পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিলেই ভাল হয়। তবে কাজের লোকের উপরেই আবার কাজের ভারও বেশী বেশী পড়ে কি না, তাই বুঝছি সেই শেষ অবধি ঘাড়ে নিতেই হবে।” কল্যাণী ও লতিকা পরস্পরের দিকে চাহিয়া হাসিল— হাসিটা অর্থপূর্ণ। রমলা মিত্রের চোখে সে হাসি এড়াইল না, কিন্তু তিনি যেন লক্ষ্য করেন নাই এমন ভাবে বলিলেন, “কল্যাণী যাও ত, লাইব্রেরী-ঘর থেকে খানকয়েক ভাল ভাল বই বেছে আন ত—দেখি প্লে করার মত কিছু পাওয়া ষায় কি না। বই বাছাই যে এক বিষম হাঙ্গাম। তারই উপর প্লের সাক্সেস নির্ভর করে কিনা অনেক।” মাধুরী তাড়াতাড়ি উঠিয়া বলিল, “কল্যাণী-দি, বন্ধন বন্ধন আমি যাচ্ছি। আমি লম্বী আছি, সব উচু উচু তাকগুলো হাতে নাগাল পাব । বাকবা, এখনও যেন বছরে বছরে লম্বায়ু বেড়ে চলেছি মনে হয়—আমার স্বামীকে মাথায় ছাড়িয়ে যাব এবার বোধ হয় । আমার দেওর আমাকে কি বলে ডাকে জানেন ? লম্বৌদি বলে । লম্ব বৌদির সন্ধি।” হাসিতে হাসিতে মাধুরী বই আনিতে চলিয়া গেল। বাহিরে একটা মোটর আসিয়া থামিল, শব্দ শুনিয়া বোঝা গেল। রমলা মিত্র বলিলেন, “দেখি কেউ এল এখন বোধ হয়। সাত আট জনের বেশী ত আজ ক্লাবে লোকই আসে নি, কাকে নিয়ে ঠিক করি ” একটি মহিলা খুটখুট করিয়া জুভার শবা করিয়া বারাও অতিক্রম করিয়া ময়দানে নামিয়া আসিলেন। “মিসেস মল্লিক যে 1 আন্থন, আম্বন, আমুন। আপনি নেই, কাজেই আমাদের এভক্ষণ কিছু ঠিকই হচ্ছে না। আম্বন দেখি—কাজটা আরম্ভ ক’রে দেওয়া যাক ৷” নবাগত মহিলাটির নাম নীহারিকা মল্লিক। তিনি স্বামীয় কোনও খ্যাতনামা ব্যারিষ্টারের স্ত্রী—ফ্যাশানে অগ্রগণ্য বলিয়া মহিলা-সমাজে তাহার কিছু প্রতিপত্তি আছে । সবুজ জরিপাড় ফিক-বেগুনী রঙের জচেট শাড়ী, সবুজ সাটিনের জামা, পায়ে সবুজ রঙের জুত, কপালের টিপটি পৰ্য্যন্ত সবুজ—বোধ হয় ফরমাস দিয়া করাইয়ছেন । হাতে একগোছা সবুজ ও ফিক-বেগুনী রঙের কাচের চুড়ি—সোনার বালাই নাই। রমলা মিত্রের আহবানে নীহারিকা হাসিয়া ব’ললেন, “ব্যাপার কি আপনাদের ? কাজ-টাজ আবার কিসের ? আর কাজ যদি কিছু পড়েই থাকে ত এই ত আপনার সামনেই কাজের লোক বসে। কেমন, ঠিক বলি নি মিসেস छाॉफ़ेोव्छौ ?” মিসেস্ চ্যাটাজী নিজের চেয়ারটা একটু দূরে সরাইয়া লষ্টয়া যেন নবাগতার জন্য জায়গা ছাড়িয়া দিলেন— যদিও আবগুক ছিল না । কেননা, কথাবাৰ্ত্ত হইতেছিল ক্লাবের ময়দানে—স্থান প্রচুর। নীহারিকার কথা কানে না তুলিয় রমলা মিত্রকে উদ্দেশ করিয়া মিসেস্ চ্যাটাজ্জা বলিলেন, “এক্ট ত আপনার থিয়েটার করবার লোক এসে গেছে, আর ভাবনা কি ? ও যার কাজ তারেই সাজে, অন্তেরে লাঠি বাজে, জামেন ত ? ওসব এদেরই উপযুক্ত কাজ। সময়েরও অভাব নেই, বরং সময় কাটাবার কাজেরই অভাব। আর তাছাড়া সাজগোজ, ভাবভঙ্গী জানা চাই, অ’টিষ্টিক হওয়া চাই ; আমরা হলাম কাঠখোটা লোক, কোনও রকমে দরকারী কাজগুলা সারবারই সময় পাই না— তা আবার থিয়েটার । উনি ত মাঝে মাঝে বলেন, তোমার কি সৰ্থ ক’রে কখনও ভাল কাপড়ও একটা পরতে ইচ্ছে করে না ? তা আমি এদিকে নিজের স্কুলের লোই সামলাই, না কাপড়-চোপড় পরি, বলুন ত ? রমল মিত্রের সে সমস্ত সমাধান করিবার কোনও আগ্রহ দেখা গেল না । মিসেস্ চ্যাটাঙ্গীর প্রশ্নের উত্তর না দিয়। তিনি নীহারিকার প্রভি ফিরিয়া বলিলেন, “দেখুন দেখি মিসেস মল্লিশ, ভাবছি একটা চারিটি শো করাই এই বিহারের সাহাধ্যের জন্যে, ত শো করাঙ্গ কাকে দিয়ে ? বেউ ত করতেই চায় না। মাধুরী বলে ওব হাসি পায়, কল্যাণীর গল। ওঠে না, মিসেস চ্যাটাজ্জীর ত স্কুল নিয়ে তিলাৰ্দ্ধ সময় নেই, মাধীর ত ছেলের অসুখ জানাই আছে, সে ত আজ কতদিন হ’ল ক্লাবেই আসে না—ষ্ট্যা নীলিমা, তোমার কি ? তোমার ত ছেলেপিলেও নেই, স্কুলও নেই, গলাও ওঠে বলে জানি—এদিকে এস দেখি ত ” নীলিম। এতক্ষণ চুপ বরিয়াই ছিল । তাহাকে রমলা মিত্র ডাকেন নাই বলিয়া সে অভিমানে দূরেই সরিয়া বসিয়ছিল, যেন এ সকল কথা কানেই যায় নাই। সন্ধ্যার মান