পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(8షి তলিয়ে দেখ ভাল-মন্দের দ্বন্দ্ব” জরথুস্ত্রের প্রশ্নে কেঁপে ওঠে ধৃতরাষ্ট্রের দল ; গাথায় গাথায় গড়ে ওঠে জেন্দ, আবেস্তা— হিন্দু বেদের নূতন সংস্করণ তার সাড়া পৌছয় আৰ্য্যাবর্তে বসে মাহুষ জিজ্ঞাসায়, জাগে উপনিষৎ সত্য অসত্য বিদ্যা অবিদ্যা মৃত্যু অমুভের সন্ধান । তত্ত্বদশী পুরুষ মুগ্ধ হয়ে শোনে প্রজ্ঞারূপিণী মৈত্রেয়ীর বাণী ঃ “নিয়ে যাও অসত্য হতে সত্যে, অন্ধকার হতে জ্যোতিতে মৃত্যু হতে অমৃতে”— মৈত্রেয় বুদ্ধের আসতে দেরি হয় না হিংসায় বিষিয়ে উঠেছে আকাশ পৃথিবীর যজ্ঞবেদী রক্তে রাঙা তাই কি জাগে অহিংসার মন্ত্র, মৈত্রীর সাধন ? সারা ভারত ছাপিয়ে ছোটে কল্যাণের ধার। করুণার দীপালি জলে দ্বীপ-ভারতে চীনে জাপানে প্রশাস্ত সাগর শোনে মহামানবের গাভারতকে নিয়ে বিরাট প্রাচ্য জুড়ে যেন মহাভারত অভিনয়— কাব্যে দর্শনে কলায় ভাঙ্গধ্যে স্থাপত্যে নৃত্যে সঙ্গীতে গড়ে ওঠে মগন সমন্বয়ের স্বর-সঙ্গতি তার আভাস জাগে লাওৎসা কনফুসাসের দর্শনে কোবোদাইসি হোনেন নিচিরেনের সাধনায় । ঘনিয়ে আসে মধ্য যুগের অন্ধকার তারই মধ্যে ধেয়ে আসে ফিরদৌসি আল্বেরুণী মার্কোপোলে। বৌদ্ধ মঙ্গল-সম্রাটের নিমন্ত্রণে আসে নানা ধৰ্ম্ম নানা ভাষা সংস্কৃতির নেতা, পণ্ডিত পাত্রি সাধক প্রচারক মধ্যএসিয়ার উত্তঙ্গ শিখরে বসে প্রথম মানব-মৈত্রীধৰ্ম্ম-সঙ্গিতি । সে সাধনার ধারা মেলে পশ্চিম-এসিয়ার ধর্শ্ব-স্বরধুনীতে ইশার ধৰ্ম্ম মূসার ধৰ্ম্ম উর্বর করে তোলে মরুভূমির বেদুইন প্রাণ নতুন করে শেখায় সভ্যতাগৰ্ব্বী মানুষকে প্রেমে সবার অবাধ অধিকার-—সবার উপরে এক ! LNළංGNළං তর্কের ভিতরেই খ্ৰীষ্টভক্তি ও কৃষ্ণভক্তি যায় মিলে যুদ্ধবিপ্লবের মধ্যেই হিন্দু-মুসলিম মরমী করে কোলাকুলি ষেন গড়ে ওঠে বা অপূৰ্ব্ব মিলন । হঠাৎ কালের ঘড়ির কাটা যায় পিছিয়ে মৈত্রী হয় পঙ্কিল কাপুরুষতায় শক্তি হয় লোভন জয়ের মাৎসধ্যে প্রচণ্ড বিক্রমে পশ্চিম পড়ে পুবের বুকে নতুন ক’রে মানুষকে দেয় মস্তর শাস্তি ছায়া, প্রতাপ সত্য, চাঙ্গ ধল চাই অর্থ চাই সাম্রাজ্য বিশ্বজোড় । পশ্চিমী বিশ্ববাদের সঙ্গে কেমন ক’রে মেলে পূবে বিশ্ববাদ ? রাষ্ট্র-কলের চাপে পিষে যায় অগণ্য নরনারী তাদের ঘামে তাদের রক্তে পঙ্কিল পৃথিবী, তবু কলের চাকা থামে না, মরতে মরতে ভাবে এসিয়ার মাহুষ : “লক্ষ বছর ধরে দেখছি অনেক রাজা ভাঙাগড় নতুন করে বইছে রক্তগঙ্গা দিকে দিকে হয়ত পড়বে ন৷ টান মহাসাগরের জলে ধুয়ে দিতে মানবের রক্তরেখা।” মেলবার মেলাবার স্থযোগ আজ অসীম কিন্তু লাগাও ভেদ, জাগাওঁ অমিল, হাতে হাতে চাই লাভ, সাম্নে যাঙ্গ থাকু এই ত আধুনিক রাজনীতি, অর্থনীতি । বিশ্বজোড়া বাণিজ্যের আয়োজন— গর্জে ওঠে কলকজার স্থঙ্কার কারখানার সঙ্গে যেন পাল্লা দিতে পারে না সেকেলে পৃথিবী ! পৰ্ব্বতপ্রমাণ জমে ওঠে দ্রব্যসম্ভার কারো লাভ বেশী, কারো কম, লাগে দ্বন্দ্ব । বাধে যুদ্ধ জাতে জাতে, চীনে-পাচিল ওঠে গড়ে, মানুষ মরে পাচিলের ভিতরে বাইরে নিষ্ঠুর ক্ষুধায়, ডিনার গেয়ে এসে হুকুম দেন মালিক ; "মরুক কুলি মজুর ছোটলোকের দল, পোড়াও শস্ত খাবার সব দাম যতক্ষণ না বাড়ে, চিরকাল মরে আসছে যারা মরুকু—মুনফ চাই”।