পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\e ho SNese দিতে পারিত, কিন্তু সে সেদিক দিয়া গেল না বরং কথাটা তার এক প্রকার মানিয়াই লইল এবং ধীরে ধীরে কপাটটা অর্গলক্ষদ্ধ করিয়া মৃত্ত্বকণ্ঠে কহিল, রাত একটু বেশী হয়ে গেছে। কি করি, স্কপ্রিয় কিছুতেই ছাড়লে না। রাণী নির্লিপ্ত গলায় কহিল, তাও কি কখনও হয়! থাক না বাড়ীতে একটা রুগ্ন স্ত্রী। একটু থামিয়া সে পুনশ্চ কহিল, নাও, এবারে খেয়েদেয়ে আমায় রেহাই দেবার ব্যবস্থা কর। কত আর বইব এ রোগা শরীর নিয়ে। স্বশাশু ভীত কণ্ঠে কহিল, কোন ৰখাই তুমি শুনবে না তা আমি কি করব। ঠিকে ঝি একটা রেখে দিলাম—তুলে দিলে। কারণ দেখালে, দু-জনার দু-খানা বাসন বইত নয়। রোগ শরীর নিয়ে খেটে মরবে অথচ আমার প্রত্যেক কাজে জোর করে দেবে বাধা । তোমার এই খামখেয়ালীর জন্তই ত এত কষ্ট পীচ্ছ । রাণী ঈষৎ উষ্ণ কণ্ঠে উত্তর করিল, রাত ছপুরে বড় যে উপদেশ দিচ্ছ দেখছি, কিন্তু, জিজ্ঞেস করি, সব দিকে দৃষ্টি আছে তোমার । যার কিছুই বোঝ না তা নিয়ে জালাতন করো না –আমার ঘুম পেয়েছে। স্থশাস্ত জিজ্ঞাসা করিল, তোমার রাতের ওষুধটা খেয়েছ ? উত্তরে রাণী মাথা নাড়িল, কহিল, ওষুধ খেয়ে যখন কোন কিছুই হচ্ছে না তখন অনর্থক আর শরীরের ওপর এ জুলুম কেন ? আচ্ছা তুমিই বল না, এ রোগে ডাক্তারবন্ধিই বা কি করবে আর ওষুধ খেয়েই বা কি হবে ? তার চেয়ে কোন হাসপাতালে পাঠিয়ে দাও। স্থশাস্ত কোন কথা কহিল না, নিঃশবে স্ত্রীর মুখের প্রতি চাহিয়া রহিল। রাণী পুনশ্চ কহিল, দিনরাত তোমায় বলছি কিন্তু আমার কথায় কান ত দেবেই না বরং আরও বেণী করে করবে মাখামাখি। এতে যে নিজেরই ক্ষতি করছ এ সহজ কথাটাও তুমি স্বীকার করবে না। একটা উত্তরের আশায় রাণী উৎকর্ণ হইয়া ওঠে। স্বশাস্ত নীরব, রাণীর এই উক্তির মধ্যে সে এক বিন্দুও সত্য খুজিয়া পায় না। বোঝে সে যে ইহা তার মুখের কথা মাত্র। স্বামীকে একটু বাজাইয়া দেখিবার উৎকট ইচ্ছা মাত্র। স্থশাস্ত বহুবার চেষ্টা করিয়াছে তাকে রাচি পাঠাইতে । ওখানে রাণীর এক ভাই পাগলা-গারদের ডাক্তার। কিন্তু সে কোনমতেই রাজি হয় নাই। ওর মতে রাচির আবহাওয়ায় তার শরীর কিছুতেই জোড়া লাগিবে না বরং ভাঙিয়া পড়িবে। মানুষের প্রকাশু অবহেলা সে বরদাত্ত করিতে পারিবে না। তার মনে অশাস্তির স্বটি করিবে যাহা বায়ুপরিবর্তনের পক্ষে মোটেই অনুকূল হইবে না। তার চেয়ে যে-কটা দিন সে বাচিয়া থাকিবে অচ্চত্র এক পী নড়িবে না। এ যেন তার প্রতিজ্ঞা । ওর দুর্বলতা যে কোথায় স্বশাস্তর তাহা অজ্ঞাত নহে, তাই চেষ্টা করিয়াই সে নীরব থাকে, পাছে অজানিত ভাবে কোন আঘাত করিয়া বসে এই আশঙ্কায় । স্বশাস্ত মূছকণ্ঠে কহিল, কিন্তু তুমি কাছে না থাকলে আমার চলে কি ক’রে রাণী ? কত বড় অপদার্থ যে আমি তা কি তোমার জানতে বাকী আছে । তবুও বার-বার ঐ এক কথা শোনাবে । রাণী নীরব। স্বশাস্ত পুনশ্চ কহিল, কতগুলো বাজে চিন্তা করে তুমিও মিছে কষ্ট পাও, আমায়ও দুঃখ দাও। মোট কথা, তোমার অচ্চত্র যাওয়াটা আমি চাই নে। কিন্তু এ-বিষয় আলোচনা করবার ঢের সময় পাওয়া যাবে। তার চেয়ে তুমি খাওয়াদাওয়া শেষ ক’রে নাও । বিস্মিত কণ্ঠে রাণী প্রশ্ন করিল, আর তুমি ? তার বিস্ময়ে স্থশাস্ত লজ্জিত হইল, সঙ্কুচিত কণ্ঠে কহিল, আমার তেমন থিদে নেই তা ছাড়া জুপ্রিয় কিছুতেই ছাড়লে না । রাণী কিছু সময় নীরবে কি ভাবিল। কহিল, যা খুলী করে, আমি কেন মিছে ভাবতে ধাই।---আর তাই ত ভাবি, আজকাল খেতে বসে আর হাত চলে না কেন ! আমার রান্নায় সত্যি যদি তোমার অরুচি ধরে থাকে তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেই হয়—আর হেঁসেলে যাব না। আমারও হাড় জুড়বে তোমারও হয়ত দুটো ভাল খাওয়া জুটবে। স্থশাস্ত বিস্থিত হইল না। এমনই বৃথা তিরস্কার আজকাল প্রায়ই তাহাকে শুনিতে হয়। ওর মনের বিকৃত ‘ চিন্তাধারা আজকাল এই পথ ধরিয়াই অগ্রসর হইতেছে। এই উপায়েই রাণী আজকাল তাহাকে ব্যথা দেয়। কোন দিক