পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ C.vr <s\səl ●題の শুনিবার চেষ্টা করিল। কিন্তু আর তাহার কণ্ঠস্বর শোনা যায় না। আবার হয়ত কোন বনাস্তরালে মিশিয়া গিয়াছে— পশ্চাতে রাখিয়া গিয়াছে একটা বেদনার্ভ ইতিহাস ! প্রায় বছর-দশেক পূৰ্ব্বে এই শিবসাগর গ্রামে ঠিক এই সময়টায় প্রথাকুযায়ী বুডাশিবের গাজন উপলক্ষ্য করিয়া মেলা বসিয়াছিল । সপ্তাহভোর উৎসব চলে ; এই সাতটা দিন বিভিন্ন যাত্রার দল পাল্লা দিয়া পর পর গাওনা করে । সে-বারে কোন একটা যাত্রার দল নিতাস্ত হস্তিকর গাওনা করায় কানাখুষা চলিতেছিল, এ কি আর যাত্রা গো---পরশু মোহন গোসাইয়ের দল হবে যা শুনে মুখ হয় । শুনবে আর খালি চোখ ফেটে জল বেরুবে । প্ৰহলাদ গাওনা করেছিল একবার— কেঁদে লোকে আসর ভিজিয়ে দিলে না ! গেণসাহ-অপেরার সাজপোষাকের বড় বড় বাক্সগুলা আসিয় পৌছিয়াছে, আসামীরাও আসিয়াছে। অনেকেই স্বপুরুষ দেপিয়া এবং কথার হাব-ভাবে ‘য়্যাক্টোর’ বীজ নিহিত দেখিয় আঁচ করিতেছিল, এই লোকটাই বোধ হয় মোহন গোসাই হবে ।-- - কিন্তু মোহল গোসাচ্চ তথন আসিয়া পৌছায় নাই— ঠিক বাহির হইবার মুখে মাথায় হাত দিয়া বসিয়াছে। স্থবল অর্থাৎ প্ৰহলাদ যে সাজিবে তাহার খোজ পাওয়া যাইতেছে না। অনেক খোজাখুজির পর অবশেষে তাহার খোজ মিলিল ঈশান দাসের পোড়ো বাড়ীর মধ্যে ;–সোনা পোকা ধরিতে স্থবল তখন নিতাস্ত ব্যস্ত। “মোশান মাষ্টার' ঋষি দাসকে দেখিয়াই পলাইবার উপক্রম করিতেছিল, কিন্তু মাষ্টার ধণ করিয়া হাতটা ধরিয়া ফেলিয়া ঠাস করিয়া গালে একটা চড় কসাইয়া দিয়া বলিল, পালান হচ্ছে কোথা— ওদিকে সবাই আমরা বসে...এক ফোটা ছেলে—fঢট করতে হয় কি করে তা ঋষি দাস জানে। সে মুখ্য নয়--- অগত্যা বাইতে হইল স্ববলকে । স্থবলকে লইয়া পথইটাই হইল মুশ্বিল। পড়ন্ত রোটাই যেন বেশ চড়া। মাথার গামছা ঘন ঘন শুকাইয়া যাইতেছে —পুকুরের অভাবে ঘন ঘন গামছা ভিজানও মুস্কিল । ক্লান্ত স্নবল সম্মুখের দূরতর পথের দিকে চাহিয়া মৃদ্ধকণ্ঠে বলিল, পথ আর কত দূর যেতে হবে গোঁসাই-কাক ? چ--س- هو& মোহন উত্তর দিল, এখনও অনেক দুর—যেতে সেই দু-পহর রাত । দু-পহর। স্ববল ক্লান্তকণ্ঠে বলিল, গাছটার তলে একটু ব’সব গোসাই-কাকা । যে রোদ••• –তাই ব’স, রোদই বা আর কতকক্ষণ—আর একটু পরে ঠাণ্ডায় ঠাণ্ডায় বেশ যাওয়া যাবে। সেই সকালে ওদের সঙ্গে গেলে এতক্ষণে পৌছে যেতিস্ মেলায়। সুবল বসিয়া পড়িয়া বলিল, রক্ষে কর গোসাই-কাকা— ওদের সঙ্গে কিছুতেই আমি ঠাটতে পারতাম না। তাই ত সকালবেলা লুকিয়েছিলাম। মাও বললে তোমার সঙ্গে যেতে••• মোহন সোৎসাহে বলিল, তোর মা তাই বলেছিল বুঝি ! মোহনের আরও কিছু জানিবার ছিল কিন্তু জিজ্ঞাস্থ মনকে শাসন করিয়া বলিল, তোর পোটলায় কিছু বাধা আছে নাকি !—থেয়ে নে এক্ট বেলা, আগে গেলে আর ভাল জল পাবি নে—সব লোনা । সুবল চিড়া ভিজাইয়া আনিয়া দুই ভাগ করিতে প্রবৃত্ত হইল দেখিয়া মোহন বলিল, ও কি কচ্ছিস্ রে ••• —কেন, তুমি থাবে না ? —আমি ! আরে রাম---ওই দুটি ত, তুই খেয়ে নে। ছেলেমানুষ—তোর জন্তে দিয়েছে আর আমি--- —না গোসাই-কাক, তোমার জন্ধেও যে মা দিয়েছে। এই দেখ না, রসকরা এতগুলো---কাল মা রাত্রে তৈরি করেছে যে ! মোহনের কৌতুহল হইতেছিল জিজ্ঞাসা করে,আমার জন্য পাঠাইবার তার কি প্রয়োজন ছিল ? কৌতুহল হইতেছিল স্ববলের নিকট হইতে তাহার মনের সমস্ত কথা জানিয়া লয় । কিন্তু তাহা অশোভন হইবে অধিকন্তু অসম্ভব। মোহন গম্ভীর কণ্ঠে বলিল, তর্ক না ক’রে খেয়ে নে দিকি চটপট-অনেকটা যেতে হবে যে ! স্থবল কিন্তু বসিয়া রহিল। মোহন একবার তাহাকে আড়চোখে দেখিয়া লইয়া বলিল, খেলি নে এখনও ! স্থবল মৃদুকণ্ঠে জবাব দিল, মা বললে যে তোমাৰুে দিতে । বললে, তোর গোসাই-কাকা রসকরাই ভালবাসে।