পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سوچ 8 প্রবাসী SN88లి স্বরে তখন ছিল অপূৰ্ব্ব উন্মাদন, প্রথম প্রিয়ম্পর্শের স্থায় অনন্তৰ্ভূতপূৰ্ব্ব পুলক। কে ভাবিয়াছিল তখন যে সকলই স্বপ্ন ? বাস্তবের আঘাতে একদিন চিত্রার চোখে স্বপ্ন মিলাইয়া গেল । বঁাশী থামিয়া গিয়াছে। এতক্ষণ চন্দ্রালোকে যাহার বসিবার ভঙ্গীটি কেবল অস্পষ্ট চোখে পড়িতেছিল, এখন রাজপথের আলোকে তাহাকে স্পষ্ট দেখা যাইতেছে। চিত্র চমকাইয়া উঠিল। এত রুশ ত সে ছিল না ? মাথার দীর্ঘ চুলগুলা এলোমেলো ভাবে বাতাসে উড়িতেছে, দীর্ঘ নাকটাই কেবল চোখে পড়ে সমস্ত মুখে । তবে যে চিত্রা শুনিয়াছিল এখনও সে •-কিন্তু কেন ? ইচ্ছা করিলেই ত স্বর্থী হইতে পারিতে। কবে কোন অবহেলিত চিত্র দুইটা চোখে করুণ মিনতি ভরিয়া তোমার পানে চাহিয়াছে—সে প্রশ্ন ত সমাজ কোনদিনই করিবে না। বাঙালীর গৃহে অন্নের অভাব হইতে পারে, হইতে পারে বস্ত্রের, কিন্তু দুর্ভাগ অরক্ষণীয়া কন্যার অভাব হয় না। তবে আবার সাধ করিয়া এ-বেশ কেন ? বেশ আছে চিত্রা । মন দিয়া পড়াশুনা করে ; হাসিয়া গান গাহিয়া, অপূৰ্ব্ব দিনগুলি তাহার কাটিতেছে—বন্ধন কিন্তু বড় দুৰ্ব্বল দেখাইতেছে তাহাকে। হয়ত কোন অম্লখ করিয়াছিল! এমন গৃহহীন, ভাগ্যহীনের স্থায় দেখাইল কেন তাহাকে ? কিন্তু এ কি করিতেছে চিত্রা। সমস্ত সম্বন্ধ যাহার সহিত ছিন্ন হইয়া গিয়াছে—তাহারই কথা ভাবিয়া মরিতেছে সে, এত রাত্রে ; স্থখনিত্রী ত্যাগ করিয়া ! কি বুদ্ধিহীনা সে। চিত্রার হাসি পাইতেছে। ইঁ্যা, হাসিবারই কৰা বটে। কিন্তু তবু কেন চিত্রা হাসিতে পারে না? সমস্ত জীবনটার উপর একটা তীব্র বিদ্রপ হানিয়া কেন সে একবার প্রাণ খুলিয়া হাসিতে পারে না ? বংশীবাদক চলিয়া গিয়াছে। সম্মুখের রাজপথের সীমাস্তে কখন তাহার ছায় বিলীন হইয়া গিয়াছে—চিত্র তাহা জানিতেও পারে নাই। কিছু ক্ষণ পূৰ্ব্বে একটি ষ্টীমার চলিয়া গিয়াছে। ছোট ছোট ঢেউগুলি তটভূমিতে আঘাত করিয়া ভাঙিয়া, লুটাইয় পড়িতেছে। এক ধও শুভ্ৰ মেঘ ধীরে ধীরে একবার চাদটাকে লুকাইয়া ফেলিড়েছে—পুনরায় আপনাকে বিভক্ত করিয়া তাহার বাহির হইবার পথ করিয়া দিতেছে। সেই দিকে চাহিয়া চিত্রা চুপ করিয়া দাড়াইয়া রহিয়াছে— বিহীন মুক্ত জীবন। কি ভাবিতেছে তা সেই জানে। কৃষ্ণ-গোলাপ শ্ৰীবিমলচন্দ্র ঘোষ কালে রং, ক্ষীণদেহ, রূপহীনা বলিতেও পার, জানে সবি জানে, শুধু স্বষ্টিরাতে অবশ-তুলিকা অন্তগূঢ় বেদনার মানছা কোমল অধরে, প্রমক্লান্ত বিশ্লেষণে নয়নে শীতাংশু দীপ্তি, যৌবনের হিয়া মুগ্ধ করে মহাশিল্পী পারে নাই বর্ণ কুৎসিত শ্ৰীহীনা ব'লে হয়ত বা চোখে লাগে কারে! তাই সে হয় নি দৃপ্ত গরবিশী রক্ত শিমূলিক প্রেমের মাধুর্ঘ্য রূপ মৰ্ম্মে জেগে তবু আছে তারো কৃষ্ণ-গোলাপের মত ফুটিয়াছে সে রূপের আত্মহত্যা প্রতিদিন চলে মর্ত্য"পরে -C মত স্রষ্টার কাননে রূপস্রষ্ট দিয়েছে কি যত ব্যঙ্গ শুধু তার তরে ? গন্ধ আছে বর্ণনাই সেই ক্ষুদ্র কলঙ্কের টীকা জীবনের ভালবাসা জানে মুগ্ধ হৃদয় তাহারও। গৌরবের দীপ্তি মান করিয়াছে বিষণ্ণ আননে!