পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌৰ সহিত যুদ্ধের অবস্থা ঘটিয়াছে এবং ভারতীয় সৈন্ত আদিও তাহাতে ব্যবহৃত হইতে পারে। কিন্তু ব্রিটেন কোন দেশের সহিত যুদ্ধ করিলে কোন ডোমীনিয়নের তাহাতে যোগ দেওয়া ন-দেওয়া সেই ডোমীনিয়নের স্বেচ্ছাধীন। যে কোন বা সমুদয় ডোমীনিয়ন নিরপেক্ষ থাকিতে পারে, কিন্তু যুদ্ধে ব্রিটেনের শত্ৰুপক্ষ অবলম্বন করিতে পারে না । নিজ নিজ বাণিজ্য ও পণ্যশিল্পের এবং নিজ নিজ জাহাজ চালান প্রভৃতি কার্ধ্যের শ্ৰীবৃদ্ধির জন্য ভোমীনিয়নগুলি ইংলণ্ডের বিরুদ্ধে শুদ্ধস্থাপন প্রভূতি করিতে পারে ও করে। এই প্রকারে দেখা যাইতেছে, ষে, ডোমীনিয়নগুলি প্রায় স্বাধীন, যদিও সম্পূর্ণ স্বাধীন নহে। ভারতবর্ষও ডোমীনিয়নত্ব লাভ করিলে প্রায় স্বাধীন হইবে । এই জন্য যদিও ব্রিটেনের একাধিক রাজা এবং বহু মন্ত্রী ও গবর্ণর-জেনার্যাল ভাবতবর্ষকে ডোমীনিয়ন করিবার প্রতিশ্রুতি দিযাছিলেন, তথাপি নূতন ভারতশাসন আইন প্রণয়ন ও পাস করিবার সময় তাহাতে ডোমীনিয়ন কথাট পয্যন্ত ব্যবহৃত হয় নাই এবং ঐ আইন বস্তুতঃ স্বশাসনেব ঠিক বিপবীত দিকে গিয়াছে। উহাতে স্বশাসনেব কঙ্কাল আছে কিন্তু প্রাণটা নাই—প্রাণটা টানিয়া বাহির করিয়া লওয়া হক্তয়াছে। ভাবতবর্ষের পক্ষে ডোমীনিয়নত্ব লাভ ও পূর্ণ স্বরাজ লাভ প্রায় সমান কঠিন । বোধ হয় পূর্ণ স্বরাজ লাভ অল্প পরিমাণে অধিক কঠিন। যাহার ডোমীনিয়নত্ব চীন ও যাহারা পূর্ণ স্বাধীনতা চান, ভারতবর্ষীয় এই উভয় দলের লোককেই আমরা স্বাজাতিক (ন্যাশন্তালিষ্ট ) বলিয়া গণনা করি। কিন্তু র্যাহারা নূতন ভারতশাসন আইনেই সন্তুষ্ট, তাহাদিগকে স্বাজাতিক মনে করি না । এখন প্রাদেশিক ব্যবস্থাপক সভাগুলির সদস্ত নিৰ্ব্বাচিত হইবে ; কেন্দ্রীয়, ফেডার্যাল বা সমগ্রভারতীয় ব্যবস্থাপক সভার উভয় কক্ষের সদস্যনির্বাচন পরে হইবে । কিন্তু প্রাদেশিক ব্যবস্থাপক সভাসমূহের সদস্যেরাই তাহাদিগকে নিৰ্ব্বাচন করিবেন বলিয়া এখন যে সদস্তনিৰ্ব্বাচন হইতে ধাইতেছে তাহ সমগ্রভারতীয় সদস্যনিৰ্ব্বাচনেরই প্রথম iাপ | অতএব এখন হইতে বিশেষ সাবধান হওয়া আবশুক । য-সকল প্রার্থী পূর্ণ স্বরাজের পক্ষে কিংবা ডোমীনিয়নত্বের পক্ষে, কেবল তাহাদিগকেই ভোট দেওয়া উচিত। নূতন ভারত-শাসন আইনেই র্যাহারা সন্তুষ্ট এরূপ লোকদিগকে ভোট দওয়া অঙ্কুচিত । বঙ্গে মুসলমানের বলিবেন, "যে-সব মুসলমান প্রার্থী সলমানদের বিশেষ স্বার্থরক্ষা করিবেন না তাহাদিগকে স্বামরা ভোট দিব না।” এ-বিষয়ে তাহারা নিশ্চিস্ত থাকুন। সলমানদিগকে খুশি করা নূতন ভারতশাসন আইনের একটা প্রিধান উদ্দেশু। মুসলমান সদস্যদের সংখ্যা এরূপ রাখা &Bఇ=ye বিবিধ প্রসঙ্গ-ভোমানিয়নত্ব ও পুর্ণ স্বরাজ 8¢ጫ হইয়াছে ৰে তাহাদিগকে রাজী ন-করিয়া কেহ কিছু করিতে পরিবে না—অবশু গবর্ণর পরিবেন। কিন্তু মুসলমানেরা ইহাও বুঝিয়া রাখুন, যে, দেশ ডোমীনিয়নৰ কিংবা পূর্ণস্বাধীনতা না পাইলে মুসলমান বা হিন্দু বা খ্ৰীষ্টিয়ান কোন সম্প্রদায়েরই জনসাধারণের শিক্ষসম্বন্ধীয় বা আর্থিক বা অন্তবিধ উন্নতি স্বশাসক দেশসমূহের দরিদ্রতম শ্রেণীসকলেরওসমান হইবে ন!—কেবল “অভিজাত, ‘সন্ত্রান্ত", অনুগ্রহজীবী কতকগুলি লোকের সুবিধা হুইবে । বাঙালী হিন্দুরা অনেকে, হিন্দুসম্প্রদায়ের স্বাখ-রক্ষায় মনোযোগী হইবেন, এরূপ সদস্ত চাহিবেন। কিন্তু হিন্দু সদস্তের সংখ্যা এত কম রাখা হইয়াহে, যে, তাহার। সকলে সম্পূর্ণ একমত হইলেও কেবল নিজেদের ভোটের জোরে কিছুই করিতে পারিবেন না। গবর্ণরের দয়া হইলে তিনি কিছু করিবেন । কিন্তু দয়ার ভিখারী হওয়া মন্তস্তত্বের বিপরীত। অতএব, নুতন ব্যবস্থাপক সভার দ্বারা বা মন্ত্রীদের দ্বার, হিন্দুব ইষ্টসাধনত দূরের কথা, হিন্দুর অনিষ্ট নিবারণের আশাও কোন হিন্দু যেন না কবেন । তাহ হহলেও, হিন্দুহিতৈষী সদস্যপদপ্রার্থীকে ভোট দেওয়া হিন্দু ভোটারদের কৰ্ত্তব্য । আগেই বলিয়াছি, যিনি ভারতবর্ষের জন্য অন্ততঃ ডোমীনিয়নত্ব না চান এরূপ কাহাকেও ভোট দেওয়া উচিত নয়—তিনি যে ধৰ্ম্মসম্প্রদায়েরই লোক হউন না কেন । ডোমীনিয়নত্ব ও পূর্ণ স্বরাজ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের যে-সব দেশ ডোমীনিয়ন, দক্ষিণআফ্রিকা ছাড়া অন্তত্ব তাহাদের অধিকাংশ লোক ইউরোপীয়, কোথাও কোথাও অধিকাংশই ইংরেজ, এবং দক্ষিণআফ্রিকাতেও প্রভুত্ব যাহাদের তাহারা ইউরোপীয় বুজর ও ইংরেজ। ডোমীনিয়নগুলির ভাষা প্রধানতঃ ইংরেজী এবং ধৰ্ম্মও প্রধানতঃ খ্ৰীষ্টীয় ধৰ্ম্ম । স্বতরাং ব্রিটেনের লোকদের সহিত তাহাদের নানা রকম ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় তাহারা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে ডোমৗনিয়নত্ব লাভে সন্তুষ্ট থাকিতে পারে। কিন্তু ভারতবর্ষের লোকের ইউরোপীয় নহে, ইংরেজ নহে ; ভারতবর্ষের ভাষা ইউরোপীয় নহে ; ধৰ্ম্মও প্রধানতঃ খ্ৰীষ্টীয় ধৰ্ম্ম নহে। সুতরাং ভারতবর্ষের সহিত ব্রিটেনের স্বাভাবিক কোন ঘনিষ্ঠত নাই। অতএব, ভারতবর্ষ শুধু ডোমীনিয়নত্বে সত্তষ্ট হইতে পারে না । অবগু ডোমীনিয়নত্ব স্বাধীনতার সারাংশ বটে এবং ডোমীনিয়নত্ব লব্ধ হইলে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ অপেক্ষাকৃত সহজ হয়। আয়ারল্যাও ডোমীনিয়নত্ব পাইয়া পূর্ণস্বাধীন সাধারণতন্ত্র হইতে যাইতেছে । তাহাতে ব্রিটেন বাধা দিতে গেলে অন্ধবিধায় পড়িবে, বিপন্ন হইবে। দক্ষিণআফ্রিকা একাধিক বার এরূপ ভাব প্রকাশ করিয়াছে, যে,