পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ల్సిs SAMMMMAAA S SAAAA AAAAgS প্রবাসী ১৩৪ভT ঘরে কি কি খাদ্য পাওয়া যাইতে পারে তাহাই তদারক করিতে উপর হইতে নাচিয়া নাচিয়া নামিতেছিল, হঠাৎ দিদির সঙ্গে অপরিচিত একটি মেয়ে দেখিয়া এক এক লাফে দুই সিড়ি ডিজাইয়া একেবারে চারতলার ছাদে চলিয়া গেল । শিবু এখন অনেকটা বড় হইয়াছে, আগামী অগ্রহায়ণ মাসে তাহার এগারো বৎসর পূর্ণ হইবে, লম্বীতেও সে প্রায় দিদির সমান হইয়া উঠিয়াছে। এক বৎসর কলিকাতায় থাকিয় তাহার অপরিচিত মেয়েদের সম্বন্ধে একটা ভীতি জন্সিয়া গিয়াছে । তাহারা তাহার দিকে যে রকম অবজ্ঞাভরে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাহাতে তাহাদের ত্রিসীমানীয় না থাকাই উচিত। তাহার মস্ত অপরাধ যে সে খোকনের মত গালফোলা নয় এবং আধ অাধ কথা বলে না। ও ভারি ত! নাইবা তাহারা উহার সঙ্গে কথা বলিল, শিবুর বন্ধুর অভাব নাই, সে চায় না মেয়েদের সঙ্গে কথা বলিতে । মা ছোট ঘরের ভিতর একটা তক্তাপোষের উপর খবরের কাগজ বিছাইয়া বসিয়া তরকারি কুটিতেছিলেন, ছেলেকে হুড়মুড় করিয়া ছাদে পলাইতে দেখিয়া ব্যস্ত হইয় উঠিলেন। কিন্তু চট, করিয়া উঠিয়া খবর লইবার ক্ষমতা র্তাহার ছিল না, একটা পা প্রায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত । স্বধা বড় ঘরে টেবিলের উপর বই কয়খানা রাখিয় হৈমন্তীকে লইয়া ছুটিয়া ছোট ঘর খানায় মা’র কাছে গেল । মা একটু ভিতরে বসিয়াছিলেন, না হইলে সিড়ি দিয়া উঠিবার সময়ই তাঁহাদের দেখিতে পাইতেন । ছোট্ট ঘর, তাহাতে ংখ্য জিনিষপত্র । বাহিরের পরিচিত লোকজন বিশেষত মেয়ের উপরেই দেখা করিতে আসেন, বড় ঘরখানাতেই তাহাদের বসাইতে হয়। কাজেই কাপড়ের আলনা, শীতকালের জন্য তোলা লেপ-তোষক, ভাড়ারের আলমারী, কাপড়ের রোজ, এমনকি তরকারির ঝুড়ি বঁট পর্যন্ত আসিয়া জুটিয়াছে এই ঘরে। মহামায়া ত দেড়তলায় গিয়া তরকারি ফুটিয়া দিয়া আসিতে পারেন না, স্বধাও এখন থাকে সারাদিন ইস্কুলে। এত জিনিষেরই মধ্যে একথান তক্তপোষে দিনে মহামায়ার কাজের আসন, রাত্রে বিছানা পাতিয়া চন্দ্রকান্ত ঘুমান। মহামায়া দিনের কাজের শেষে রাত্রেও এই একই আসনে গুইবেন ঠিক করিয়াছিলেন, কিন্তু বড় ঘরখানায় আলোহাওয়া বেশী এবং দিনান্তে একটু স্থান পরিবর্তনও হয় বলিয়া চন্দ্রকান্ত অসুস্থ স্ত্রীকে সেই ঘরেই থাকিতে বাধ্য করিয়াছেন । ছেলেমেয়েরা মা’র কাছে থাকিতেই চায়, তাছাড়া বড় ঘরে বেশী লোকের সংকুলানও হয় বলিয় তাহারা তিন জনেও এই ঘরে আশ্রয় লইয়াছে। স্বধার সহিত সুবেশ অপরিচিত মেয়েটিকে দেখিয়া মহামায়ার দৃষ্টিতে কৌতুহল ফুটিয়া উঠিল। কিন্তু মানুষের মুখের সামনে তাহার পরিচয় জিজ্ঞাসা করিলে পাছে অভদ্রতা হয় বলিয়া কিছু বলিতে পারিলেন না । সুধা পরিচয় দিবার আগেই হৈমন্তী মহামায়াকে প্রণাম করিতে মাথা নামাইল । ব্যস্ত হইয়া মৃধা সহাস্তে বলিল, “মা, এই আমার বন্ধু হৈমন্তী।” তার পর হৈমন্তীর দিকে চাহিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি কি ক'রে চিনলে ভাই, আমার মাকে ?” হৈমন্তী বলিল, “আমি মুখ দেখেই চিনতে পেরেছি।” বলিয়া মা ও মেয়ের দুই জনের মুখের উপর সে একবার সপ্রশংস দৃষ্টি বুলাইয়া লইল । মৃধা বিস্মিত স্বরে বলিল, “কি যে বল ভাই ! মা কি আশ্চৰ্য্য স্বন্দর দেখছ না ?” হৈমন্তী হাসিয়া সুধার দুইটা হাত ধরিয়ু বলিল, “হঁ্যা গে, দেখছি বই কি ?” তার পর স্থধাকে একবার বাহিরে টানিয়া লইয়! তাহার দিকে ভংসনার দৃষ্টি হানিয় তাহার গাল দুটি টিপিয়া বলিল, “তুমিও আশ্চৰ্য্য সুন্দর। কিন্তু তুমি সেকথা জান না।” সুধা একটু লজ্জা পাইয়া মুখ নামাইল । হৈমন্তী সুধার কপালে একটি সস্নেহ চুম্বন দিয় তাহাকে একবার আপাদমস্তক দেখিয়া লইয়া "আজ আসি” বলিয়৷ সেদিনের মত ছুটিয়া চলিয়া গেল । S8 হৈমন্তীকে আবিষ্কার করিবার পর স্থধার জীবনে যেন একটা নূতন আনন্দের স্বর বাজিয়া উঠিল, জীবনের একটা নূতন অর্থ দেখা দিল। যৌবনের স্বচনার পূর্বেই জীবনে একটা অতৃপ্তি এবং বিশ্বস্রষ্টা ও স্বষ্টি সম্বন্ধে মন্ত একটা অভিযোগ লইয়া একদল