পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ ঘটনাচক্র @ot এখনও বিবাহ হয় নাই। বেশ-বিন্যাস প্রসাধন সম্বন্ধে তিনি উদাসিনী নহেন। এই বেশ-বিন্যাসের কল্যাণে র্তাহাঞ্চে উষার অপেক্ষা ছোটই দেথায়। নানা কথার পর তিনি বলিলেন, “এইবার উঠি ভাই, একটু মার্কেটে যেতে হবে।” “মার্কেটে কেন ?” পারুল-দিদি মুথ টিপিয়া হাসিয়া উত্তর দিলেন, “একখানা শাড়ী কেনার ইচ্ছে আছে। শুনেছি না কি জজেট শাড়ীগুলো আজকাল খুব স্বন্দর উঠেছে।” “তাত না কি ?” পারুল-দিদি চলিয়া গেলেন । জজেট শাড়ীর কথায় উষার মণীন্দ্রমোহনকে মনে পড়িল । একটু দুঃখবোধও হইল। বিশেষ করিয়া এই জন্তহ দুঃখ হহুল ষে মণিকে না-পাওয়ার দুঃখের তীব্রতাটা যেন কfময়। গিয়াছে। কই, মণির কথা আর ত সে তেমন করিয়া ভাবে না । দুই বৎসর অতীত হহয় গিয়াছে মণির কোন খবরই সে ত রাখে না আর এখন সে মিসেস গুপ্ত এবং এ-কথাও অস্বীকার করিবার উপায় নাই যে ব্রজবিহারীর স্বর্থদুঃখের সঙ্গে নিজেকে সে একান্ত ভাবে জড়াহয়া ফেলিয়াছে । মন অতীতের স্মৃতির ধ্যান করিতেছে না। স্পন্দনশীল বৰ্ত্তমানকে লহয়। সে ব্যস্ত। ব্রজবিহারী খারাপ লোক নয়, উষাকে খুশী করিবার জন্ত তাহার চেষ্টার ত্রুটি নাই, তদুপরি সে উধার স্বামী। স্বতরাং তিলে ভিলে সে উষার হৃদয় জয় কfরঃাছে । এই কথাটা উপলব্ধি করিয়া উষ। একটু আনমনা হইয়া পড়িল । মনে মনে অনর্থক একবার আবৃত্তি করিল—তাকে আমি ভালবাসি। এখনও বাসি— জজেট আমি জীবনে কখনও পরব নী—এ প্রতিজ্ঞা আমি রাখবহ।" 鬱 鬱 鬱 এই প্রতিজ্ঞা-দুর্গের উপর দ্বিতীয় বোমা নিক্ষেপ করিলেন তাহার সহোদর ভগিনী সন্ধা। সেন । এখন অবগু সন্ধ্যা দাস। সন্ধ্যার স্বামী মিষ্টার দাস ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট। বলা বাহুল্য, ডেপুটি বাবটি সদ্য-পাস-করা ডাক্তার ব্রজবিহারী অপেক্ষা অধিক উপার্জনক্ষম। এই জগুও বটে এবং পিঠাপিঠি বলিয়াও বটে উষার মনে একটু ঈৰ্য্যা ছিল। এখন অবস্ত দু-জনেই বড় হইয়াছে, চুলোচুলি খাম্‌চাথামূচি করিয়া ঝগড়া চলে না। বরঞ্চ মুখে দুই জনেই দুই জনের প্রতি উদারতা প্রকাশ করিতে সচেষ্ট। ইহাদের পাল্লা চলে এখন নীরবে— গহন-কাপড়ের মারফৎ । উষা যদি সৌধীন দ্বল ক্রয় করিয়া কর্ণযুগল অলঙ্কত করিলেন সন্ধ্যা অমনি সৌধীনতর দ্বল জুলাঙ্গয়া উষাকে সৌর্থীনতমের সন্ধানে উতলা করিয়া তুলিলেন। সন্ধ্যা যদি কোন ছলে উষাকে জানাইলেন ধে তাহার স্যাণ্ডাল জোড়াটার পাচ টাকা দাম, উযাকে আমনি জানাইতে হইল—“হা, ওরকম স্যাণ্ডালগুলো বেশ,— আমার খুব পছন্দ। কিন্তু ওঁর কিছুতেই ওরকম ট্র্যাপ-দেওয়া পছন্দ হয় না। নিজে পছন্দ ক’রে কিনে এনেছেন দেখ না— সাড়ে ছ-টাকা দিয়ে . আঙুলগুলো এমন চেপে ধরে— বিচ্ছিরি ” স্বতরাং এই সন্ধ্যাই যখন উপযুপিরি দুই দিন দুই বিভিন্ন প্রকার জর্জেট পরিয়া দিদির সহিত দেখা করিয়া গেল তখন উষা দেবী বেশ একটু বিচলিত হইলেন। জর্জেট কিন্তু তিনি পরিবেন না। মনে মনে কহিলেন, “আহ। ভারি ত জর্জেটের দাম ! প্রতিজ্ঞ না করলে এত দিন আমি কবে কিনতাম !” 豪 豪 豪 তৃতীয় বোমা হানিলেন বান্ধবী ছায় । ছায়া সিনেমায় ধাইবে— উষাকে ডাকিতে আসিয়াছে । পরিয়া আসিয়াছে একথানা জর্জেট শাড়ী। সুন্দর সাদা রঙের জর্জেটখানা—সুন্দর কাজ-করা। উষা দেবী তাহার মুর্শিদাবাদীখানি সযত্নে পরিধান করিয়া বাহিরে আসিতেই ছায় প্রশ্ন করিলেন, “ওটা পরলি কেন এই গরমে । জর্জেট নেই তোর ?” “al " “আজকাল জর্জেটটার খুব চলন হয়েছে—কিনলেই পারিস একথান। দামও ত বেশী নয়—আমার এইখানার দাম এগার টাকা—” “মোটে ?” অতর্কিতে উষার মুখ হইতে বাহির হইয় পড়িল । মণীন্দ্রমোহনের স্মৃতিপটের সম্মুখে নানা বর্ণের কয়েক খানা জর্জেট শাড়ী আসিয়া পড়াতে পটখান বেশ একট