পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেই ভাষাটি কোন ভাষা ? ভারতীয় হিন্দুরা প্রদেশভেদে হিন্দী, উর্দু, বাংল, তেলুগু, পাঞ্জাবী, তামিল, মরাঠী, গুজরাট, ওড়িয়া, সিন্ধী, মলয়ালম, কন্নাড, অসমিয়া প্রভৃতি ভাষায় কথা বলে। ইহাদের মধ্যে সবগুলি “আর্থা” ভাষাও নহে—গ্রাবিড় ভাষাও কয়েকটি আছে। হিন্দী-উর্দুকে হিন্দুস্থানী নাম দিয়া যদি ভারতবর্ষের সাধারণ ভাষা করা হয়, তাহা হইলেও উহা ভিন্ন ভিন্ন অংশের লোকদের মধ্যে বাণিজ্যিক ও মানসিক আদানপ্রদানের ভাষা হইবে, কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে প্রচলিত প্রাদেশিক ভাষাগুলি লোপ পাইবে না—সেগুলিই সেই সেই প্রদেশে প্রধানতঃ ব্যবহৃত হইতে থাকিবে। হিন্দী বা উর্দু, বা হিন্দুস্থানী অবিমিশ্র ÉÉ j” ভাষাও নহে। আচাৰ্য্য কুর্ভকোটি তাহার অভিভাষণে অবগু এ-কথাও বলিয়াছেন, যে, ভারতবর্ষ-রাষ্ট্র হিন্দুরাষ্ট্র হইলেও এখানে সংখ্যলঘুসম্প্রদায়গুলির সংস্কৃতি, ভাষা ও ধর্শ্বে হস্তক্ষেপ করা হইবে না, তৎসমুদয় লীগ অব, নেশুন্সের সংখ্যালঘুসম্প্রদায়সমূহবিষয়ক ব্যবস্থা অনুসারে সংরক্ষিত হইবে। হিন্দুদের একটি বিশেষত্ব আমরা স্বীকার করি, এবং সেই বিশেষত্ব অনুসারে তাহারা ঠিকৃ যে অর্থে ভারতবর্ষীয় ও ভারতভক্ত, অ-হিন্দু কোন সম্প্রদায় সে অর্থে ভারতবর্ষীয় ও ভারতভক্ত নহে। এই বিশেষত্বটি এই যে, হিন্দুরা কেবল রাষ্ট্রের স্থায়ী অধিবাসী বলিয়াই ভারতীয় নহে, তাহারা ধৰ্ম্মে এবং সংস্কৃতিতেও ভারতীয়। ভারতবর্ষের প্রতি তাহাজের ভক্তি ও আনুগত্য (অর্থাৎ লয়্যালটি) কেবল রাষ্ট্রীয়, বা অর্থনৈতিক (অর্থাৎ জীবিকার বা গ্রাসাচ্ছাদনের ), নহে, তাহ ধৰ্ম্মসম্বন্ধীয়, ভাষাসম্বন্ধীয় এবং সাংস্কৃতিকও (culturalও) বটে। তাহাদের ধৰ্ম্ম ভারতবর্ষজাত, ভাষা মূলতঃ ভারতীয় এবং সংস্কৃতি ভারতীয়। তাঁহাদের প্রাচীন (classical) ও "পবিত্র ভাষা ভারতীয়। অ-হিন্দু ভারতবর্ষীয় সম্প্রদায়গুলি সম্বন্ধে এই সব মন্তব্য থাটে না। তথাপি রাষ্ট্রের চক্ষে সকলেই সমান। এই সাম্যটি যেমন সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদিগকে মানিতে হইবে, তেমনই সংখ্যালঘু অ-হিন্দুদিগকেও মানিতে হইবে। প্রত্যেক ধর্ণসম্প্রদায়ের লোক আপনাদের ধৰ্ম্মকে সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ মনে করিতে পারেন এবং তাঁহা মনে করিবার অধিকার প্রত্যেকেরই আছে। অ-হিন্দু কাহারও ইহা মনে করা উচিত নয়, যে, “যেহেতু আমার ধৰ্ম্ম হিন্দুর ধৰ্ম্ম অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ, অতএব, আমার মত অনুসারে হিন্দুর ধৰ্ম্মানুষ্ঠান নিয়ন্ত্রিত দুইবে।” এরূপ দাবী অসঙ্গত, অন্তায় ও অযৌক্তিক। কোনও ফায়পরায়ণ রাষ্ট্রের ও রাষ্ট্রনিয়ন্তার এরূপ দাবী মানা উচিত প্লৱ। ইহা এখন কেহ মানিলেও ইহা টিকিবে না। বর্তমান ব্রিটিশনিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্র হিন্দুকে অ-হিন্দুর নিম্নস্থানীয় ۹ لاســ9۹ا করিয়াছে বটে, কিন্তু হিন্দু ইহা মনে মনে ও কথায় মানিতেছে না, কাৰ্য্যতও এরূপ অন্তায় ব্যবস্থা টিকিতে পারে না । আচাৰ্য্য কুৰ্ত্তকোটি ও র্তাহার মতাবলম্বী ব্যক্তিরা যে ভাবে হিন্দুদের নেতৃত্ব, প্রাধান্ত বা প্রমুখত প্রতিষ্ঠিত করিতে চান, তাহ সমীচীন নহে। হিন্দুরা সংখ্যায় সকলের চেয়ে বেশী। দৈহিক, মানসিক ও আত্মিক উৎকর্ষে, সাৰ্ব্বজনিক হিতসাধনে এবং লোকহিতব্ৰততায় তাহারা যদি অল্প কোন সম্প্রদায়ের লোকদের চেয়ে নিম্নস্থানীয় না হন, তাহা হইলে স্বভাবতই ভারতবর্ষ মুখ্যতঃ হিন্দু ভারতবর্ষই হইবে ও থাকিবে। কোনও সাম্রাজ্যিক বা জাগতিক শক্তি তাহাতে বাধা দিতে পারিবে না | হিন্দু মহাসভার লাহোর অধিবেশনের দুটি ঘটনা দুঃখকর । একটি সভাপতির অভিভাষণের কোন কোন অংশের সহিত মর্তের মিল না-থাকায় কতকগুলি প্রধান হিন্দুর প্রতিবাদ ও সভাস্থল ত্যাগ : দ্বিতীয়টি, আগ্ৰা-অযোধ্যা প্রদেশের পণ্ডিত রাধাকান্ত মালবীয় প্রভৃতি প্রতিনিধিদিগকে প্রতিনিধি বলিয়া গণনা না-করা এবং তজনিত হাঙ্গামা । গোয়ালিয়রে নূতন মহারাজার অভিষেক গোয়ালিয়র রাজ্যের বর্তমান মহারাজা জিয়াজী রাও শিন্দে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাহার অভিষেক উৎসব মহ+ সমারোহে সম্পন্ন হুইয়াছে। তদুপলক্ষ্যে তিনি প্রজাদের জন্য প্রধানত যাহা করিবেন বলিয়াছেন, তাহার তালিকা দিতেছি। (১) গ্রামসমূহের উন্নতির জন্ত এক কোটি টাকা দীন । (২) কৃষিজীবীদের দেয় ৬০ লক্ষ টাকা খাজনা মাক । (৩) ভাল বৃষ ও বীজ কিনিবার জন্ত কৃষকদিগকে ২৫ লক্ষ টাকা ঋণ দান। ( 8 ) মহারাজাকে অভিজাত সম্প্রদায়ের দেয় এক বৎসরের তনক মাফ। ( e ) তাহারা চারি বৎসরের মধ্যে রাজ্যকে তাঁহাদের বক্ৰী দেয় শোধ করিলে স্থদ লাগিবে না। (৬) গোয়ালিয়র কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীকে মহারাজার ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলবন্ত কোঠী নামক প্রাসাদ দান। (৭) শিবপুরী ও মোরেনা নগর ছুটির জন্ত জলসরবরাহের কারখানার ব্যবস্থা মঞ্জুর। (৮) উজ্জয়িনী, শাজাপুর, মাওলার, শিবপুরী ও মোরেনার জন্ত পয়ঃপ্রণালীর পরিকল্পনা মজুর। শিক্ষা প্রজাবর্গের সকলের অধিগম্য করা হইবে।