পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

--অজ্ঞহYশ্নছী ........ eBBS BB BB BBSBBSuS S SSలో 9 উপাসনার রহস্ত স্বগম করিবার চেষ্টা করিয়াছেন। এক বংশের একজনের একখানি গ্ৰন্থই হয়ত প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছে। অন্য গ্রন্থ অপ্রসিদ্ধ অবস্থায় অপ্রকাশিত পুথির আকারে কোন প্রসিদ্ধ পুস্তকাগারে বা ব্যক্তিবিশেষের গৃহকোণুে লোকচক্ষুর অন্তরালে অস্তিত্ব বজায় রাখিতেছে। এই জাতীয় গ্রন্থের মধ্যে শারদাতিলক নামক প্রসিদ্ধ গ্রন্থের রচয়িতা লক্ষ্মণ দেশিকের স্বল্প পরিচিত তারাপ্রদীপ ও শারদাতিলকের প্রখ্যাত টীকাকার রাঘব ভট্টের কালীতত্ত্ব এবং তাহার পৌত্র বৈদ্যনাথ কৃত ভুবনেশীকল্পলতা প্রভৃতির নাম করা যাইতে পারে। বাংলার বাহিরে তন্ত্রের প্রচলন প্রতিপাদন করাই বতর্মান প্রবন্ধের উদ্দেশু—তাই ইচ্ছা করিয়াই এস্থলে বাংলা দেশের কোন গ্রন্থের নাম করা হইল না । কেবল এই কথা বলা দরকার যে প্রাচীন কাল হইতে বতমান কাল পর্যন্ত বহু তান্ত্রিক গ্রন্থ বাংলা দেশে প্রচলিত রহিয়াছে এবং বতমানে অপ্রচলিত গ্রন্থের সংখ্যাও কম নহে । এই সকল গ্রন্থ ও বিশেষ করিয়া নানা তান্ত্রিক কুত্যের ছোট ছোট পদ্ধতির পুথি হইতে বিভিন্ন প্রদেশের তান্ত্রিক আচারের বৈশিষ্ট্য ও বৈচিত্র্য প্রকটিত হয়। বাংলার তান্ত্রিক সমাজে বা তন্ত্র-গ্রন্থে যে সমস্ত অনুষ্ঠান ও দেবতার উপাসনার প্রচলন বা উল্লেখ আছে তাহা অপেক্ষা অনেক বেশী অনুষ্ঠান ও বেশী দেবতার নিয়মিত উপাসনার উল্লেখ বাংলার বাহিরের তন্ত্র-গ্রন্থে অনেক স্থানে পাওয়া যায়। বাংলায় কেবল কালী, তারা, জগদ্ধাত্রী, শিব ও কৃষ্ণ প্রভৃতি কয়েকটি মাত্র দেবতার তান্ত্রিক উপাসক দেখিতে পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে বাংলার বাহিরে পুরুষ ও স্ত্রী দেবতার বহু বিভিন্ন রূপের উপাসকের উল্লেখ আছে। কোনও বিশেষ অভীষ্টসিদ্ধির জন্য দেবতা-বিশেষের সাময়িক পূজা অবশু বাংলাদেশেও অপ্রচলিত বা নিযিদ্ধ নহে। তবে, বগলামুখী, চণ্ডী, গায়ত্রী, রাজী, কুঞ্জিকা, বটুকভৈরব, গণেশ, পরমহংস, কাশ্মীরে প্রচলিত সারিকা প্রভৃতি দেবতার নিয়মিত উপাসনার বিধান—এই সকল দেবতার মন্ত্রে দীক্ষিত হইয়া ইষ্টদেবতারূপে ইহাদিগকে পূজা করিবার প্রথা বাংলা দেশে নাই, বাংলার বাহিরে আছে—এশিয়াটিক সোসাইট, মাদ্রাজ ওরিয়েটল লাইব্রেরী প্রভৃতি স্বানের তান্ত্রিক পুথি আলোচনা ه داسبہ ۵(تا করিলে একথা স্পষ্টই প্রতীয়মান হয়। বামাচারের বীভৎস অঙ্গুষ্ঠান এবং মারণ, বশীকরণ প্রভৃতি আপাততঃ ঘৃণ্য কৃত্যও কেবল বাংলাদেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নহে—বাংলার বাহিরেও এ সম্বন্ধে বহু গ্রন্থ বিভিন্ন সময়ে রচিত হইয়াছে। বামাচারের মত খণ্ডন করিয়া কাশীনাথ নামক এক প্রসিদ্ধ তান্ত্রিক এক গ্রন্থ রচনা করিয়াছিলেন—তাহার প্রতিবাদকল্পে বামাচারসিদ্ধাস্তসংগ্ৰহ নাম দিয়া একখানি গ্রন্থও রচিত হইয়াছিল। এই গ্রন্থের একখানি পুথি মান্দ্রাজ ওরিয়েণ্টল লাইব্রেরীতে আছে। পঞ্চ মকার সম্পর্কে, বিশেষ করিয়া মদ্যপ্রয়োগ ও মদ্যের পাত্রবন্দনা সম্বন্ধে, বিস্তৃত বিধান অবঙ্গীয় একাধিক পুথির মধ্যে যেমন পাওয়া যায়, বাংলা দেশে তেমন দেখা যায় কি না সন্দেহ। বস্তুত, তন্ত্ৰ-শাস্ত্রের উৎপত্তি যেখানেই হউক না কেন কয়েক শত বৎসর যাবৎ ইহা সমগ্র ভারতবর্ষে প্রচারিত রহিয়াছে। বতর্মানে হিন্দুধৰ্ম বলিতে যাহা বুঝায় তান্ত্রিক অনুষ্ঠান তাহার মধ্যে প্রধান স্থান অধিকার করে। বৈদিক ক্রিয়াকলাপ একেবারে বিলুপ্ত না হইলেও বিরলপ্রচার হইয়া আসিয়াছে সন্দেহ নাই। পৌরাণিক ও তান্ত্রিক ব্ৰতপূজাই আজকাল অনেক স্থলে তাহার স্থান অধিকার করিয়াছে। ফলে ব্রাহ্মণাদি ত্রিবর্ণের বৈদিক উপনয়ন প্রভৃতি সংস্কারের স্থায় তান্ত্রিক দীক্ষার ও তান্ত্রিক সন্ধ্যাদির ব্যবস্থা আছে। এই দীক্ষা গ্রহণের পূর্বে কোনরূপ তান্ত্রিক উপাসনায় কাহারও অধিকার হয় না। আবার দীক্ষা গ্রহণ না করাও সঙ্গত বলিয়া বিবেচিত হয় না। কেবল ব্রাহ্মণাদি উচ্চ বর্ণের লোকই যে তান্ত্রিক দীক্ষা গ্রহণে অধিকারী তাহ নহে, আচণ্ডাল পুরুষ ও স্ত্রী সকলেরই ইহাতে অধিকার আছে—এবং তথাকথিত নীচ বর্ণের মধ্যেও কেহ কেহ এই দীক্ষা গ্রহণ করিয়া ব্রাহ্মণাদির দ্যায় নিত্য সন্ধ্যা পূজা প্রভৃতি করিয়া থাকেন। সারা ভারতবর্ষে এই এক নিয়ম। তবে কে কোন দেবতার মন্ত্রে দীক্ষিত, কে কোন দেবতার উপাসক তাহা প্রকাশ করিবার বিধান তন্ত্ৰ-শাস্ত্রে নাই। সম্প্রদায়ের লোক ও ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ ছাড়া আর সকলেরই নিকট ইহা অজ্ঞাত। তবে মোটামুটি ভাবে আমরা কাহাকেও শৈব, কাহাকেও বৈষ্ণব, কাহাকেও শাক্ত বলিয়া জানি। ইহার কেহই কোন প্রদেশবিশেষে সীমাবদ্ধ নহেন—সারা ভারতবর্ষে