পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●●● সদস্যপদপ্রার্থীদের রাষ্ট্রীয় লক্ষ্য দুঃখের বিষয়, নূতন ভারতশাসন আইনে “ভারতীয় বলিয়া কোন জীব নাই ; ভোটাররা হিন্দু বা অবনত তপশীলভুক্ত জাতি, বা মুসলমান বা শিখ বা খ্ৰীষ্টিয়ান বা আদিম জাতি বা শ্রমিক বা জমিদার বা ব্যবসাদার ইত্যাদি । আইনকৰ্ত্তারা ধরিয়া লইয়াছেন যে, সমগ্র ভারতবর্ষে মহাজাতি ( নেগুন) নাই, থাকার বা গড়িয়া উঠিবার প্রয়োজন নাই, কেহই সমগ্রভারতীয় মহাজাতির এক জন নহে, সমগ্র মহাজাতির কল্যাণসাধন ও স্বার্থসংরক্ষণে কেহ ব্যাপৃত নহে, কাহারও ব্যাপৃত হওয়ার প্রয়োজনও নাই। সেই জন্ত ভারতবর্ষের লোকদিগকে কতকগুলা অসংহত অসংবদ্ধ পৃথক পৃথক সম্প্রদায়ের ও শ্রেণীর সমষ্টি বলিয়াই ধরিয়া লওয়া হইয়াছে। আইনকৰ্ত্তারা যাহাই ভাবুন এবং তাহাদের উদ্দেশু যাহাই হউক, ভারতবর্ষের লোকদিগকে সাধারণ একটি রাষ্ট্রীয় লক্ষ্য স্থির করিয়া তাহার দিকে অগ্রসর হইতে হইবে, সম্প্রদায়গত ও শ্রেণীগত স্বার্থের কথা ভাবিয়াই নিশ্চিন্ত হইলে চলিবে না। আমরা একাধিক বার পৃথিবীর বহু স্বশাসক দেশের দৃষ্টান্ত হইতে প্রমাণ করিয়াছি যে, স্বশাসন-অধিকার যে-সব দেশের আছে তথাকার দরিদ্রতম ও অনুন্নততম শ্রেণীর লোকদের অবস্থাও ভারতবর্ষের রাজামুগৃহীততম সম্প্রদায়ের অবস্থা অপেক্ষা সব্বাংশে ভাল। অতএব আমরা যে ধৰ্ম্মসম্প্রদায় বা যে-শ্রেণীরই লোক হই না কেন, স্বশাসনের অধিকার লাভ করা আমাদের সাধারণ ও শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য হওয়া উচিত। এখন বিচাৰ্য্য, কিরূপ স্বশাসন-অধিকার চাই ভারতবর্ষে যে-সকল বড় ছোট সাক্ষাৎ বা পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রনৈতিক দল আছে, তাহারা সকলেই যে ভারতীয় কোন প্রকার রাষ্ট্রনীতিকেই আপনাদের মতসমষ্টিতে বা কাৰ্য্যপ্রণালীতে প্রধান স্থান দিয়া থাকে, এমন নয়। কিন্তু কেহই রাষ্ট্রনৈতিক উদ্দেশুকে বাদ দিয়া কাজ করে না । ভারতবর্ষের রাষ্ট্রীয় আদর্শ কিরূপ হওয়া উচিত, সে বিষয়ে স্পষ্ট বা অস্পষ্ট প্রকাশিত বা অপ্রকাশিত দু-রকম মত আছে । কংগ্রেসের ও কংগ্রেসপন্থীদের মত এই যে, ভারতবর্ষে পূর্ণ স্বরাজ অর্থাৎ সম্পূর্ণ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত করিতে হইবে ; এশিয়ায় জাপান ষেরূপ স্বাধীন, ভারতবর্ষকে সেইরূপ স্বাধীন Nத்துஇ.சி হইতে হইবে। এশিয়াতে অন্ত স্বাধীন দেশ আরও কয়েকটি আছে। জাপান তন্মধ্যে প্রবলতম বলিয়া জাপানেরই নাম করিলাম । ইউরোপ ও আমেরিকার সব দেশই স্বাধীন— দু-একটা প্রায়-স্বাধীন। কংগ্রেস ষে স্বাধীনতা চান তাহার কারণ ইহা নহে যে স্বাধীনতা লাভ সকলের চেয়ে সহজ। কংগ্রেসপন্থীরা জানেন পূর্ণ স্বরাজ প্রতিষ্ঠিত করা সব্বাপেক্ষা কঠিন। কিন্তু যাহাকে তাহারা শ্রেষ্ঠ আদর্শ বলিয়া মনে করেন, কঠিন বলিয়াই তাহা হইতে বিচ্যুত হইতে চান না। এখানে ইহাও মনে রাখিতে হইবে যে, মহাত্মা গান্ধী তথকথিত গোলটেবিল বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে বলিয়াছিলেন ca, fsfã “xt?awrw ntates” ( substance of independence ) পাইলে সন্তুষ্ট হইবেন ও গ্রহণ করিবেন। ইহাতে তখন কংগ্রেস-দলভুক্ত কেহ আপত্তি করেন নাই । “স্বাধীনতার সারাংশ” পাইলে কংগ্রেসের বামবগীয়েরা সকলে সন্তুষ্ট হইবেন কি না বলিতে পারি না । ভারতবর্ষের জাতীয় উদারনৈতিক সংঘ ( Indian National Liberal Federation) fast-i states: অন্তর্গত থাকিয়া কানাডা অষ্ট্রেলিয়া দক্ষিণ-আফ্রিকা প্রভৃতি স্বশাসক ডোমীনিয়নগুলির মত অধিকার লাভ করিতে চান। এরূপ অধিকারকে স্বাধীনতার সারাংশ বলা যাইতে পারে। এই অধিকার কি প্রকার ? ডোমীনিয়নগুলির আভ্যস্তরিক কোন ব্যাপারে ব্রিটেন হস্তক্ষেপ করিতে পারে না। সামরিক অসামরিক সমুদয় আভ্যস্তরীণ ব্যাপারে তাহাদের চুড়ান্ত কর্তৃত্ব আছে। তাহদের গবর্ণর-জেনার্যালকে আগে ব্রিটেনের রাজা ব্রিটেনের মন্ত্রীদের পরামর্শ অনুসারে নিযুক্ত করিতে এবং কেবল ব্রিটেনের কোন নাগরিকইগবর্ণর-জেনার্যাল নিযুক্ত হইতেন। কিন্তু ইম্পরিয়াল কনফারেন্সের এবং ওয়েষ্টমিন্সটার আইনের ফলে এখন ব্রিটেনের রাজা কোন ডোমীনিয়নের গবর্ণর-জেনার্যাল নিযুক্ত করিতে হইলে তাহারই মন্ত্রীদের পরামর্শ অনুসারে তথাকার কোন নাগরিককে নিযুক্ত করেন । ডোমীনিয়নগুলি স্বেচ্ছায় কোন দেশের সহিত যুদ্ধ করিতে পারে না, কিন্তু অসামরিক কথাবার্তা চালাইতে এবং চুক্তিসন্ধি প্রভৃতি করিতে পারে। ব্রিটেন কোন দেশের সহিত যুদ্ধ করিলেই ধরিয়ালওয়া হয়, যে, ভারতবর্ষেরও সেই দেশের