পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

एडव्नु=टकोझोT 8్ప\ఠి কিন্তু এমন সৰ্ব্বমানিমুক্ত রক্তাভ গুমেন্বন্দর মুখঐ সে কখনও দেখিয়াছে বলিয় তাহার মনে হইল না। বিধাতা তাহাকে অটুট স্বাস্থ্য দিয়াছিলেন, তাহারই দীপ্তি যেন তাহার সমগ্র মুখমণ্ডলে হাল্কা মেঘের আড়ালের অষ্টমীর জ্যোৎস্নার মত জলিতেছে। পীতাভ রঙীন কাগজের ফাস্থসের ভিতর মোমবাতির স্বছ আলো জালিয়া দিলে তাহ যেমন জল জল করে, তাহার রেখালেশহীন উজ্জল তরুণ মুখও যেন তেমনই দীপ্যমান। স্থধার বিশ্বাস হটতেছিল না যে এই দর্পণের স্বনীর ছায়াটি তাহারই আজন্ম-পরিচিত স্বধার ছায় । সে ত এমন ছিল না ; একখানা শাড়ীর রঙে কুৎসিত মানুষ কি হঠাৎ এতট স্বন্দর হইয়া উঠিতে পারে r অথবা হয়ত সে স্বন্দর ছিল, কিন্তু হৈমন্ত্রীর আবিষ্কারের পূৰ্ব্বে সে তাহ জানিতে পারে নাই। মনটা তাহার অকারণ খুনীতে ভরিয়া উঠিল। কোন এক অদৃশু শিল্পী যে তাহার বয়সন্ধিকালে নূতন তুলিকাপাতে তাহাকে সাজাইয়া তুলিতেছেন তাহ স্বধা বুঝিতে পারে নাই । স্বধার মনে পড়িল, কলিকাতায় আসিবার বছরখানিক আগে পিসিমা একদিন মাকে বলিতেছিলেন, “কেমন বউ, আমার কথা ঠিক হবে না বলেছিলে, এখন দেখছ ত ? স্বধী নাকি তোমার কালে কুচ্ছিৎ হবে ? আর দুটো বছর যাক, তখন দেখে নিও জাতসাপের বাচ্ছা জাতসাপ হয় কিন৷ ” মা নিশ্চয়ই পিসিমার চেয়ে স্বধাকে কম ভালবাসেন না, কিন্তু পিসিমার কথাতে মা নিজের জেদ ছাড়িলেন না। তিনি মৃদ্ধ একটু হাসিয়া বলিলেন, “আমি কি আর বলেছি যে ও সাওতাল হবে । ভদ্র বাঙালীর মেয়ে ঘসামাজ হবে বই কি ! তবে শিৰুতে ওতে চিরকালই তফাৎ থাকবে এ আমি নিশ্চয় বলছি।” হৈমবতী রাগ করিয়া বলিলেন, “মুখে তুমি মান না, কিন্তু বউ, তোমার রঙের জাক আছে। তোমার চেয়ে একটু নীরেস বলে ওকে তুমি উচু নজরে কোনদিন দেখলেই না ।” হৈমবতী ও মহামায়ার এই সব কথা লইয়া স্বধা কোন দিন মাথা ঘামায় নাই। মনে মনে সে মহামায়ার কথাই সত্য বলিয়া জানিত। পিসিমার পক্ষপাতে মনটা তাহার যে মোটেই খুনী হইত না তাহা নয়, কিন্তু সেটা যে নিতান্তই পিসিমার পক্ষপাত এ ধারণাটাও তাহার পাকা ছিল। আজ স্থধার ধারণা বদলাইয়া গেল। পিসিমা সত্য কথাই বলিয়াছিলেন, না হইলে হৈমন্তীই বা তাহাকে আকাশের মত স্বন্দর বলিবে কেন, সে নিজেই বা কেন দর্পণে নিজমুখ দেখিয়া এমন মুগ্ধ হইবে । মা'র উপর একটুখানি অভিমান হইল, মা নিজে অপূৰ্ব্ব স্বন্দরী, তাই শিবুর গৌরবর্ণের উপর তাহার নজর বেশী, স্বধার কিছু স্বন্দর তিনি খুজিয়া পান না। অবশু, মা’র উপর বেশী অভিমান স্থধা করিতে পারিত না, তাহা হইলে আবার নিজেকেই মস্ত অপরাধী মনে হয়। মানুষ কি দর্পণ, যে যাহাই বলুক না কেন, এ-কথা স্বধা ভোলে নাই যে তাহার মায়ের সৌন্দর্য্যের সহিত তাহার সৌন্দর্ঘ্যের তুলনা হয় না। র্তাহার রূপ-বিচারের মাপকাঠি ত বড় হইবেই। কিন্তু তবু আজ যাহা সে আবিষ্কার করিয়াছে তাহ নিতান্ত তুচ্ছ নয়, আজিকার মত তাহার চোখে তাহাও অপূৰ্ব্বহ । Syste শীতের হাওয়া দিয়াছে। স্বধা ও শিৰু পূজার ছুটিতে মৃগাক্ষদাদার সঙ্গে হৈমবতীর নিকট গিয়াছিল, বিশ-বাইশদিন থাকিয়া ছুটি শেষ হইবার আগেই ফিরিয়া আসিয়াছে। নয়ানজোড়ের ধানের ক্ষেত সোনায় সোনা হইয়া উঠিয়াছে। স্বধাদের ভিতর-বাড়ীর প্রকাও উঠান গোবর দিয়া নিকাইয়া করুণ। বিী সেখানে ধান মাড়াইবার ব্যবস্থা করিয়াছে। সকাল হইতে সন্ধ্য পৰ্য্যস্ত গরু ও মহিষের গাড়ীতে বোঝাই রাশি রাশি ধান আনিয়া লখা মাঝি ও ডুমকা সাওতাল উঠানে চালিতেছে। হৈমবতী ভয়ানক ব্যস্ত। কুলি-কামিনদের ধান দিয়া পয়সা দিয়া যে যেমন চাহে ধানকাটার বেতন শোধ করিতে হইতেছে, আবার তাহার হিসাবও রাখিতে হইবে। মুধ সাহায্য করিতে গেলে তিনি যেন আজকাল কেমন সন্ত্রস্ত হইয় উঠেন। “না বাছা, তোমরা লেখাপড়া ফেলে এর ভিতর কেন ? এ সব গেয়ে চাষা-ভুষোর কাজ কি তোমাদের সাজে ?” তিন বছর আগে যে-সব সাওতাল মেয়ের ঘরের লোকের মত স্বধার সঙ্গে গল্পগুজব করিত তাহারাও এখন একটু দূর হইতে তাকায়।