পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে রবীন্দ্রনাথ মহিলাদিগকে সম্বোধন করিয়া কিছু বলেন। প্রবাসীর বর্তমান সংখ্যায় মানবসভ্যতা ও নারীদের সম্বন্ধে তাহার যে প্রবন্ধটি প্রকাশিত শ্ৰীমতী মোহিনী দেবী হইয়াছে তাহার বক্তব্য মূলতঃ তাহাতে ব্যক্ত হইয়াছে। এই জন্য মহিলাসম্মেলনে তাহার সমুদয় বক্তৃতাটির অনুলেখন দিবার প্রয়োজন নাই, এবং তাহা যথাযথ অন্তলিপিত হয়ও নাই। শেষের দিকে তিনি বলেন : প্রজারা যাতে আপনাদের হীন অবস্থা বুঝতে না পারে এবং প্রতিবাদ না করে-সেজন্য একেশ্বর রাজারা যেমন প্রজাকে জ্ঞান দিতে কুষ্ঠিত হয়, তেমনি একেশ্বর আধিপত্য বজায় রাগবার জন্যই পুরমের নারীদের প্রতি এই রকম ব্যবহার করে এসেছে এবং মুঢ়তার জগদ্দল পাথর মেয়েদের উপর চাপিয়েছে। এতে পুরুষেরা ঠুকেছে । কারণ, আজি যে আমরা দেশকে উন্নতির পথে, সামনের দিকে টানতে চাচ্ছি, তা বাধা দিচ্ছে এই মূঢ়তা ও অজ্ঞতা আমাদের মেয়েদের মধ্যে। এ পুরমেরই কৃতকর্শ্বের ফল । নারীদের জগদ্ব্যাপী জাগরণ সম্বন্ধে তিনি বলেন : একট! সৌভাগ্যের কথ এই যে, আজ সমগ্র পৃথিবীর মেয়ের ঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে বাইরে এসেছে। প্রাচ্য মহাদেশের সর্বত্র এই জাগরণ দেখা দিয়েছে। সকলেই বুঝতে পারছে যে, মেয়েদের পিছনে ফেলে রেখে সমগ্র দেশের ক্ষতি হয়েছে। দেখেছি পারস্তে রাজশাসনের নূতন আইন হয়েছে—যাতে মেয়ের শিক্ষ; এবং স্বাধীনতা লাভ করে নিজেদের গৌরবময় স্থান অধিকার করে । জাপানে স্ত্রী-পুরুষ সকলেই সমানভাবে পরিপূর্ণ শিক্ষা লাভ করেছে। সেখানকার বীরাঙ্গনাদের কীৰ্ত্তি দেখলে পুলকিত হতে হয়। চীনের মেয়ের দেশকে বাচাবার জন্ত ঘরের গণ্ডী পেরিয়ে এসেছে। ম! যেমন সন্তানকে বাচাবার জঙ্ক বাঘের সঙ্গে লড়াই করতে পশ্চাৎপদ হয় না, সেই রকম মেয়ের যখনই দেখেছে যে তাদের ভাই পুত্র সন্তান বিপন্ন তখনই তাদের স্বাভাবিক ধৰ্ম্ম পরিত্যাগ করে রণাঙ্গনে গিয়ে দাড়াতে কুষ্ঠিত হয় নি। স্পেনে যার যুদ্ধ করছে, তাদের মধ্যে বহুল পরিমাণে স্ত্রীলোক। এ-কথা বললে ভুল হবে যে, তা-হ’লে কি তারা নারীধৰ্ম্ম পরিত্যাগ করে পুরুষের চিত্তবৃত্তি ধার করে কাজ চালাচ্ছে ? ধারে কোন বড় কাজ চলে না । মেয়েদের মেয়েই থাকতে হবে -এটা বিধাতার বিধান । কিন্তু এ-কথাও বল ভুল ও আশ্রদ্ধেয় যে মেয়ের কেবল গুহের মধ্যেই আবদ্ধ থাকবে। শ্ৰীমন্তী নিৰ্ম্মলনলিনী ঘোষ সভ্যতা জিনিষটাকে বাচাহয় রাখিতে হইলে ইহাকে নূতন করিয়া গড়িতে হইবে। সেই কাজে নারীদিগকে আত্মনিয়োগ করিতে হইবে । এ-বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ বলেন :