পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఫిషాహి -- - &থল-দে- ৯ s シBこ এই অত্যাচার নিবারণ করবার কি তাদের উপযুক্ত শক্তি-সামর্থ্য নেই ? দেশে সন্ত্রাসনবাদ দমনের জন্তে গবষ্মে ণ্ট অর্ডিনান্স, নিৰ্ব্বাসন, সংশোধিত ফৌজদারী আইন প্রভূতি উপায় অবলম্বন করেছেন। বাংলার নারীদিগকে ণিরাপদে নিশ্চিন্তু মনে আপনার গৃহপরিবারে বাস করতে সমর্থ করবার জন্যে গবন্মেণ্টের যে কৰ্ত্তব্য আছে তা কবে সাধন করবার জন্যে বন্ধপরিকর হবেন ? আমাদের মনে হয়, যেখানে এরূপ নিয্যাভন হয় সেখানে পিউনিটিভ পুলিস স্থাপন করা উচিত । নারীনিৰ্য্যাতনের যে-সব ভয়াবহ পৈশাচিক নারকীয় ঘটনা ঘটছে, ভাষা নেই যে তার পৈশাচিকত ভাল করে বলি ; ভাষা নেই যে মনের অব্যক্ত ক্ষোভ, রোষ প্রকাশ করে বলি। শিশুদের বুকে লাথি মেরে তাদের অজ্ঞান ক’রে মাকে তাদের কোল থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া, স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রীকে টেনে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করা, এই সব নারকীয় কাহিনীর কথ। সকলেই আমরা জানি ; কিন্তু আমরা পিব্য আরামে আহার বিহার ক’রে, নারী সমিতির মাটিং করে বেড়াই। কেন যে পাগল হরে ছুটে বেরিয়ে যাই না এই সব পৈশাচিক ঘুণ ঘটনা দমন করবার ব্যবস্থা করতে, তা জানি না । কেন ছুটি না দেশের লোককে এ বিষয়ে সচেতন করতে ? মন একেবারে অসাড়, জড় হয়ে পড়েছে তাই বুপি নিশ্চিন্তু হয়ে দিন কাটাই। কিংবা হয়ত ভাবি ওসব ত ঐ পাড়াগায়েষ্ট হয়, জামাদের তাতে মাথা ঘামাবার কি দরকার ? এই যদি আমাদের মনোভাব হয়, তবে ধ্বংস অনিবাৰ্য্য । শ্ৰীমতী শাস্তা দেবী এই প্রস্তাব সমর্থন করেন, এবং শ্ৰীমতী বিরাজমোহিনী রায় ইহার পোষকতু করিয়া বলেন, প্রত্যেক নারীর কাছে একটি ছোরা থাকা আবশ্যক। বঙ্গের কংগ্রেসদলভুক্ত পুরুষ ও নারীদের মধ্যে বয়সে সকলের চেয়ে বড় এবং কারাগারের অভিজ্ঞতাশালিনী শ্ৰীমতী মোহিনী দেবী দ্বিতীয় প্রস্তাব সভার সমক্ষে উপস্থিত করেন, এবং নিখিলভারত নারীসম্মেলনের সম্পাদিকা শ্ৰীমতী মণিকা গুপ্ত ইহার সমর্থন করেন। শ্ৰীমতী রমা দেবী কর্তৃক তৃতীয় প্রস্তাব উপস্থাপিত হয় । তিনি বলেন : একদিন ভারতের ইতিহাসেই দেখতে পাওয়া গিয়েছে, অসামান্য রূপসী চিতোল্পের রাণী পদ্মিনী তার রূপের নেশাকে ধিক্কার দিয়ে অগ্নিশিখার রূপকে ছগরথার করে ফেলেছিলেন, পাছে পরের হাতে দেহকে বিকিয়ে দিতে হয় । তারই সঙ্গে বহু নারী দিলে আপনাকে বিসজ্জন আত্মসম্মানকে বাচিয়ে রাখতে । আমরা নিজেদের শিক্ষিত এবং সভ্য বলে গৰ্ব্ব করে থাকি ; শুধু গৰ্ব্ব করা লয় সেই সঙ্গে তারই দোহাই দিয়ে সমাজের বুকের উপর নান৷ ভাবে বিচরণ করি । কিন্তু সত্তাই কি আমরা কোনও মহৎ আদর্শকে গ্রহণ করবার মতন নিজেকে এবং সমাজকে প্রস্তুত করতে সমর্থ হয়েছি ? বলতে লজ্জ এবং ঘূণায় মাথা নত হয়ে যায় যে আজও নারীর ময্যাদ। রক্ষার জন্য নারীকে আশ্রয় খুজতে হয়, নিবেদন জানাতে হয় সভ্য সমাজের স্বারে গিয়ে, তবু প্রতিকার হয় না। ভারতের নারীজাতির মহাসন্মিলনীর বৈঠকে দেশের সম্রাস্ত ঘরের শিক্ষিত ধনী মহিলার উপস্থিত খাকা সত্ত্বেও নারীহরণের প্রতিবাদ করা র্তারা যুক্তিসঙ্গত বা বিশেষ প্রয়োজন মনে করেন নি। বাংলার ঘরের সামান্য শিক্ষিপ্ত হিন্দু রমণী বাংলার নির্ধ্যাতিত মারীদের করুণ কাহিনী বহন করে দিয়ে গিয়েছিলেন তাদের সম্মুখে প্রতিকারের আশায় । ভারতের মহাসন্মিলনীর র্যারা সভ্য, তাহার অধিকাংশ ধনী-ঘরের সন্ত্রান্ত মহিলা। তার দ্বীন দরিদ্র অসহায়দের খোজ রাখেন খুব কমই । কাজেই এই সম্মিলনীর উদ্দেশ্যের যথার্থ সার্থকত হওয়া সম্ভব নয়, যতদিন না তারা ঐ অসহায় দীনদুঃখীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তাদের অভাবঅভিযোগ মেটাতে সমর্থ হবেন । আরও আশ্চৰ্য্য মনে হয়, এত বড় পাশবিকত। ঘটা সত্ত্বেও আজ বাংলায় বা ভারতের মুসলমান শিক্ষিত সমাজে এমন নারী অথবা পুরুষ নেই কি, র্যারা এর প্রতিকারের জন্য প্রতিবাদ অথবা চেষ্টা করতে পারেন? যদি থাকেন, তবে আঞ্জ তার নীরব কেন ? নারীর আত্মমৰ্য্যাদা রক্ষার্থে জাতিভেদ, দ্বেষ, হিংসা থাকা বাঞ্ছনীর নয় । বাংলায় পাশবিক আচরণের আলোচন-প্রসঙ্গে একজন শিক্ষিত মুসলমান যুবক আমায় বলেছিলেন, “হিন্দুর অত্যাচার মুসলমান অপেক্ষ অনেক বেশী ।” তার এই ধারণা ভুল হলেও অামি এই কথা বলতে আজ বাধ্য হচ্ছি যে, সংখ্যার তুলনা না করে যদি আমরা কাৰ্য্যটির পানে দৃষ্টিপাত করি, তবে দেখব যে, হিন্দু-মুসলমানে কিছু আসে যায় না। যে কায্য ঘটে যাচ্ছে তা গৰ্হিত এবং অন্যায় কিন, সেই দেখে বিচার করাটাই কর্তৃয্য বলে মনে করি। হিন্দুই করুক বা মুসলমানই করুক, কাৰ্য্যটি যে অত্যন্ত জঘন্ত এবং নীচতার পরিচায়ক সে-বিময় কোন সমাজই আজ, আশা করি, অস্বীকার করবেন না, এবং এই পাপ-প্রবৃত্তির নেশা দিনের পল্প দিন যে নিম্ন গতির দিকে চলেছে, তাও শিক্ষিত মুসলমান সম্প্রদায়, আশা করি, বিবেচনা ক’রে দেখবেন । অম্বায়কে অস্থায় ব’লে মেনে নেওয়ার মধ্যে লজ্জার কারণ থাকে না, বরং তাকে মা-মানাটাই কাপুরষতাঃ চিহ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। গ্ৰীলোকের প্রতি এই যে ঘোরতর অত্যাচার, এরই প্রতিবাদস্বরূপ আজ আমরা এইখানে উপস্থিত হয়েছি, রাগ- বা বিদ্বেষ- বশে মিলিত হই নি । মিলিত হয়েছি লিজেদের আত্মমৰ্য্যাদা ইজ্জত রক্ষণর অভিপ্রায়ে, মিলিত হয়েছি অসপ্তৰ আঘাত ও বেদনার জর্জরিত হয়ে । যে শাসকের একচ্ছএ শাসনের গণ্ডীর মধ্যে আজ আমরা নারীর বাস করছি, সেই শাসকের নিকট দাবী করতে এসেছি বিচার এবং সতর্কতার স্বধৃষ্টি যার সাহায্যে নারীজাতি তাদের আত্মসন্মান ও ইজ্জতকে বঁচিয়ে রেখে শাস্তিতে বাস করতে পারে । আর চাই শিক্ষিত মুসলমান সম্প্রদায়ের সচেতন মনোভাব । তার আজ ভুলুন তাদের আত্মাভিমান, ভুলে যান তাদের জাতাভিমান। কি হিন্দু, কি মুসলমান, কি খ্ৰীষ্টান, সকল শ্রেণীর নারীর ইজ্জত ও আত্মসম্মান রক্ষার্থে তাদের শক্রি নিয়োগ করুন। তবেই তাদের সৎশিক্ষার মহত্ত্ব ও সার্থকতা । আজ নারীদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ, তারা এই কার্ষে সহায়তা করতে অগ্রসর হোন, সাড় দিন, যদি আজ র্তার এই ব্যথ: নিজেদের অস্তরে অনুভব ক'রে থাকেন। তৃতীয় প্রস্তাবটি শ্ৰীমতী কুমুদিনী বস্থ কর্তৃক সমর্থিত হয় । চতুর্থ প্রস্তাব উপস্থিত করিয়া শ্ৰীমতী অনুরূপ দেবী বলেন : আজ আমরা এখানে যে-কাজের জন্তে সমবেত হয়েছি, অত্যন্ত লঙ্গ} ও অনুতাপের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, এর অনেক পূর্বেই আমাদের সে-কাজ করা উচিত ছিল। মামুষের তখনই সব চাইতে বড় বিপদ এসে যায়,