পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

_লেণৰ व्वTब्का 8్సh এ কি করিতেছিল সে । মুহূর্তের উত্তেজনায় এত কথা কহিয়া ফেলিল সে কি করিয়া ? জীবনের যে-অংশটা মৃত্যুর স্থায় গভীর অন্ধকারে আচ্ছন্ন হইয়া রহিয়াছে, মাজ এত কাল পরে তাঁহারই উপর আলোকপাত করিতে গেল সে কোন বুদ্ধিতে ? পরিহাসের বাতাসে স্থলেখার অন্তর হইতে সন্দেহের মেঘকে উড়াইয়া দিবার উদ্দেশ্যে হাসিয়া চিত্রা কহিল, “বাজে ব’কে অনেক দেরি করিয়ে দিলুম। ওদিকে যে ‘রাজার দুলাল গেল চলি মোর ঘরের সমুখ পথে’।” স্থলেখা কিন্তু হাসিল না। চিত্রার কম্পিত কণ্ঠস্বর যে কল্পিত চিত্ৰখানি তাহার সম্মুখে তুলিয়া ধরিল তাহা সে সম্পূর্ণ বুঝিতে পারিল না, তাহার কেমন ভয় করিতে লাগিল। একটা কথাও না কহিয়া সে বাহির হইয়া গেল । নদীর জলের একান্ত নিকটে বংশীবাদকের হাতে বঁাশী বাজিয়া চলিয়াছে। শুক্লাচতুর্দশীর চাদের আলো নদীর বুকে পড়িয়া থরথর করিয়া কঁাপিতেছে। যত দূর দৃষ্টি যায় নীরব প্রকৃতি মূচ্ছিতার ন্যায়ু পড়িয়া রহিয়াছে—কাহার অভিসার ব্যর্থ হইল আজ ? সন্ধ্যার অন্ধকারের ন্যায় ধীরে ধীরে ঘুম নামিয়া আসিয়াছে সকলের চোখের পাতায়, বাহিরে জ্যোৎস্নার ন্যায় স্নিগ্ধ ঘুম । ভাইটির কথা ভাবিতে ভাবিতে কখন চোখের পাতা নামিয়া আসিয়াছে, পাহাড়ী মেয়েট নিজেই সে-কথা জানে न | । টমাসের পত্ৰখানা মনে মনে আর শেষ করিতে পারে নাই ফ্লোরিন । শাস্তার অধর-কোণে একটা তৃপ্তির হাসি, মাফলারবোনা শেষ হইয় গিয়াছে । অপর কক্ষে পাচ-ছয় জন মেয়ে থাটের উভয় পার্থে কতকগুলি করিয়া চেয়ার জোড়া দিয়া শয্যা বাড়াইয়া পরম্পরের অতি নিকটে সরিয়া আসিয়া অকাতরে নিস্ত্রা যাইতেছে । নীচের ঘড়িতে যে বারটা বাজিয়া গিয়াছে অনেক ক্ষণ, আর কিছু পরেই তাঁহাদের অতি নিকটের রাজপথ দিয়া সেই বংশীবাদক চলিয়া যাইবে, পথের অালোটা পড়িবে তাহার অঙ্গে, বারাণ্ডায় একবার আসিলেই সকল সন্দেহ এবং কৌতুহলের অবসান হইতে পারে—সে-কথা ভাবিবার আর সময় নাই। সমস্ত হোষ্টেলটা বুঝি স্বপ্তির পথ বাহিয়া স্বপ্নপুরীর দ্বারে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। কেবল অন্ধকারের বুক চিরিয়া মৃদু জ্যোৎস্নালোকে মূৰ্ত্তিমতী স্বপ্নের ন্যায় একটি তম্বী দেহ নিদ্রাহীম চোখে রাজপথের প্রতি চাহিয়া রহিয়াছে । এত দিন পরে কেন তুমি আসিলে অনাহূত পথিক ? চিত্রা তোমাকে চাহে নাই, কোন দুঃখ নাই তাহার, কোন হারানোর বেদন তাহার শাস্তিপূর্ণ জীবনের কোন মুহূৰ্ত্তকে বিষাক্ত করিয়া দেয় নাই। তবে কেন এ অযাচিত আগমন ? ● চিত্র ভোলে নাই । অনাহারক্লিষ্ট, দুঃখজর্জরিত মুমুধু মাতার মুখখানি চিত্র এখনও দেখিতে পাইতেছে, অপমানিত, হৃতসৰ্ব্বস্ব পিতার কঠিন গৰ্ব্বিত দৃষ্টি এখনও চিত্রার মুখের পানে স্থির হইয়া চাহিয়া রহিয়াছে। সেঅপমান ভুলিবার নয়। পিতার নিকট সে প্রতিজ্ঞা করিয়াছে, সম্পূর্ণ নির্দোষ পুত্রবধূকে যে ত্যাগ করিতে পারে, বিবাহের পণস্বরূপ তাহার দরিদ্র পিতার সমস্ত বুকের রক্ত শুষিয়া লইয়াও যাহার আকাজার পরিতৃপ্তি হয় ন—তাহার পুত্রকে সে ক্ষমা করিতে পারিবে না। দুঃখ ? কিসের দুঃখ তাহার ? কাপুরুষের ন্যায় নিজের স্ত্রীকে পিতার হস্তে অপমানিত হইতে দেখিয়াও যে নিৰ্ব্বাক হষ্টয়া থাকিতে পারে, চিত্র তাহাকে ক্ষমা করিবে না। চিত্রার চোখের জলেও এক দিন তাহার পাষাণ-হৃদয় বিচলিত হয় নাই— কাহাকে সে ক্ষমা করিবে ? কোন দুঃখ নাই তাহার জীবনে। গৰ্ব্ব করিয়া সেদিন তুমি চাও নাই চিত্রার পানে —আজ চিত্রার গৰ্ব্ব করিবার দিন। জীর্ণ বন্ধের ন্যায় সমস্ত অতীতকে সে শাস্ত তৃপ্ত মনে বিদায় দিয়াছে। তবে এই স্বদীর্ঘ দিবস পরে কেন এ ব্যর্থ আহবান ? আজ মনে পড়ে, কত দিন পূৰ্ব্বে, কত বিনিদ্র রজনী কাটিয়া গিয়াছে চিত্রার—ঐ বঁাশী গুনিয়া এক জন বাণী শুনাইয়া তৃপ্ত, আর এক জন গুনিয় কৃতার্থ। সে