পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্ত সকলকে ব’লে এসেছি, এলেক্ট এগানে পাঠিয়ে দেবে i* “আস্তে, দেখছ না ?” “কি বলছ ?” “তুমি যেন কিছুই শুনতে পাও না। রাস্তার পাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছে, টের পেলেই যে ছুটে আসবে। পাশেই আবার এত বড় একটা বাড়ী ।” “ডিম পেড়েছ ? তা এতক্ষণ বল নি কেন ?- কটা ? দেখি, দুটো ?” “চেচিও না, চুপ করে বসে৷ ” পার্থী দুটি চুপ করে বসে থাকে ; কেউ কোনও কথা বলে না। মাঝে মাঝে পুরুষ-পার্থীটি অভ্যাস বশতঃ গল্প স্বরু করে দেয়, কিন্তু মেয়ে-পার্থীর চোখের দিকে চেয়ে আবার চুপ করে। এই ভাবেই ওদের কয়েক দিন কাটল । এখানেও ওদের থাবার ভাবনা নেই। দূরের রকে ছেলেমেয়েগুলি মুড়ি-মুড়কির ঠোঙা নিয়ে বসে। অর্ধেক খায়, অৰ্দ্ধেক ফেলে দেয়। তার গোটাকয়েক কুড়িয়ে নিয়ে ওদের চলে যায়। মেয়ে-পার্থীকে কখনও কখনও ও বেড়িয়ে আসতে বলে, নদীর পাড়ের গাছগুলির মধ্য থেকে অন্ততঃ রাস্ত ধরে সোজা কিছু দূর পর্য্যস্ত, কিন্তু সে তা সাহস করে না । পুরুষ-পার্থী এক দিন জিজ্ঞেস করল, “আর কত দিন ?” “বেশী দিন নয়। দিন-দুয়েকের মধ্যেক্ট ফুটবে। মাঝে মাঝে ঠোকরাবার শব্দ শুনতে পাই ।” “ছুটে বাচ্চ হবে ?” “দুটো ডিম থেকে কি তিনটে বাচ্চ হয় ?” “তা বলছি নে। বেশ হবে তা হ’লে, ক’দিনে ওরা উড়তে পারবে ?” “কি ক’রে বলব। মা ঠিক বলতে পারত। ম৷ কিন্তু এক দিনও এল না । কাল সকালে তুমি একবার বাবে ?” “ষাব এখন ।” পরদিন সকালে পুরুষ-পার্থীট যখন পার্ক থেকে ফিরে এল, তখন মেয়ে-পার্থীট। একতালা বাড়ীর ছাদের উপর বসে কাদছে । গাছটা সেখানে নেই। শুধু তার কম্ভিত অংশটুকু পৃথিবীর বুক চিরে আকাশের দিকে তার নীরব ব্যথা উন্মুক্ত করে ধরেছিল । “গাছটা কি হ’ল ?” পুরুষ-পার্থী জিজ্ঞেস করল ।

  • ওরা কেটে ফেলেছে ।”

“বাসা ?” “সেটা গাছের মধ্যে —” “छिश দুটো مہ “তা দিয়ে এই বাড়ীর ছোট ছেলেটা গুলি খেলছে ওরা যে দু-দিন পরেই ফুটত, কত কষ্ট পাচ্ছে ওরা । হয়ত এতক্ষণ—ওগো আমি কেমন ক’রে সহ করব ?—” পাখী দুটোর কি হ’ল সে খবর আর কেউ জামে না । হয়ত ওরা আবার রাস্তার পাশে কোনও গাছে ফিরে গিয়েছিল, কোনও ঘরের কড়িকাঠে বসে কিচমিচ করতে স্থরু করেছিল কোনও কবিকে কবিতা-লেখার প্রেরণা দিতে । কিন্তু মেয়ে-পার্থীটিকে ভাগ্যবতী বলেই মনে হয়। ডিম ফোটার পর গাছটা কাটা গেলে ওর যে দুঃখের কোনও অবধি থাকত না !