পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিতে এসেছি। দোষই বা দিই কি ক’রে বলুন ? গত দ্ব-মাসে চার বার চাদ তুলতে বেরিয়েছি। একটা শো-টো কিছু না করাতে পারলে শুধু চাদ তোলা আমাকে দিয়ে ত বাপু আর হবে না সত্যি ।” ● মিসেস্ চ্যাটাজী বলিলেন, “ভাল লোককে বলেছেন আপনি ! আমি ত গাল-গাইড আর স্কুলের সেই ফিজিক্যাল কালচারের নতুন হাঙ্গামটা নিয়ে মরবার ফুরসৎ পাই নে ; তার উপর আবার মহাপ্রভুদের মিটিং নিত্যি লেগে আছে। গিয়ে কাজ কিছু করি না-করি সময়মত হাজিরা ত ঠিক দিতে হয় আমাকে কিনা। ও সব নিয়ে থিয়েটার দেখতে যাবার সময় পাই কিনা দেখুন, তা আবার থিয়েটার করা ঐ ত লতিকা, মাধুরী, কল্যাণী সবাই রয়েছে, বলুন না ওদের ” কল্যাণী ধর মিহি স্বরে বলিলেন, “মিসেস্ চ্যাটাজ্জীর যেমন কথা ! আমাকে নিলেই আপনাদের থিয়েটার জুমবে ভাল ! এমনিতেই ত বস্তু-একটা কথা-টথা আসে না অামার মুখে—গলাও ওঠে না কোনও কালে—তার উপর আবার লোকজনের সামনে হ’লে ত আর কথাই নেই। আর তাছাড়া আপনারা সব এম-এ, বি-এ,—আপনারা সবই পারেন, আমার মত মুখ্য মানুষকে নিয়ে কি করবেন ?” রমলা মিত্র জোর গলায় বলিলেন, “এম-এ, বি-এর সঙ্গে থিয়েটার করার কি যোগ ? তোমাকে ত আর কেমিটির ফরমূলা আওড়াতে ডাকা হচ্ছে না। ও রকম বাজে ওজরে পাশ কাটালে ত চলবে নী—মাধুরী এদিকে এস, তোমাকেও করতে হবে কিছু।" মাধুরী হাসিয়া গড়াইয়া পড়িল। পান-খাওয়া রাঙা ঠোট, আঁচলে চাবির গোছা বাধা, সাদা দেশী-শাড়ী পরনে মেয়েটি হাসিতে খুশীতে যেন উপছাইয় পড়িতেছে। “রমলা-দি, আমাকে ভাই একটা হাসির পার্ট দেবেন কিন্তু— আমার ষ্টেজে উঠে দাড়ালেই সামনে কাল কাল মুণ্ডুর সারি দেখলেই হাসি পাবে, তা আমি বলে দিলুম। কথাবার্তা কইতে হয় না, কেবল দাড়িয়ে দাড়িয়ে হাসলেই চলে, এমন কোনও পাট হয় না? আমার যে ভাই কথা-টথা একটুও মনে থাকে না, সেই ত মুক্ষিল কি না আর একটা ! দিনের মধ্যে সাতবার ছেলেটার নাম ভুলি, আর কি বলব বলুন এর উপর ? চাবি যে কোথায় ফেলছি কিছুই মনে থাকে ন, শাশুড়ী এক কাজ করতে বললে, আর এক কাজ করে রেখে দিই, এমন জালা। সেদিন কি করেছি জানেন না ও ? মাগো, সে যা কাও ” * বলিতে বলিতে সেদিনকার কাণ্ড স্মরণ করিয়া মাধুরীর হাসি একেবারে উচ্ছসিত হইয়া উঠিল । হাসিট সংক্রামক : মাধুরীর হাসি দেখিয়া কল্যাণীরও হাসি পাইল এবং এত হাসির কারণটা জানিবার লোভ সম্বরণ করিতে পারিল না। জিজ্ঞাসা করিল, “কি কাণ্ড করেছিলে ভাই ? অার কারুর স্বামীকে নিজের স্বামী ব’লে ভুল কর নি ত ?” মাধুরী সেদিনের কাও বলিতে তখনই প্রস্তুত ; কিন্তু রমলা মিত্র, এম-এ, কাজের লোক ; বাজে কথায় সময় নষ্ট করতে তিনি ভালবাসেন না-তিনি বাধা দিলেন । “ও-সব রাথ এখন। আগে কাজের কথাটা সেরে নিতে হবে। লতিকা, তোমাকেও নামতে হবে, কোনও ওজর-আপত্তি চলবে না। প্রীতি, শোন এদিকে ৷” প্রীতি মজুমদার একটি সমবয়স্ক সঙ্গীর সহিত গল্প করিতেছিল, উঠিয়া আসিল । “প্রীতি, মাধুরী, কল্যাণী, লতিকা আর আমি এই ত মোটে পাচ জন। পাচ জনে মিলে ত আর একটা শো দাড় করান যায় না। অধিশুি আরও মেয়ে পাওয়া যাবে-অসীমা আছে, সুধীরাও হয়ত যোগ দিতে পারে ; আরও ভেবে দেখতে হবে কে আছে না-আছে । তবে সকলকে দিয়েও ত আবার এ কাজ হবে না—উপযুক্তও ত হওয়া চাই। একটু বেছে-টেছে নেওয়া দরকার –মিসেস্ চ্যাটাজ্জা, রাখুন আপনার স্কুল আর ধীটিং । ওসব কাজের জিনিষ ভাতে সন্দেহ নেই ; কিন্তু এটা যে আরও বড় একটা কাজ সেটাও মনে রাখবেন । উপস্থিত প্রয়োজনের দাবী আগে মেটাতে হবে ত! আর সবাই হেল্প না করলে এক আমি কি ক’রে কি করব ? বেশী ভারটা ত আমার উপরেই পড়বে তা জানি, কিন্তু আপনার সব যোগ না দিলে ত হয় না । আপনাকে নামতেই হবে ।” মিসেস্ চ্যাটাজী বলিলেন, “নেহাৎ লোক না পান তথন নামতেই হবে, আর উপায় কি বলুন ? কিন্তু আমার বাড়ীর কাজ, বাক্টরের কাজ সবই এত বেশী যে, আমাকে বাদ