محو83t প্রবাসী $N93Nరి করিয়া হাসিয়া উঠিলেন । তার এই হাসিমুগটিক্ট আমার মলে আছে । বযা কাটিয় শরৎ পড়িল । আমাদের মদীর দু-ধারে কাশফুল ফুটিয়া আলো স্করিল। আকাশ নীল, লঘু শুভ্র মেঘগণ্ড বাদামবীর চরের দিক হক্টতে উড়িয়া আসে, আমাদের সায়েরের ঘাটের উপর দিয়া, গিরীশজ্যাঠাদের বড় আমবাগানের উপর দিয়া শুভরত্নপুরের মাঠের দিকে কোথায় উড়িয়া যায়---বড় বড় মহাজনী কিস্তী নদী বাহিয়া যাতায়াত স্বরু করিয়াছে, কয়ালরা ধান মাপিতে দিনরাত বড় ব্যস্ত । খুড়ীম আমাদের গ্রামেষ্ট রহিয়া গেলেন। পরেশকাকাও পাগলাগারদ হইতে বাহির হইলেন না। খুড়ীমাদের বাড়ী তার ননদের এক দেওর আসিল পুজার সময়, নাম শাস্তিরাম, বয়স চব্বিশ-পচিশ, দেখিতে চেহারাটা ভালই । অল্প দিনের জন্য এখানে বেড়াইতে আসিয়া কেন যে সে কুটুম্ববাড়ী ছাডিয়া আর নড়িতে চায় না, যাইলেই অল্প দিনের মধ্যে ফিরিয়া আসিয়া আবার কিছু কাল কাটাষ্টয়া যায়—ক্টঙ্গর কারণ আমি কিছু বলিতে পারিব না—কেবল ইহা শুনিলাম যে গ্রামে তার নামের সঙ্গে । খুড়ীমার মাম জড়াইয়া একটা কুকথা লোকে রটনা করিতেছে । এক দিল দুপুরের পরে খুড়ীমাদের বাড়ী গিয়াছি । পিছনের রোয়াকে পেপেতলার জানালার ধারে খুড়ীমা বসিয়া আছেন, শান্তিরাম বাহিরের রোয়াকে দাড়াইয়া জানালার গরাদে ধরিয়া খুড়ীমার সঙ্গে আস্তে আস্তে এক-মনে কি কথা বলিতেছে—আমাকে দেখিয়া বিরক্তির স্বরে বলিল—কি পাবু, দুপুরবেলা বেড়ানো কি ? পড়াশুনে করো না ? যাও এখন যাও— আমি শাস্তিরামের কাছে যাই নাই, গিয়াছি খুড়ীমার কাছে । কিন্তু আমার দুঃখ হইল যে খুড়ীমা ইহার প্রতিবাদে একটি কথাও বলিলেন না—আমি তখনই ওদের বাড়ী হইতে চলিয়া আসিলাম । ভয়ানক অভিমান হইল খুড়ীমার উপর—তার কি একটা কথাও বলা উচিত ছিল না ? ইহার পর খুড়ীমাদের বাড়ী যাওয়া একেবারে বন্ধ ন করিলেও খুব কমাইয়া দিলাম। খুড়ীমাকে আর তেমন করিয়া পাই না ; শাস্তিরাম আজকাল দেখি সময় নাই, অসময় নাই, ছাদে কি সিড়ির ঘরে বসিয়া খুড়ীমার সহিত গল্প করিতেছে—আমার যাওয়াটা সে যেন তেমন পছন্দ করে না। খুড়ীমাও যেন শাস্তিরামের কথার উপর কোন কথা জোর করিয়া বলিতে পারেন না । খুড়ীমার নামে পাড়ায়-পাড়ায় যে-কথা রটনা হইতেছে তাহ আমার কানে প্রতিদিনই যায়। লক্ষ্য করিলাম, খুড়ীমার উপর আমার ইহার জন্য কোনই রাগ নাই, যত রাগ শাস্তিরামের উপর । সে দেখিতে ফসর্ণ বটে, বেশ শহুরেধরণের গোছালো কথাবাৰ্ত্ত বটে, সৌর্থীম সাজপোষাকও করে বটে, কিন্তু হয়ত তাহার সেই ফিট্ফাটের সাজগোজের দরুনই হোক, কিংবা তাহার শহর-অঞ্চলের বুলির জন্তেই হোক, কিংবা তাহার ঘন ঘন বার্ডসাই পাওয়ার দরুনই হোক, লোকটাকে প্রথম দিন হইতেই আমি কেমন পছন্দ করি নাই । কেমন যেন মনে হইয়াছিল এ লোক ভাল না । বালক-মনের ভাল লাগা না-লাগার মূলে অনেক সময়ই কোন যুক্তি হয়ত থাকে না কিন্তু মচষ্যচরিত্র সম্বন্ধে অনেক ক্ষেত্রে বালকদের ধারণা বড়-একটা ভুল হয় না। এক দিন চৌধুরীদের পুকুরঘাটে বাধানো-রাণায় সৰ্ব্ব চৌধুরী ও কালীময় বাড়ুযে কি কথা বলিতেছিল—আমি পুটিমাছ-মারা ছিপ-হাতে মাছ ধরিতে গিয়াছি—আমাকে দেগিয়া উহার কখা বন্ধ করিল। আমি বাধানে ঘাটে নামিয়া মাছ ধরিতে বসিলাম। সৰ্ব্ব চৌধুরী বলিল— তাই ত ছোড়াটা যে আবার এখানে । কালীময় জ্যাঠা বলিলেন—বল, বল, ও ছেলেমানুষ কিছু বোঝে না । সৰ্ব্ব চৌধুৰী বলিল—এখন কি করবে, এর একটা বিহিত করতে হয়। গায়ের মধ্যে আমরা এমন হতে দিতে পারি নে। একটা মিটিং ডাকে। পরেশের বেী সম্বন্ধে এমন হয়ে উঠেছে যে কান পাতা যায় না। নরেশকে একখানা চিঠি লিখতে হয় তার চাকুরীর স্থানে, আর ওষ্ট শাস্তিরাম না কি ওর নাম—ওকে শাসন করে দিতে ट्ध्र { কালীময়-জ্যাঠা বলিলেন–শাসনটাসন আর কি—ওকে এ-গ্রাম থেকে চলে যেতে বলে । না যায়, আচ্ছা ক'রে উত্তম-মধ্যম দাও। নরেশ কি চাকুরী ছেড়ে আসবে এখন
পাতা:প্রবাসী (ষট্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।