পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

劉 ত্ৰিবেণী শ্ৰী জীবনময় রায় পূৰ্ব্ব পরিচয় ধনী জমিদার শচীন্দ্রনাথ প্রয়াগে ত্রিবেণীর কুম্ভমেলার তার সুন্দরী পত্নী কমলা ও শিশুপুত্রকে হারিয়ে বহু অনুসন্ধানের পর হতাশভগ্নচিত্তে ইউরোপে বেড়াতে যায়। লণ্ডনে পৌঁছেই জরে বেহুলাংশ হয়ে পড়ে। লণ্ডলে পালিত পিতৃহীন চাকুরীজীবী পার্ববর্তী অক্লান্ত সেবায় তাকে স্বস্থ করে এবং বিবাহিত না জেনে তাকে ভালবাসে। পরে শচীন্দ্রের অনুরোধে পাৰ্ব্বতী ভারতবর্ষে ফিরে কমলার স্মৃতিকল্পে এক নারী-প্রতিষ্ঠান স্থাপিত করে। প্রতিষ্ঠানের নাম কমলাপুরী। এদিকে বৎসরের পর বৎসর নারীপ্রতিষ্ঠানের চক্রে আবর্তিত কাৰ্য্যপরম্পরায় পাকবর্তীঃ মন এক এক সময় শ্রান্ত হয়ে পড়ে, তবু তার অন্তর্নিহিত প্রেমের মোহে শচীন্দ্রের এই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে সে দূরে যেতে পারে না। শচীন্ত্রের অন্তরে কমলার স্মৃতি ক্রমে নিম্প্রভ হয়ে আসে, তবু স্ত্রীর প্রতি একনিষ্ঠতায় অভ্যস্ত তার চিত্ত পাৰ্ব্বতীয় প্রত্যক্ষ জীবন্ত প্রেমের প্রভাবকে জোর করে অস্বীকার করে অথচ পাৰ্ব্বতীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধার সুত্রে তার আকর্ষণ বেড়ে চলে। এই দ্বন্দের আন্দোলনে তার চিত্ত দোলায়মান । প্রয়াগ থেকে মাতাল উপেন্দ্রনাথ কমলাকে ফাকি দিয়ে কলকাতায় এনে তার বাড়ীতে বন্ধ করে এবং অত্যাচারে একদা পাশের বাড়ীতে লন্দলাল ও তার স্ত্রী মালতীর আশ্রয়ে ছুটে গিয়ে পড়ে । কঠিন পীড়ায় সমস্ত নামের স্মৃতি তার মন থেকে মুছে যায়। নন্দ কমলের রূপে আকৃষ্ট । কমলা এই দুৰ্দ্ধৈব থেকে মালতী ও নিজেকে বাচাবার জন্তে এক হাসপাতালে নাসের কাজ শিখতে যায় । সেখানে ডাক্তার নিখিলনাথের সহানুভূতি ও সাহায্য লাভ করে। এদিকে স্নেহময়ী সরল মালতী কমলার পুত্র অজয়কে তার নিঃসন্তান মাতৃহদয়ের সব স্নেহটুকু উজাড় করে ভালবেসেছে- এ বাড়ীতে কমলাকে নাম দেওয়া হয়েছে জ্যোৎস্না । নিখিলনাখ জনহিতব্ৰতী। একদা বিপ্লবী মেয়ে সীমার আহবানে ীিরামপুরে গিয়ে তার পূর্ব নায়ক সত্যবানকে এক পোড়ো বাড়ীতে মৃতকল্প অবস্থায় দেখে । প্রেথম দর্শনেই মেয়েটিকে তার অসাধারণ বলে মনে হয় । সত্যবানের মুগে পুলিসের গুলিতে তাদের দলের সকলের মৃত্যু, নিজে আহত অবস্থায় সীমার সাহায্যে গ্রাম থেকে গ্রামাপ্তরে, বনে জঙ্গলে, পরিত্যক্ত ফুটরে পালিয়ে বেড়ানোর ইতিহাস, সীমার বীরত্ব এবং দেশপ্রীতির কথা শুনে এবং নিজের চোখে তার শ্ৰান্তিহীন একনিষ্ঠত দেখে তার প্রতি অনুরক্ত হয় । বিপ্লবের আগুনে এতগুলি মহামূল্য প্রাণকে বিসৰ্জ্জল দেওয়ায় মৃত্যুকালে অনুতপ্ত সত্যবান সীমাকে এই আগুন থেকে বাচাবার জন্তে fनधिणनांषट्क रुरण । লন্দলাল হাসপাতালে জাষ্ট্ৰীয় হিসাবে কমলার সঙ্গে প্রায়ই দেখা করতে যায় এবং তার বিষ্কৃতচিত্তের আক্ৰোশে একদা লিখিলনাথ সম্বন্ধে جھ مسس جاتا কমলাকে অপমান করে এবং তারই সঙ্কোচে কিছুদিন তাকে এড়িয়ে চলতে १ोणक ॥ মালতীর বহু সাধ্য সাধনার পর মালতীর সঙ্গে সে কমলের হাসপাতালে গেল । কমলা দুশ্চিন্তায় মাথার যন্ত্রণায় পীড়িত হয়ে পড়েছিল। সত্যবানের মৃত্য। পথ দেখিয়ে নিখিলকে নিয়ে সীমার পলায়ন এবং নিপিলের অনুনয় সত্ত্বেও কঠিন স্বরে নিখিলকে ষ্ট্রেশনের পথ দেখিয়ে উন্মুক্ত প্রাস্তরে রেগে সীমার বনের মধ্যে প্রবেশ। শচীন্দ্ৰ মনে মনে বহু তোলপাড়ার পর, পাৰ্ববতীর প্রতি করুণাতেই বোধ করি, তার প্রতি তার উদভ্ৰাপ্ত চিত্তের প্রেম নিবেদনের চেষ্টায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে উজাত হ’ল কিন্তু পাৰ্ব্বতীর সামনে সে চপলতা করতে মনে বাধা পেয়ে নিৰুপ্ত হ’ল। \öዓ খাওয়া-দাওয়ার পর লঞ্চে ফিরে যাবার পথে পাৰ্ব্বতী তাকে বললে, “আপনি কেন আজ এত বিচলিত হয়েছেন ? আপনার কাছে আমার এই অনুরোধ যে এ-রকম মন নিয়ে কোন কিছু ভেবে স্থির করবেন না। তাতে ফল ভাল হয় না। নিজেকে সম্পূর্ণ বোঝবার অবসর বা অবস্থা মানুষের তখন থাকে না, যখন—* শচীন্দ্রের মন আবার কোমর বেঁধে প্রমাণ করতে লেগে গেল, “দেখ, ধে-কথা আজ আমি প্রকাশ করতে চেয়েছি সেকথা আজকের বিচলিত মল নিয়ে আমি ভাবি নি। আমি অনেক দিন থেকেই যা নিয়ে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করবার চেষ্টা করছি তাকেই তোমায় কাছে বলতে চেয়েছিলাম। বলতে ঠিকমত পারি নি, কিন্তু জানি সে তুমি একরকম করে বুঝে নিয়েছ।” পাৰ্ব্বতী বাধা দিয়ে বললে, “বুঝেছি বলেই আপনাকে প্রশ্রয় দিতে আমার বেধেছে। আপনি সম্পূর্ণ শান্ত হয়ে চিন্তা করবার অবসর নিন। আমি আমার প্রতি আপনার করুণার অবকাশে আপনার চিরদিনের দুঃখের কারণ ঘটতে দেব না। তা ছাড়া আমার পক্ষেও—” বলে সে থেমে গেল।