পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিন্তু স্নচাদের ঐ কথায় এবং তার ষাওয়া দেখিয়া পুনৰ্ব্বস্থর চোখে বেশী করিয়া জল আসিল—তাহার মনে হইল, সবাই যা জানে তাহারই কৃত্রিম পুনরুক্তি করিয়া লোকটা যেন ধাপ্পা দিয়া গেল । পিতার মৃত্যুর পর শ্রাদ্ধ ছেলেকে করিতেই হইবে। পুনৰ্ব্বস্ব পিতৃশ্ৰাদ্ধের আয়োজন, এবং তদণ্ডে ব্রাহ্মণ এবং জাতি ও বন্ধু ভোজনের আয়োজন করিয়াছে—আয়োজন অল্পস্বল্প ; বড় জোর দেড়-শ লোক। তাঁহাতেই তাহাকে ঋণ করিতে হইল । নিমন্ত্রিতের ফর্দ প্রস্তুত হইয়াছে—ব্রাহ্মণের মারফৎ নিমন্ত্রণ প্রেরিতও হইয়াছে ঃ পুনৰ্ব্বস্তু সোমের পিতৃশ্ৰাদ্ধে ব্রাহ্মণ, জ্ঞাতি ও বন্ধু ভোজনে আপনার নিমন্ত্রণ রহিল—সাড়ে ন’টায় ভোজ—দয়া করিয়া ইত্যাদি। বলা বাহুল্য, ডাক্তার স্বচাদ অধিকারীকে নিমন্ত্রণ করা হইয়াছে ; ব্রাহ্মণ এবং স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি হিসাবে নিমন্ত্রণ র্তার প্রাপ্য । সাড়ে ন’টায় ভোজ— সাড়ে ন’টা কি গরমের দিনে বেশী রাত্রি ? তা নয়। কিন্তু তার বেশী দেরী হইলে নিমন্ত্রিত সজ্জনবর্গ বিরক্ত হইতে পারেন—তাহারা বিরক্ত হইলে বিষম লজ্জার কারণ হইবে। পুনৰ্ব্বস্ব তাই তাড়াতাড়ি করিতেছে। --নিমন্ত্ৰিতগণ শুভাগমন করিয়া বসিবার স্থান এবং আসনের অভাবে পাছে দাড়াইয়া থাকেন এই ভয়ে সে সন্ধ্যা না-লাগিতেই বৈঠকখানা ঝাড়িয়া মুছিয়া পরিচ্ছন্ন কবিল ; তার পর লম্বচওড়া সতরঞ্চি এবং তার উপর লম্ব চওড়া চাদর বিছাইয়া দিল, এবং তার উপর কয়েকটা তাকিয়া-বালিশ রাখিয়া দিল—আলস্তভরে গা ছাড়িয়া দিয়া নিমন্ত্রিতগণ আরাম উপভোগ করিবেন—কারণ, নিমন্ত্রিত অতিথি নারায়ণতুল্য পূজ্য । সাড়ে ন’টা বাজিতে এখনও ঢের দেরী—পুনৰ্ব্বস্থর দেয়াল-ঘড়িতে এখন মাত্র সাতটা পয়ত্রিশ। এইবার আলোর ব্যবস্থা— - চাহিয়া-আনা স্ববৃহৎ টেবিল ল্যাম্পট জালিয়া দিয়৷ পুনৰ্ব্বস্ব নিঃশ্বাস ফেলিয়া বাচিল—অনেক আগেই এদিক্কার এখন লুচি-তরকারির দিকৃটা এক বার তদারক করা দরকার—ভাবিয়া সেই উদ্দেশ্রে ঘরের বাহির হইতে চৌকাঠের বাহিরে পা দিয়াই পুনৰ্ব্বস্ব চমৎকৃত হইয়া গেল---স্বচাদ অধিকারী তার সেই নাতনীটির হাত ধরিয়া সম্মুখেই দাড়াইয়৷ আছেন—মূৰ্ত্তি খুব সৌম্য—খুকু বেশ সাজিয়া আসিয়াছে ; দেখিয়াই পুনৰ্ব্বন্ধ অকস্মাৎ চীৎকার করিয়া যেন সম্মুখে বিস্তৃত স্বখের সাগরে ঝাপাইয়া পড়িল, অর্থাৎ বলিল,—আক্ষন আক্ষন ৷ খুকি, কেমন আছ ? খুকী কথা কহিল না— পুনৰ্ব্বক্ষই পুনৰ্ব্বার বলিল,—ভেতরে এসে বস্কন ডাক্তার বাৰু। আজ কি সৌভাগ্য আমার ! অতিশয় স্ব সহৃদয়তার সহিত হাসিয়া স্বচাদ সৌভাগ্যের কথার প্রতিবাদ করিলেন ; বলিলেন,—সৌভাগ্য কি হে ! এ যে কৰ্ত্তব্যের ফাদ ; ধরা দিতেই হবে । পরস্পরের ডাকে যে লৌকিকতা রক্ষা না করে তাকে কি অসামাজিক বলা হবে না ? কৰ্ত্তব্যের দায়ই হচ্ছে সবার উপর অনিবাৰ্য্য । কি যে সবার উপর অনিবাৰ্য্য নয় তাহা ধারণা করিতে না পারিয়াও পুনৰ্ব্বস্ব কৃতাৰ্থ হইয়া বলিল,—আজ্ঞে হ্যা । স্বচাদ বলিলেন,—ভদ্রলোকের নেমস্তয় আর আদালতের সমন একই রকম—হাজির আমায় হতেই হবে। নাআসাটাই অস্বাভাবিক -একটু আগেই এলাম। এসেই নেহাৎ খেতে বসা ভাল দেখায় না r-দের আছে বুঝি r পুনৰ্ব্বস্ব বলিল,—অল্পই । ওরে, পাখা দে ; ব্রাহ্মণের হকো আন ; আর ভেতর থেকে পান নিয়ে আয় এক ডিস। 辛