পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀՊԵ অকারণেই হয়ত এসব ভাবছে । হাসপাতালে কাল তার জায়গায় সরোজিনী যাবে। বড় চঞ্চল। সেই মাড়োধারীর ছেলেটাকে হয়ত তেমন সাবধানে যত্ন করবে না। কি মুন্দর ছেলেট, আহা তার মা কাদছিল। চলে আসা ভাল হয় নি। নিখিলবাবু ত ছুটি না দিলেই পারতেন, আমার বুঝি আর পড়ার ক্ষতি হয় না । নিখিলবাবু ত এসেছিলেন ; একটাও কথা বলা হ’ল না তার সঙ্গে। কিছু দরকারে এসেছিলেন কি ? আজ কিছুদিন তাকে কি রকম অন্ত্যমনস্ক দেখাচ্ছে । রোগী হয়ে গেছেন। কেবল যত রাজ্যের কাজ ঘাড় পেতে নিলে কি মানুষের সয় ? আচ্ছা, প্রেৰণসী NNළංINළං ‘সায়েব গাড়ী নিয়ে যায় নি।’ ক্ষিতীশ গুপ্তটা ভারি বদ। ওঁকে হিংসে করে নিশ্চয়। সরোজিনীর খেয়ে দেয়ে কাজ নেই ওই বাদরটার সঙ্গে যত আডড। ডাক্তারের কত জরুরী কাজ থাকে। তোদের আত মাথাব্যথা কেন ? আচ্ছা, মেয়েটি কে ? হঠাৎ সচেতন হয়ে শোনে মালতী গল্প করে চলেছে, “ওঁর ভাই ঐ কি একরকম হয়েছে। ব্যবসা ব্যবসা করে মাথাটা গেল। রাত্রে ঘুম নেই। এক-এক দিন জেগে দেখি, উঠে ঘরের মধ্যে পায়চারি করছে । আগের চেয়ে রাগও বেড়েছে। আমি বলি এমন টাকা দিয়ে হবে কি ?” ইত্যাদি। কমল ভাবে যেখানেই যাবে, সে একটা ওঁর কিসের ভাবনা ? সরোজিনী বলছিল, ক্ষিতীশ গুপ্ত না কি অশাস্তির স্বষ্টি করবে। এমন জীবন বয়ে বেড়ানোর চেয়ে বলেছে মাস কয়েক আগে কে একজন মেয়ের সঙ্গে বিকেলে আর নরক কি হ’তে পারে ? বেরিয়ে গিয়ে মাঝরাত্রে ফিরেছেন। দারোয়ান না কি বলেছে গাড়ী এসে বাড়ীর দরজায় থামল । ( ক্রমশ: ) বঞ্চিত করে বঁাচালে ঐবিমলাংশুপ্রকাশ রায় প্রশস্ত পালঙ্কের উপর শুভ্র চাদর পাত, আর তারই উপর এসে পড়েছে শুভ্রতর চন্দ্রকিরণ। হিরণ ও রমেশ আধ-শোয়া অবস্থায় টাদের দিকেই তাকিয়ে আছে,—শরতের হাল্কা মেঘে এই গেল ঢেকে, আবার ঐ মুখ দেখিয়েছে ওখানে । “কি সুন্দর ” রমেশ বললে । হিরণ চুপ করে রইল। একটু আগেই রমেশ গ্রামোফোনে কয়েকটা রেকর্ড চালিয়েছে, তারই একটা গানের রেশ হিরণের কানে এখনও ঝঙ্কার দিচ্ছে, “আলো ছায়া দোল— আলো ছায়া দোলা ।” তারই তালে তালে হাল্কা মেঘ চাদকে নিয়ে নৃত্যে মেতেছে ঐ ! হিরণকে নিরুত্তর দেখে রমেশ ক্ষুন্ন হয়ে বললে, “কি ভাবছ হিরণ ? তুমি রোজ এই রকম বসে বসে কি ভাব বল ত ?” হিরণ একটু অন্যমনস্ক হয়ে জবাব দিলে, “আমার জীবনটার কথা ভাবছি।” রমেশ উৎসাহভরে বললে “ষ্ট্য, তোমার জীবনটাও আজকের এই জ্যোৎস্নার মত স্বন্দর।” “দ্যুৎ, তা কেন ।” “তবে কি f” হিরণ আবার চুপ ক’রে রইল একটু গভীর হয়ে। তাদের বাংলোখানার অদূরে শোণ নদীর উদাস-মস্থর স্রোত চলেছে চাদের ছবি বুকে ক’রে কখনও দোলাচ্ছে ছবিকে, কখনও ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে—ছবি ভেঙে চুরমার। আকাশের চাদ ও জলের চাদ, দুটোকেই দেখছে হিরণ অলস দৃষ্টিতে। ' “বললে না ?” হিরণের একখানি হাত তুলে নিয়ে রমেশ জিজ্ঞাসা করলে। হিরণ তার হাতটা ছাড়াবার একটু চেষ্টা করলে কিন্তু শক্ত মুঠোর বিরুদ্ধে বেশী জোর না করে বললে, “আচ্ছা, তুমি যে এই বিদেশ থেকে হঠাৎ গিয়ে আমাকে বিয়ে করে আনলে, একটুও ভয় করল না তোমার ?” “ভয় । বিয়েতে আবার ভয় কি ?”