পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতে পল্পী-উন্নয়ন কাৰ্য্য ঐযতীন্দ্রকুমার মজুমদার, এম-এ, পি-এইচডি, বার-এটু-ল ভারত পল্লী-প্রধান ও পল্লী-প্রাণ। পূৰ্ব্বে ভারতের পল্লীগুলির ষে ঐ-সম্পদ ভারতকে “সোনার ভারত” নামে পরিচিত করিয়াছিল তাহার বহুলাংশই এক্ষণে নষ্ট হইয়াছে। আজ ষে ভারতের দুঃখ-দুর্দশার ব্যাপার এত প্রকট হইয়৷ উঠিয়াছে তাহার মূলে পল্লীগুলির প্রতি লোক-ও জনমতের ঔদাসীন্ত ও ইহার উন্নয়নে নিশ্চেষ্টতা। এই ঔদাসীন্ত ও নিশ্চেষ্টতার ফল বহুকাল হইতে সঞ্চিত বা পুস্ত্রীভূত হইয়া এক্ষণে এক বৃহদাকার ধারণ করিয়াছে। ইহা যে এক ভয়াবহ ব্যাপার তাহা এক দিকে দেশের লোক যেমন এক্ষণে ৰুবিয়াছেন, গভর্ণমেন্ট-কর্তৃপক্ষও তাহ বুঝিতেছেন, এবং ইহা নিবারণে যে উভয়েরই এক প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে তাহাও তাহাজের নিকট প্রকট হইয়া উঠিয়াছে। তাই এক্ষণে আমরা দেখিতে পাইতেছি যে পল্পী-উন্নয়নের কথা ও তাহা বিধানের চেষ্টা এক দিকে যেরূপ দেশের নেতাদের আদর্শ হইয়াছে, অপর দিকে গভর্ণমেন্ট-কর্তৃপক্ষও তাঁহাতে অবহিত হইয়াছেন। ইহা ষে দেশের পক্ষে পরম কল্যাণের বিষয় সে-বিষয়ে অধিক বলাই বাহুল্য। যদিও ব্রিটিশ শাসনাধীনে কতকগুলি সহর প্রভৃতির উদ্ভব হইয়া অনেক ভারতীয়ের এক অভূতপূৰ্ব্ব ভাগ্যোন্নতি ও সম্পদ বৃদ্ধি হইয়াছে, কিন্তু ইহার দ্বারা পল্লীগুলির উন্নয়ন সাধিত বা তাহার সাধনকার্ধ্যে যদি সহায়তা না হইয়া থাকে তাহা হইলে তাহার জগু ভারতকে ঐ-সম্পদশালী বলা যায়ন, এবং কালে বা পরিণামে পল্লীবাসীদের এই চরম দুরবস্থা যেমন অনেক ক্ষেত্রেই তাহাদের অবস্থাকে অভিভূত করিতে পারে, তেমনি অপর দিকে ইহা ভারতের স্থখ-সমৃদ্ধির পথেও বাধা বা কষ্টক-স্বরূপ হইতে পারে। এক্ষণে ভারতে ষে অর্থনীতিক সমস্ত বা পরিস্থিতির উদ্ভব হইয়াছে তাহাতে দেশের নেতারা ও গভর্ণমেন্ট-কর্তৃপক্ষও ইহার ঘাখার্থ বেশ অহুভব করিতেছেন বলা যায়। সেই জন্ত সকলেরই দৃষ্টি এক্ষণে এই দিকে এত পতিত হইয়াছে। যাহা হউক, এ বিষয়ে আর অধিক কিছু না বলিয়া পল্পী-উন্নয়ন বিষয়ে ভারতে এক্ষণে কি কাৰ্য্য হইতেছে তাহার বিষয় সংক্ষেপে আলোচনা করিব। যদিও ভারতে রাজনীতিক আন্দোলন উদ্ভবের প্রারম্ভ হইতেই দেশের নেতাদের ও ভারতে ব্রিটিশ শাসনপ্রতিষ্ঠার প্রারম্ভ হইতে রাজকর্তৃপক্ষেরও প্রজা প্রভৃতিদের অবস্থোন্নতির দিকে দৃষ্টি পতিত হইয়াছিল, কিন্তু সম্প্রতি যে-ভাবে এই দিকে কি দেশের নেতাদের, কি রাজকর্তৃপক্ষের দৃষ্টি পতিত হইয়াছে তাহার এক বৈশিষ্ট্য আছে বলা যায়। কি ভারতীয় রাজনৈতিক আন্দোলনে, কি গভর্ণমেণ্টের রাজ্যশাসননীতিতে এক্ষণে রায়ত প্রভৃতিদের অবস্থোন্নতি বা এক কথায় পল্পী-উন্নয়নের প্রতি যে দৃষ্টি পতিত হইয়াছে দেখা যায় তাহার স্থান শীর্ষে বলিলে বোধ হয় অত্যুক্তি হয় না। এবং এ-কথা উল্লেখ করিলে উপযুক্তই হইবে যে, এ-বিষয়ে বর্তমান কংগ্রেস নেতার অগ্রণী হইয় ষে জনমত জাগ্ৰত করিতে সমর্থ হন তাহাতে এক দিকে যেমন দেশের নেতা প্রভৃতির উদ্বুদ্ধ হইয়াছেন, তেমনি অপর দিকে গভর্ণমেন্ট-কর্তৃপক্ষও এ-বিষয়ে অধিকতর অবহিত হইয়াছেন। এক্ষণে কংগ্রেস ও গভর্ণমেণ্ট পক্ষ হইতে ভারতের পল্লী-উন্নয়ন কাৰ্য্য কিরূপ চলিতেছে তাহার কিঞ্চিৎ পরিচয় দেওয়া আবগুক । প্রথমে কংগ্রেসের প্রচেষ্টার কথা ধরা যাক। গত কয়েক বৎসর হইতে কংগ্রেস ভারতের পল্পী-উন্নয়ন বিষয়ে যাহা করিয়াছেন তাহার বিষয় অল্পবিস্তর অনেকেই অবগত আছেন। কংগ্রেসের স্থায় দেশের শ্রেষ্ঠতম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই দিকে অধিকতর দৃষ্টি স্তস্ত করা যে এক অতি উপযুক্ত ও প্রশংসনীয়কাৰ্য্য সে-বিষয়ে অধিক বলাই বাহুল্য। মহাত্মা গান্ধী কিছু কাল পূৰ্ব্বে যে তিলক স্বরাজ ফও তুলিয়াছিলেন তাহার কিয়দংশ উক্ত কাৰ্য্য সাধনার্থ মজুত রাখায় কংগ্রেসের এ-বিষয়ে অধিক কাৰ্য্য করিবার