পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেয়ে-পার্থী বলল, “কি হবে ?” “তোমার কোন ভয় নেই। এক দিনের মধ্যেই আমি তোমাকে খাসা বাসা বেঁধে দেব । ওর চেয়ে অনেক ভাল, অনেক সুন্দর। শহরের দক্ষিণে অনেক দূরে যেখানে বাড়ীগুলি গাছপালার মধ্যে হারিয়ে গেছে, রাস্তাগুলি মাঠের মধ্যে মিলিয়ে গেছে, সেখানে আমার এক চেনা জায়গা আছে । কোন ভয় সেখানে নেই। খাবার খুঁজবার কোন চেষ্টাও সেখানে করতে হবে না। চল আমর। সেখানে যাই ।” তার উড়তে আরম্ভ করল । মেয়ে-পার্থী বলল, “বেশীক্ষণ ত আমি উড়তে পারব না । আজ শেষরাত্রেই আমাকে ডিম পাড়তে হবে। চল এখানে কোথাও নামি।” “এখানে নামবে কি ? সবে শহরতলীতে এসেছি ; সে জায়গা যে এখনও অনেক দূরে।” “ত হোক । আমি আর পারি নে। উড়লে আমি মাথা ঘুরে পড়ে যাব।” “তবে নাম ।” আর কিছুক্ষণ একথান। একতালী বাড়ার জানালার পাশে একটা ঝাপড় ঝর্ণঝড় গাছে ওরা বসল। পুরুষ-পাপীট। আবার খড়কুটো, ছেড়া ন্যাকড়, ছেড়া কাগজ জড় ক'রে বাস। বাধতে লাগল। এবার ও একা। মেয়ে-পার্থীটা চুপ করে বসে আছে। এইটুকু উড়েই ও ইপিয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা হয়ে গেল। রাস্তায় আলো জলে উঠল। তবু পুরুষ-পার্থীর একটুও বিরাম নাই। ও যেখান থেকে যা পারল সব জোগাড় ক'রে বাসা বাধতে লাগল। আজ ওর মরবার অবসর নেই । শেষরাত্রের আগেই ওর বাস বাধ৷ চাই, আকাশে চাদ উঠেছে। জ্যোৎস্নায় কোন জিনিষ দেখতে কষ্ট হয় না । দূরের ঐ খড়ো বাড়ীর চালে কত কুটোকাটি আছে। হাজারটা বাসা বুনলেও তা শেষ হবে না। এক জন যুবতী জানালা খুলে বাইরের দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে বলে উঠল, “পোড়া পার্থীর মরণ নেই । জ্যোৎস্না দেখে গান আরম্ভ ক’রে দিয়েছে।” শেষ রাত্রের আগেই বাসা বাধা শেষ হয়ে গেল । পুরুষ-পাধী জিজ্ঞেস করল, “মাধাধরা একটু কমেছে ? শুনছ ?” “ঘুমূচ্ছিলে বুঝি ?” “al to মাথাধরা কমূল ?” “হ্যা, এখন আর নেই।” “বাসী হয়ে গেছে । কি স্বন্দর বাস দেখ, ব'সো এর ওপর । এখন আর কোন ভয় নেই, গাছটা বেশ মুন্দর, নয় ?” “ss p “কিন্তু মানুষগুলির কোন বুদ্ধি নেই, জানালার পাশে কখনও গাছ রাখতে হয় !" “আমার বড় ভয় করছে ।” “কিসের ?” “এখনই, তুমি একবার মাকে ডেকে আনবে ?” “এই রাত্তিরে !” “হ’লেই বা, জ্যোংস্কা আছে, একবার যাও, কক্ষীটি, সেই কড়িকাঠের ওপরে মাকে দেখতে পাবে, রোদ ওঠার আগেই ফিরে এস।” “আমি এই এলাম বলে ” পুরুধ-পাপী পার্কের দিকে চলল । গাছটার ছোট ছোট পাতা । গাছ পার্কের মধ্যে ও কয়েকটা দেখেছে । একটা বড় গাছের ৬ালে বাসা বাধলেই ভাল হ’ত । এত ছোট গাছ বাড়ার পাশে। ছেলেপিলেগুলি টের পেলে আর রক্ষে থাকবে না। ওরা খুব চুপ ক'রে বসে থাকবে । বাচ্চাগুলি একবার উড়তে পারলেই হ'ল। পার্ক থেকে আসতে পুরুষ-পার্থীর কত দেরি হয়। সঞ্চাল থেকেই ওর শরীর ভাল নেই। এইটুকু উড়ে আসতে ইপিয়ে পড়েছে । মাথা ঘুরছে কেন ? সমস্ত শরীরটাও কেমন কেমন করছে। তাই ত, নীচে পড়ে যাব না ত! কেন ওকে পাঠালো, কি করবে ও একা এক-— বুকের মধ্যেও কেমন করছে—এই অন্ধকারে—তাহ ভ— দুটি ডিম ! পুরুষ-পার্থী যখন ফিরে এল তখন ফসর্ণ হয়ে গেছে। বলল, “তোমার মাকে দেখতে পেলাম না । শুনলাম, পরশুদিনের ঝড়ের মধ্যে পড়ে উত্তর দিকে উড়ে গেছে। క- :