পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথার মুষ্টিভিক্ষা সংগ্রহের এই দীন প্রার্থনা যে কবিচিত্তকে ম্পর্শ করেছে, তার পরিচয় পাই অনেক জায়গায়— নামাবলীর খাত তোমার বচন জড়ো করে, ' স্বাক্ষরিতের কোন পরিচয় থাকে তাদের মাঝে । অলস হাওয়ায় অশোক ফুলের পাপড়ি ধূলায় ঝরে, তাই কুড়িয়ে লাগাও কেন সাজি ভরার কাজে । শুধু অক্ষর ডোরে নাম কি রাখিবি ধ'রে, নামজাদা হব খাতার পাতায়, কে রবে সে আশা করে ? বাজে কথার মুষ্টিদানের লাগি কেন সবার দ্বারে বেড়াও মাগি । লেখা আসে দলে দলে, বসে তার মেলা কেহ আসে, কেহ যায়, কেহ করে খেলা । আখরেতে বাসা বাধে ভাষা দিয়ে গাথা। যে লেখে সে কোথা থাকে পড়ে থাকে খাতা । বাজে কথার ঝুলি, যতই কেন ভৰ্ত্তি কর ধূলিতে হয় ধূলি । রেখে দেবার নয় যা তারে রাখো তা নিয়ে মিছে আমারে কেন ডাকো । খাতার পাতে আমার নাম ধরে বঁাধিতে চাও ক্ষীণ স্মরণ-ডোরে । এই খাতাখানা নামের ভিড়ের মাঝে পাতে অঞ্জলি অক্ষর ভিক্ষার এ নিরর্থক সঞ্চয়নের কাজে জমা করিতেছে কেন এত ধিক্কার ! নানা লোকের নানা নামের নানা লেখার মধ্যে আমার লেখার কবর দিলেম হুই লাইনের পন্তে । খাতার পাতায় নামের বিষম ভিড়, সেথা কোথা পাবো নামের নিভৃত নীড় । হেমত্তের শুষ্কপাত বসন্তে কি দেয়না উড়ায়ে ঝরে-পড়া বাক্য যত রাখিবে কি খাতায় কুড়ায়ে ? ব্যর্থ আবর্জনার তরে লোভ রাখিতে নাই তুচ্ছ যাহা তাহার ভিড়ে সত্য না পায় ঠাই । কথা কুড়িয়ে খাতার পাতা ভরা সত্য নিয়ে এ শুধু খেলা করা । নিতেছ কুড়িয়ে যা-তা’, কথার আবর্জনায় কেবলি ভরিয়ে তুলিছ খাতা, এ কেমন খেলা হোলো, বুদ্বুদগুলো জড়ো করে করে ফেনা উচু করে তোলে। জীবনপথের তরুণ যাত্রী যখন এসে কাছে দাড়ায়, তখন কবির মনে পড়ে যায়, আজ তিনি জীবনের সায়াহ্নে উপনীত, এই মাটির বাসার ভিৎ তার ভাঙছে, সেতারে যে স্থর ধরেছিলেন, আজ তা থেমেছে শমে এসে—