পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مايو 88 প্রবাসী SRajత^ নৌকা চলে । এই নৌকা য়াকের চামড়া জুড়িয়া কাঠের কাঠামোতে মাটিয়া প্রস্তুত করা হয়, ইহারই নাম “ক” এবং ইহার এক-একটিতে ত্রিশ-চল্লিশ মণ মাল স্বাটে । আমার তিনজন সওদাগর সঙ্গীর মধ্যে একজন টশী-পুন্যোর চাবা ( ভিক্ষু বা সাধু), অন্তজন লাসার সেরা মঠের ঢাবা এবং তৃতীয় জন লাসার গৃহস্থ ছিল । ভোট দেশের সাধু দুই প্রকার—প্রথম যাহারা মঠে থাকিয়া পূজা-পাঠ করেন, দ্বিতীয় বাহারা ব্যাপার-ব্যবসায় ইত্যাদিতে ব্যস্ত। এই শ্রেণীবিভাগের মধ্যে কোন দৃঢ় সীমা নাই, এক শ্রেণীর লোক যখন ও যত দিনের জন্ত ইচ্ছা অন্ত শ্রেণীভুক্ত হইতে পারে। সওদাগর ঢাবাদের পরিচ্ছদ সাধারণ গৃহস্থদেরই মত, কেবলমাত্র মস্তক মুণ্ডিত । ইহারা যথেচ্ছা মদ্যপান ও স্ত্রী-সংসর্গ করে এবং জীবহত্যাও মাঝে মাঝে করে। আমার সঙ্গী ঢাবা দুইজন থম্পা (খাম দেশবাসী ) এবং গৃহস্থ লাস-পা (লাসানিবাসী ) ছিল ; ইহাদের মধ্যে টশ-লুন্তোর ঢাবা বয়োজ্যেষ্ঠ ও দলের নেতা ছিল এবং সেরার ঢাবা সেই লোকই যাহার সঙ্গে শে-কর মঠের খেম্বো আমাদের লইয়া আসিবার ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। প্রায় আঠারো-বিশ নৌকা-বোঝাই মাল ইহাদের সঙ্গে ছিল, তাহার মধ্যে বেশীর ভাগ চাউল, বাকী অংশের মধ্যে লৌহ-পিণ্ডলের বাসন এবং পেয়ালা ইত্যাদি তৈয়ারী করার কাঠও ছিল । চারিদিকে মালপত্রের শুপ করিয়া দেওয়াল করা হইয়াছিল, মধ্যে চামরীর লোমের ছোলদারী তাম্বু, আগুন জালাইবার স্থান এবং শয়ন ভোজন ইত্যাদির বাবস্থা ছিল । গ্রামের বাহিরে নদীর তীরে এরূপ মালপত্র লইয়া থাকা বিপজ্জনক, কিন্তু সওদাগরদের নিকট ভোটীয় কৃপাণ ও তরবারী ছিল, উপরন্তু ভোটীয় চোরও ঢাবাকে ভয় করিয়া চলে । দিনের বেলায় ইহারা মালপত্র মেরামত, নৌকা জোড়ার কাঠ সংগ্রহ–এখানে নদীতটে ছোট ছোট কাটাযুক্ত গাছ আছে—এই সবে ব্যস্ত থাকিত। প্রতিরাজেই নেতা গ্রামে শুইতে যাইত এবং কোন কোন দিন অন্ত দুইজনের একজনকে সঙ্গে লইয়া যাইত, ফলে আমি ও অন্ত একজন রক্ষণাবেক্ষণের জন্ত থাকিতাম। ভোটদেশে লজ্জাভয় অত্যন্ত কম, স্থতরাং স্ত্রী-পুরুষের অনুচিত বা অবৈধ সম্বন্ধ প্রকাশুভাবেই থাকে। পথে চলিতে চলিতেও লোকে আশ-পাশের বসতিতে সেইরূপ সম্বন্ধের স্থযোগ পায়, কেননা সাধারণ কুমারী ও মুণ্ডিত মস্তক অনীতে অনেক প্রভেদ—অর্থাৎ কুমারীর ব্ৰহ্মচর্য্যের কোনও বালাই নাই। আমি ইহা বলিতেছি না যে ভোটদেশে অন্য দেশ অপেক্ষা ব্যভিচার অত্যন্ত অধিক ; বস্তুতপক্ষে যদি গুপ্ত ও প্রকাগু ব্যভিচার সকলই একত্রে দেখা যায়, তবে আমার ধারণায় বোধ হয়, সকল দেশের অবস্থাই প্রায় কাছাকাছি আসে। যাহা হউক, নেতা ঢাবা ত ব্যবসায় সম্পর্কে এই পথে ক্রমাগত যাতায়াত করে এবং এরূপ অবস্থায় এদেশে প্রায় প্রতি বসতিতেই কোন না-কোন স্ত্রীলোক জুটিয়া যায়, স্বতরাং উহারও সেই ব্যবস্থাই ছিল । প্রতিদিন চামড়ার মটকায় ভরা ছঙ ( ভোটীয় কাচা মদ্য ) গ্রাম হইতে আসিত এবং ইহারা তাহা জলের মত পান করিত। অবসরকালে নদীতে বড়শী ফেলিয়া মাছ ধরার চেষ্টাও চলিত, কিন্তু মাছ-ধরায় সফল হইতে কোন দিন দেখি নাই। ১৯ হইতে ২৪শে জুন পৰ্যন্ত এই ভাবে ব্ৰহ্মপুত্রের কিনারায় কাটিয়া গেল। দুই-তিন দিনের স্থলে এত দেরী হওয়ার কারণ শুনিলাম নৌকা যাইবার সময় যায় জলে এবং ব্রহ্মপুত্রের প্রবল স্রোতের মুখে দুই দিনেই লীগচী পৌঁছায়, কিন্তু ফিরিয়া আসে গাধার পৃষ্ঠে—চামড়া ও কাঠ পৃথক বোঝাই হইয়। ( ক্রমশঃ) 芋