পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

☾>Ꮛ আগে এই জাতীয় গাছের চাষ ভারতের কোন কোন অংশে করা হয়, কিন্তু ইদানীং এই জাতীয় গাছের প্রতি ভাগ্য বিরূপ হয়ে পড়েছে, এক রকম বিদেশী গাছ তাকে একেবারে বনে তাড়িয়ে দিয়েছে। সেই বিদেশী গাছের নাম হ’ল হিভিয়া ব্রেজিলিয়েন্সিস—অবশু, নাম থেকেই বোঝা যায় যে ইনি এসেছেন ব্ৰেজিল থেকে। প্যারা-রবার ব’লে ষে উৎকৃষ্ট শ্রেণীর রবার বাজারে প্রচলিত তা এই গাছ থেকেই পাওয়া যায়। আজকাল সিংহল এবং ডাচ ঈষ্টইণ্ডিজে বিস্তৃতভাবে এই গাছের চাষ হচ্ছে, কিন্তু জাৰ্ম্মেণী যে সিনথেটিক রবার তৈরি করতে মুরু করেছে তার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় রষারের চাষের টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। বাজারে আর এক রকমের রবার আছে তার নাম হ’ল সিয়ার রবার, এই রবারও মনিহট ম্যাজিওভাই নামে এক শ্রেণীর বিদেশী গাছ থেকে পাওয়া যায়। এই সম্পর্কে হয়ত একথা অপ্রাসঙ্গিক হবে না যে আমরা যাকে ভল্কানাইট বলি এবং যা দিয়ে আমাদের প্রয়োজনীয় অনেক জিনিষই তৈরি হচ্ছে, সেটা হ’ল রবার এবং গন্ধকের একটা সংমিশ্রণ। কাচের পরিবর্তে আমরা সাধারণতঃ গাটাপাচার বহু জিনিষ ব্যবহার করি। সম্মিলিত মালয় ষ্টেট, বোণিও, জাভা, স্বমাত্রা প্রভৃতি অঞ্চলে পালা কুইয়াম গাটা ব’লে এক রকম গাছ জন্মায়। সেই গাছের রস থেকে গাটাপাচা তৈরি হয়। অনেকে হয়ত জানেন যে পাথর থেকে ছাপবার কালি, সিলমোহরের মোম, গ্রামোফোন রেকর্ড, পালিস, বানিস প্রভৃতি জিনিষের প্রধান উপাদান হ’ল গালা । এই গালা কোন কোন গাছের ছোট ছোট ডালে ট্যাকর্ডিয়া ভাস্কা নামে এক রকম পোকার স্ত্রীজাতিদের দ্বারা তৈরি হয়। এই জাতীয় গাছের মধ্যে পলাশ, কুহম, বাবুল এবং কুলগাছই প্রধান। নানা ভাবে পরিষ্কার করে এবং গালিয়ে গালা থেকেই সেলল্যাক্ অর্থাৎ পাতী-গালা এবং বোতামের গালা তৈরি বিহার এবং উড়িষ্যা, মধ্যপ্রদেশ, সিন্ধু প্রদেশ স্থান কোন অংশ, আসাম, যুক্তপ্রদেশ এবং পঞ্জাব ইলক্টগঙ্গা উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র। উত্তরপশ্চিম বঙ্গে, যেমন মালদহ জেলায়, কিছু কিছু গালা তৈরি প্রবাসী SNථාHNළං হয়। গাল উৎপাদন হ’ল প্রকৃতপক্ষে ভারতের একচেটে, কারণ জগতে যত গালা উৎপন্ন হয় তার শতকরা ৮৫ ভাগ ভারতবর্ষে জাত। ভারতের সংলগ্ন কোন কোন দেশে গালা উৎপন্ন হয় বটে, কিন্তু ভারতীয় গালার তুলনায় তারা প্রতিযোগিতায় দাড়াতে পারে না। চন্দনকাঠ আমাদের অনেকের কাছেই স্বপরিচিত, কিন্তু কেউ কেউ হয়ত নাও জানতে পারেন ষে তাঁর প্রয়োজনীয়তা কি এবং ঠিক কোথায় তা জন্মায় । ওজন ধরে যদি তুলনা করা যায়, তাহলে বলতে হয় ষে চন্দনকাঠ হ’ল জগতে সকলের চেয়ে বেশী দামী কাঠ। চন্দন গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হ’ল স্যান্টালুম অ্যালবাম। এটা হ’ল এক রকমের পরজীবী গাছ । তার কারণ কতকগুলি গাছের শিকড়ের ওপর এই গাছ জন্মায় এবং সেই সব গাছের শিকড় থেকেই চন্দনগাছের জীবিকা নির্বাহ হয়। বোম্বাই, মাদ্রাজ, কুর্গ এবং প্রধানতঃ মহীশূরে এই গাছ জন্মায়। চন্দন কাঠ চুইয়ে স্যাণ্ডাল অয়েল নামে এক রকম তেল পাওয়া যায় ; ইউরোপ এবং আমেরিকায় খুব উঁচুদরের গন্ধদ্রব্য তৈরি করবার জন্ত এই তেল ব্যবহার করা হয়। আগে চন্দন কাঠ চুইয়ে তেল বার করা শুধু ইউরোপে, বিশেষতঃ ফ্রান্সেই হ’ত ; কিন্তু আজকাল ভারতবর্ষে, মহীশূরে এবং অযোধ্যায় তা হচ্ছে । রেড স্যাণ্ডাস" নামে আর এক রকম কাঠ আছে— যাকে আমরা বলি রক্তচন্দন। আসল চন্দনের সঙ্গে এর কোনও মিল নেই। রক্তচন্দনের তিলক ব্রাহ্মণদের কপালে প্রায়ই শোভা পায়। আগে রক্তচন্দন বিশেষ মাত্রায় যুরোপে রপ্তানী করা হত, কিন্তু য়্যানিলাইন ডাই আবিষ্কারের পর থেকে এই রপ্তানী বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন এই কাঠের ব্যবহার যা কিছু ভারতবর্ষেই হয়। দক্ষিণ-ভারতে টেরো-কার্পাস স্যাটালিম্স্ বলে এক রকমের ছোট গাছ আছে, তাই থেকে এই দরকারী কাঠ আমরা পাই। ‘এসেনশিয়াল অয়েল'-এর ব্যবসাকে রীতিমত দরকারী ব্যবসা ব'লে গণ্য করা যেতে পারে। এই জাতীয় পাতলা তেল এক রকম ঘাস চুইয়ে পাওয়া যায়। ইহা কতকগুলি বিশেষ স্বনিদিষ্ট কাজে লাগে, তা ছাড়া, এই জাতীয় তেল