পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ডাক-হরকরা শ্রাতারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ডাক্তার গর্কে চলিয়াড়ে । শ্রাবণ মাসের কুযঃপক্ষে রাত্রি. তাহার উপর আকাশে ছযোগ : মেঘাচ্ছন্ন আকাশে তার মাই—সাধারণ অন্ধকারের মধ্যে থাকে যে স্বল্প স্বচ্ছন তাহাও নাই—ধন মেঘের কালে; ছায়ায় প্রগাঢ় নিবিড় অন্ধকারের মধ্যে পৃথিবী যেন হারাষ্টয়া গিয়াছে । চারি পাশে শুধু অজস্র সঞ্চরমান ঙ্গেীণ ক্ষীর দাপ্তি জলে আর নেবে—জলে আর লেবে, যেন অসীম অনস্থ গাঢ় মৃত্যু-পরিব্যাপ্তির মাঝখানে ক্ষণস্থায়ী জীবনদীপ্তি জন্মজন্মাম্বরের মধ্য দিয়া বিকাশ পাইয় পাহয়৷ চলিয়াছে। অকস্মাং রাস্তার একটা কাপ-ভর, গৰ্ত্তে গরুর গাড়ীখান। পড়িয় একটা ঝাকুনি থাইতেই ডাক্তারের চিস্তার ঘোর কাটিয়া গেল । চারি পাশে জলভরা মাঠে ব্যাঙের চীৎকার--- আশেপাশের বৃক্ষপল্পবের মধ্যে ঝি ঝির ডাক—তাহারই সঙ্গে গরুর গাড়ীগণার চাকার বিণাঙ্গয় বিনাইয়া কাপ্পার স্বরের মত একটি সকরুণ দীর্ঘ শব্দ বেশ শোভন ভাবেঙ্গ মিশিয়। গিয়াছে । রাস্তার পাশের গাছগুলির পাতায় পাতায় জল ঝরিতেছে টুপটাপ-টুপটাপ । ডিট্রিক্ট বোডের পাকা রাস্তার হুড়িপাথরের কঠিন বন্ধুরতার উপর দিয়া গাড়ীখানা মন্থর গতিতে চলিয়াছে। ডাক্তার একদৃষ্টে সম্মুখের অন্ধকারের দিকে চাহিয়া ছিল । দুরে যেন একটা জোনাকী অনিৰ্ব্বাণ দীপ্তিতে জলিতেছে, অত্যন্থ দ্রুতগতিতে সেটা এই দিকেই আসিতেছে ! ডাক্তার গাড়োয়ালকে জিজ্ঞাসা করিল—ওটা কি আলো, অটল ? বর্ষার রাতে অটল ঘুমে ঢুলিতেছিল—সে একবার জোব করিয়া চোপ খুলিয়। দেখিয় বলিল—কে জানে মশায় ! অষ্ট—অষ্ট-ই-গরুপে কি বলতে হয় বল দেখি ! বলিয়া গরু দুইটিকে একবার তাড়ন করিয়া আবার ঢুলিতে আরম্ভ করিখ । ষ্ঠা আলোই ওট, ক্রমশঃ দীপ্লিট উজ্জ্বলতর হইয়া উঠিতেছে—বিন্দুর আকার হইতে ক্রমশ: আকারে বড় মনে হইতেছে । আলোট। দ্রুতবেগে এই দিকেই আসিতেছে ! ডাক্তার উদ্বিগ্ন হইয়া উঠিল । এই দুৰ্য্যোগ মাথায় করিয়" কে এমন ছুটিতে ছুটিতে তাসিতেছে । রোগীর বাড়ীর লেক ময়ত : ঝুন্‌-ইন-ঝম-ঝুন—মুছ ঘণ্টার শব্দ ডাক্তারের কানে আসিল। ডাক্তার গকিল-- কে ? কে ? কে আসছে ? - উত্তর ও সিল—ডাক । সরকার বাহাদুলের ডাক ! ডাক-হরকর, আমি । বলিতে বলিতে লোকটি নিকটে আসিয়া পড়িল । ঘণ্টধ্বমি স্পষ্টতর হইয়া উঠিল, লোকটির গতের আলোভেষ্ট ডাক্তার দেগিল – বেটে, কালে, আধা-বয়সী এক জোয়ান কাপের উপর মেলব্যাগ ঝুলাইয়া সমান একটি তাল বজায় রাথিয় ছুটিতে ছুটিতে চলিয়াছে । তাহার মাথায় ছোট একটি মাথালী, একহাতে একটা বল্লম—৪ই বল্পমটারই ফলার সঙ্গে ঝুম লে; ঘণ্ট ঝুম্ ঝুন শব্দে বাজিতেছে । ডাক্তার প্রশ্ন করিল—-কে রে, দৗ ? দীন্স ডোম ডাক-হরপর, মেলরাণার, সাত মাইল দূরবর্তী আমদপুর ষ্টেশন হইতে ডাক লইয়া চলিয়াছে হরিপুর পোষ্ট্র আপিসে । সম্বল দহু উত্তর দিল——অাজে ইঃ । —কতট রাত্ৰি হ’ল বল দেখি দীহু ? —আজে ত রাত ভেঙে এসেছে—তিন পহর গড়িয়ে এল আর । দীক্ষর কথার শেষ অংশের সাড়া আসিল গাড়ীর পিছন দিক হইতে ! মেলরাণার সমান বেগে ছুটয় চলিয়াছে। কথা বলিতে বলিতেই সে গাড়া অতিক্রম করিয়া চলিয়া গিয়াছে। ঘন্টার শব্দ ক্রমশ: মৃদ্ধতর হইয়: আসিতেছিল, আলোর শিখাটা ক্রমশঃ আবার পরিধিতে হ্রাস পাইয়া বিন্দুতে পরিণত হইতে চলিয়াছে।