পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুন্দর কেশব মন্দির-গাত্রের কাঞ্চকার্য্য জৈনধৰ্ম্মের প্রতি বিদ্বেষভাব রাজার মনে জাগ্ৰত করিবার তিনি প্রয়াস পাইলেন । রাজাকে বলিলেন, জৈন শ্রমণগণ আপনাকে অবজ্ঞা করেন । আপনি দেশের রাজা, কিন্তু শ্রমণগণের অস্পৃশ্য। সত্যই কি তাই ? দেশের রাজা, ধৰ্ম্মের রক্ষক, তিনি অস্পৃশ্য ! একদিন পরীক্ষ হইল। রাণীর কথাই সত্য, শ্রমণগণ রাজার স্পৃষ্ট ভোজ্য দ্রব্য গ্রহণ করিলেন না। শ্রমণগণ বলিলেন—কোন প্রকার অঙ্গহানি র্যাহার হইয়াছে, তাহার স্পর্শে ভোজ্যবস্তু অশুচি হয়, শ্রমণগণের তাহা গ্রহণ করিতে নাই—জৈনধর্মের অতুশাসনে তাহা নিষিদ্ধ। রাজা অঙ্গহীন, সমরক্ষেত্রে অস্ত্রাঘাতে র্তাহার এক অঙ্গুলি ছিল্প হইয়াছে, স্বতরাং— রাজা ক্রুদ্ধ হইলেন। দেশের ও ধর্মের রক্ষার জন্ত, শরণাগত আৰ্ত্তজনের সাহায্যের জন্য, রাজ্য-বিস্তারের জন্য রণতরঙ্গে ঝাপ দিতে হয়, শক্র করে অস্ত্রের আঘাত—সে ত বীরত্বের পুরস্কার, তাহার জন্য ঘৃণা ? হিন্দুগণ ত কখনও এরূপ করেন না, ক্ষত্রিয়দেহে অস্ত্ৰলেখায় বীরের মধ্যাদা বুদ্ধি পায়। রাজা জৈনধৰ্ম্ম ত্যাগ করিলেন। জৈনগণ যাহাই বলুন না কেন, সকলে এ-কাহিনী বিশ্বাস করেন না। অনেকে বলেন যে, জৈন শ্রমণগণের প্রতি ক্রোধ বশত নহে, বৈষ্ণবধর্মের মাহাষ্ম্যে মুগ্ধ হইয়াই রাজা জৈনধৰ্ম্ম ত্যাগ করেন, আর ইহার মূলে ছিল শ্রীরামানুজাচায্যের প্রভাব । রাজার কন্যা অসুস্থ হইলেন । লোকে বলিল যে, তিনি ভূতাশ্রিত হইয়াছেন । কন্যার আরোগ্যের জন্য তিনি জৈন শ্ৰেমণগণকে আহবান করিলেন । কিন্তু তাহীদের সকল চেষ্ট ব্যর্থ হইল। তখন রাজা শ্রীরামানুজাচার্য্যের শরণাপন্ন হইলেন । তিনি রাজকুমারীকে সম্পূর্ণ নিরাময় করিলেন । ক্লভজ্ঞ রাজার উপর শ্রীরামানুজাচায্যের প্রভাবের এই প্রথম রেখাপাত । তারপর হষ্টল জৈন শ্রমণগণের সহিত শ্রীরামাতুজাচার্য্যের ধৰ্ম্মবিযয়ে এক মহা বিতর্ক-সমর। প্রকাশু সভায় অষ্টাদশ দিবস এই বিতর্ক চলিল। অবশেষে শ্রীরামানুজাচার্ষ্য হইলেন জয়ী, শ্রমণগণ হইলেন পরাজিত । ইহার পরই রাজা বিত্তিদেব শ্রীরামানুজাচার্য্যদেবকে গুরুত্বে বরণ করিয়া বৈষ্ণবধৰ্ম্ম গ্রহণ করিলেন ।