কিন্তু দুই ছেলেই বিবাহে নারাজ। গণপতির বিবাহ করিতে আপত্তি নাই যদি বউ তাহার পছন্দমত হয়, কিন্তু সে-কথা বাপ-মায়ের কাছে তুলিতে সাহস হয় না। অতএব বিবাহ পরে করিবে বলিয়া সে ক্রমাগত পিছন হাটিতে লাগিল। রমাপতির কোনও রকম বিবাহই পছন্দ ছিল না, সে তাই মা-বোনের কাছে তারস্বরে আপত্তি জানাইতে লাগিল। বড় ভাইয়ের বিবাহ না হইলে ছোট জনের হইতে পারে না, কাজেই তখনকার মত রমাপতির উপর খুব বেশী চাপ পড়িল না। কৰ্ত্ত যদুপতি যদি আরও কিছুকাল টিকিয়া যাইতেন, তাহা হইলে দুই ছেলেকেই وی-سس۹2 কৃপণের স্বর্গ SSNరి কানে ধরিয়া সংসারে ঢুকাইয়া যাইতেন, তাহ বলাই বাহুল্য। কিন্তু কিঞ্চিৎ অসময়ে তিনি চলিয়া যাওয়াতে গণপতি এবং রমাপতির স্বাধীনতার পথে আর কোনও অন্তরায় রহিল নী, দুজনেই ইফে ছাড়িয়া বঁচিল । বাপের প্রয়োজন তাহাদের বহুদিন চুকিয়া গিয়াছিল, তাহার জোর করিয়া বাচিয় থাকাটা কেহই বিশেষ ভাল চক্ষে দেখিত না । গণপতি এখন ইচ্ছামত চলিতে-ফিরিতে পারিবে, এবং রমাপতি হাতে টাক। পাইয়৷ সেই টাকা সাধ্যমত বাড়াইয়া সিন্ধুক ভৰ্ত্তি করিতে পারিবে। বাপের বিষয়-আশয় নগদ টাকা, কোথায় কি আছে সবই তাহার নখদর্পণে ছিল। তিনি ষে টাকা খাটাইবার কোনও ব্যবস্থাই করেন না, ইহা রমাপতির মোটেই ভাল লাগিত না । তাহা ছাড়া বাপের নানা রকম অপব্যয়ও ছিল, তাহারও রমাপতি সমর্থন করিত না । তিনি দুঃস্থ আত্মীয়-স্বজনকে সাহায্য করিতেন, তীর্থে যাইতেন, এবং পূজাপাৰ্ব্বণ করিতেন। ইহার কোনও একটারও প্রয়োজনীয়তা রমাপতি স্বীকার করিত না । কতকুণ্ডলা অলস লোককে বসিয়া খাওয়াইয়া কি লাভ ? ইহাত আলস্তের প্রশ্রয় দেওয়া মাত্র। একটা দেশ আর একটার চেয়ে পবিত্র যে কি করিয়া হয়, তাহাও রমাপতি ভাবিয়া পাইত না । মাটি বা জ্বল বিশ্লেষণ করিয়া কোনও শ্রেষ্ঠতার নিদর্শন ত পাওয়া যায় নাই, তবে অনৰ্থক পয়সা খরচ করিয়া ছুটাছুটি কেন ? আজিকাল বারোয়ারি বা সাৰ্ব্বজনীন পূজা প্রতি পাড়ায় হয়, তাহাদের নিকট হইতে চাদ আদায় করিতেও কেহ ছাড়ে না, তবে আবার খরচ করিয়া বাড়ীতে এ হাঙ্গাম করা কেন ? তাহার ভাগের টাকা এইভাবে নয়-ছয় করিয়া নষ্ট করায়, সে পিতার প্রতি অভ্যস্ত অসন্তুষ্ট ছিল। শ্রাদ্ধ-শাস্তি ঘটা করিয়াই হইল, রমাপতির আপত্তি সত্ত্বেও। বাড়ীর সবকটা মানুষ একদিকে টানিলে, একলা রমাপতি কি করিয়া ঠেকায় ? আর শ্রাদ্ধের ব্যাপারে বেশী প্রতিবাদ করাটা ভালও দেখায় না । কিন্তু পরদিনই সে কোমর বাধিয়া কাজে লাগিয়া গেল। গণপতির কাছে গিয়া বলিল, “দেখ দাদা, আমাদের দুজনের মোটে মতে মেলে না, আমাদের আলাদা আলাদা থাকাই ভাল।”