পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●s8 জগমোহন রায়ের পিতা রামকান্ত রায় এখন বৰ্দ্ধমানে উপস্থিত নাই। আমি তাহার অপর পুত্র রামলোচন রায়কে ডাকিয়া পাঠাইয়াছিলাম, এবং তাহার সহিত এই বিষয়ে অনেকক্ষণ কথা বাৰ্ত্ত কহিয়াছি। সে বলিল, দেড় বৎসর পূৰ্ব্বে জেল হইতে খালাস পাইয়া তিনি ( রামকান্ত রায় ) বৰ্দ্ধমানের রাজাকে মাত্র ৫০ ০< দিতে পারিয়াছেন, এবং র্তাহার দেয় ৮০ ০০ ০২ আশি হাজার টাকা পরিশোধ করিবার জন্য এগার বৎসরের কিস্তিবন্দী করিয়াছেন। রামকান্ত রায়ের নিকট বৰ্দ্ধমানের রাজার বার্ষিক এক লক্ষ টাকা জমার একখানি মহাল ইজারা আছে। এই মহালের মুনাফার উপর সমস্ত পরিবারের জীবিকা নির্ভর করিতেছে । এই মহালের মুনাফার টাকা ভিন্ন অন্য কোন তহবীল হইতে এই দেনা পরিশোধ করিবার উপায় নাই । জগমোহন রায় তাহার আবেদনে যে সর্তের উল্লেখ করিয়াছেন সেই সৰ্ব যাহাতে প্রতিপালিত হয় তদ্বিষয়ে তাহারা ( রামকান্ত রায় এবং রামলোচন রায় ) একযোগে জামান হইতে রাজি আছেন। তাহারা আর কিছু করিতে পারেন না বা স্বতন্ত্র জামীনও দিতে পারেন না । তার পর বদ্ধমানের কালেক্টর লিথিয়াছেন, আমি যাহাদের নিকট অনুসন্ধান করিয়াছি তাহারা সকলে এক বাক্যে বলিয়াছে, এই পরিবার এক সময় ধনী ছিল, কিন্তু এখন নিঃস্ব এবং অবস্থা অতি শোচনীয় । এই চিঠি পাইয়া ১৮০৩ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারী মেদিনীপুরের কালেক্টর বোর্ডকে লিখিলেন, বৰ্ত্তমান অবস্থায় যদি জগমোহন রায় ১০০০ নগদ দিতে পারে, যদি বাকী টাকা মাসিক ১৫০২ হারে দিয়া পরিশোধ করিতে সক্ষম হয়, এবং তাহার পিতা ও ভাই ( রামলোচন ) যদি এই জন্ত জামীন হয়, তবে তাহাকে খালাস দেওয়া যাইতে পারে। মেদিনীপুরের অস্থায়ী কালেক্টর আর্ণষ্ট সাহেব এই সময় ৫৫৭৮৩/১॥গণ্ডা জগমোহন রায়ের দেন সাব্যস্ত করিয়াছিলেন। তন্মধ্যে ১১২০২ তশপ করিয়াছিল ক্রোকদার মীর কুত্রৎ-উল্লা । জগমোহন রায় হরিরামপুরের ১২০৭ সনের সদর খাজনার মধ্যে কতক টাকা বাকী ফেলিলে, ১২০৮ সনের গোড়ায় সরকার তাহার মহল কাড়িয়া লইয়া মীর কুঞ্জৎ-উল্লা নামক এক ব্যক্তিকে ক্রোক প্রৰণসী 'sN93N9 সাজোয়াল (সরকার পক্ষের অস্থায়ী তহশীলদার) নিযুক্ত করিয়া মহালের খাজনা আদায় করিতে পাঠাইয়াছিলেন । মীর কুঞ্জং-উল্লা ১১২০২ আদায় করিয়া নিজে ভাঙ্গিয়াছিল । সরকার তাঁহাকে গেরেফতার করিয়া আনিয়া জেলে আবদ্ধ করিয়াছিলেন। কালেক্টর সাহেব কুঞ্জং-উল্লার এই ১১২০\ দেন। হতভাগ্য জগমোহনের ঘাড়ে চাপাইলেন । তাই তখন র্তাহার মোট দেন দাড়াইল ৫৫৭৮৩/১ গণ্ডা। ১৭ই মে তারিখের উত্তরে বোর্ড উদোর পিণ্ডী বুধোর ঘাড়ে চাপাইতে রাজি হইলেন না, এবং জগমোহন রায়ের সহিত সুবিধাজনক বন্দোবস্ত করিবার অনুমতি দিলেন।ঞ্চ ইহার অব্যবহিত পরেই, ১৮০৩ সালের জ্যৈষ্ঠ মাসে, রামকান্ত রায় পরলোকগমন করিলেন । জগমোহন রায়ের কারামুক্তির কাহিনীর বাকী অংশ বর্ণনা করিবার আগে আমরা রামকান্ত রায়ের আর্থিক অবনতির কারণ অনুসন্ধান করিব। পূর্বেই উল্লিখিত হইয়াছে, রামকান্ত রায় মহারাণী বিষ্ণুকুমারীর এষ্টেটের সৰ্ব্বেসৰ্ব্ব ছিলেন। ১২০৫ সনে (১৮৯৮ সালে) বিষ্ণুকুমারী পরলোকগমন করিয়াছিলেন । ইহার পরবৎসরই ( ১৭৯৯ সালের ১৩ই জুলাই ) মহারাণী বিষ্ণুকুমারীর পুত্র এবং উত্তরাধিকারী মহারাজ তেজগদ পিতা-পুত্রের নামে তিন খানি মহালের জন্য স্বত্ত্বের মোকদম উপস্থিত করিয়াছিলেন। তেজচাদ স্বত্বের মোকদ্দমা রুজু করিয়াই ক্ষান্ত হয়েন নাই। রামকান্ত রায়ের সহিত র্তাহার অনেক দিন হইতেই বিরোধ ছিল। বৰ্দ্ধমানের জজের ১৭৯৬ সালের ১১ই জুলাই তারিখের একখানি চিঠিতে ১৭৮০-৮১ সালে মহারাজ তেজচাদ বাদী এবং রামকান্ত রায় প্রতিবাদী এইরূপ একটি মোকদ্দমার উল্লেখ আছে।f এই চিঠিতে দেখা যায়, এই সময়েও (১৭৯৬ সালে) মহারাজা তেজচাদ বাদী হইয়া জজ কোর্টে রামকান্ত রায়ের বিরুদ্ধে একটি মোকদ্দমা চালাইতেছিলেন । এই সময় মহারাণী বিষ্ণুকুমারী জীবিত ছিলেন। ১৭৯৮ সালে মহারাণীর মৃত্যু , রামকাস্ত রায়ের এবং জগমোহন রায়ের সর্বনাশের সুচনা

  • Board of Revenue, Mis. 30th September, 1803, No. 23.

f Iłiirdwan Records, Vol. 25, p. 95.